“দেশী দুধের মধ্যে এটা-ওটা খোঁজার পেছনে বিদেশী গুড়া দুধ কোম্পানির কোন ষড়যন্ত্র নাই,। এন.সি-২৫৩

“দেশী দুধের মধ্যে এটা-ওটা খোঁজার পেছনে বিদেশী গুড়া দুধ কোম্পানির কোন ষড়যন্ত্র নাই,
Related image
তালিয়া হবে তাদের জন্য, যারা বলেছিলো-
“দেশী দুধের মধ্যে এটা-ওটা খোঁজার পেছনে বিদেশী গুড়া দুধ কোম্পানির কোন ষড়যন্ত্র নাই,
এটা করা হচ্ছে শুধু দেশী দুধের উন্নতির জন্য।”
কিন্তু এখন হাইকোর্ট বিদেশী গুড়ো দুধের পক্ষে ফতওয়া দিয়ে দিলো।
ব্যান করে দিলো ১৪টি দেশী দুধের কোম্পানিকে।
আচ্ছা, আপনাদের ঘরের ছেলে যখন অন্যায় করে,
তখন কি ঘরের ছেলে শুধরানোর চেষ্টা করেন ?
নাকি তাকে মেরে পিটিয়ে বের করে দেন,
বলেন- “তোকে লাগবে না, আমি অন্যের ছেলে পালবো ।”
এই ১৪টি দুধ কোম্পানি তো আর নিজেরা দুধ উৎপাদন করে না,
তারা বিভিন্ন খামারিদের থেকে দুধ সংগ্রহ করে।
এরপর সেটা সারা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে দেয়।
কোম্পানিগুলো আটকে দেয়া মানে, আলটিমেটলি খামারিদের ক্ষতিগ্রস্ত করা।
কারণ এই কোম্পানিগুলো ছাড়া খামারারি তাদের দুধ সারা দেশ জুড়ে ছড়াতে পারবে না।
বা তাদের সেই ক্ষমতাও নেই। খামারীদের দুধ খামারেই নষ্ট হবে।
একটি হিসেবে দেখলাম-
বাংলাদেশের খামারিরা দৈনিক দুধ উৎপাদন করে প্রায় ২ কোটি লিটার।
যার মূল্য আনুমানিক ১২০ কোটি টাকা।
৩৫ দিন বন্ধ থাকলে ক্ষতি হবে ৪২০০ কোটি টাকা।
যা বাংলাদেশ সরকারের বার্ষিক কৃষি ভর্তুকির অর্ধেকের সমান।
অর্থাৎ রাষ্ট্র তাদের সাহায্য করতে না পারুক, বাশ দিতে কোন কার্পন্য করেনি।
আসলে বাংলাদেশের হাইকোর্ট বিশ্বাসযোগ্য কোন প্রতিষ্ঠান নয়।
এর বিচারকরা ছয় মাস ব্রিটিশ নিয়মে ছুটি কাটায়, বাকি ৬ মাস দৈনিক মাত্র ৪ ঘণ্টা ডিউটি করে লক্ষ লক্ষ মামলার জট বাধিয়ে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে স্থবির সিস্টেমে পরিণত করেছে, এদের কারণে কোটি কোটি মানুষ বিচারহীনতায় কষ্ট পাচ্ছে, আর তারা মামলা ঝুলিয়ে রেখে আসামীদের থেকে টাকা খেয়ে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি করছে।
অথচ জনগণের টাকায় এরা বাসা পায়, গাড়ি পায়, দেড় ডজন চাকর পায়। এসব কথিত বিচারকের পেছনে মাসে জনপ্রতি ৩০ লক্ষ টাকা খরচ করা হয় জনগণের টাকায়। কিন্তু এরা না বুঝে জনগণের কথা, না বুঝে জনগণের শিল্পের কথা।
এসব দুধ কোম্পানি বন্ধ থাকলে খামারিদের কতটুকু ক্ষতি হবে, সেটা বুঝে তাদের রুল দেয়া দরকার ছিলো। কিন্তু সেদিকে তাদের বিন্দুমাত্র খবর নেই।
তাছাড়া দুধ কোম্পানি বন্ধ করলে তো সমস্যা দূর হবে না।
কোর্টের উচিত ছিলো, প্রশাসনকে প্রতিটি কোম্পানির প্রসেসিং জোনে পাঠানো,
ঠিক কোন স্থান দিয়ে দুধের ভেতর সমস্যা ঢুকছে, সেটা চিহ্নিত করা।
যদি খামারির দুধ দিয়ে ভারি ধাতু অসে, এন্টিবায়োটিক আসে
ঠিক কোন খাবার বা পলিসির কারণে আসছে সেটা চিহ্নিত করে, শুধু সেটা বন্ধ করা।
পুরো দুধ উৎপাদন বন্ধ করা নয়।
কোন শরীরে টিউমার পেলে কি পুরো শরীরকে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়, নাকি শুধু টিউমারটি অপসারণ করা হয়, আপনারাই বলুন ?
উল্লেখ্য অনেক ক্ষেত্রে দুধ কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য দুধের মধ্যে বিদেশী কমদামি গুড়ো দুধ মেশানোর কারণে ক্ষতিকারক বিষয়গুলোর উপস্থিত হচ্ছে, ঠিক ঐ জিনিসটি চিহ্নিত করা বেশি জরুরী ছিলো। দেখা যেতো- বিদেশী ক্ষতিকারক দুধ আমাদনি বন্ধ করলে অটোমেটিক দেশী কোম্পানির দুধে ক্ষতিকারক উপস্থিতি কমে যেতো।
কিন্তু সেগুলো কিছুই না করে একটা দেশী সিস্টেম পুরো ৩৫ দিন বন্ধ করা, কোন শিক্ষিত ও সুস্থ মস্তিষ্কের লোকের মাথা থেকে আসতে পারে না।
তাছাড়া অনেক কিছুতেই ক্ষতিকর বস্তু থাকতে পারে।
বাতাসের মধ্যে কার্বন মনোক্সাইডও আছে,
যা একটা নির্দ্দিষ্ট পরিমাণে (সামান্য) গ্রহণে কোন মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
কথা হলো সেই উপাদানটি সহনশীল না অতি উচ্চ সেটা নির্ণয় করা দরকার।
কোর্ট যে পরীক্ষাগুলো নিলো, সেগুলো নিয়ে কেমন যেনো লুকোচুরি লুকোচুরি ভাব।
একবার বলছে লেড, অণ্যবার বলছে এন্টিবায়োটিক। কোনটার প্রাপ্ত মাত্রা, আর সহনশীল মাত্রার হিসেব নেই।
তাছাড়া ক্ষতিকারক স্যাম্পল দেশের কোন এলাকা থেকে আসছে, তার কোন হিসেব নেই। পুরো বিষয়টি ধোয়াশাপূর্ণ এবং দেশী কৃষিবিদদের কোন কথাই সেখানে শোনা যায় না।
আরেকটি কথা-
মানুষ দুধ খাওয়া বন্ধ রাখবে না,
দেশী পাস্তুরিত দুধ না পেলে বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধ খাবে।
পাস্তুরিত গুড়া দুধ নিয়ে সরকারী পরীক্ষা কোর্ট বিশ্বাস করেনি, ভুল বলেছে।
তাহলে বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধও তো সরকারি সিস্টেমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়ে দেশে ঢুকছে, এটাও তো বিশ্বাসযোগ্য না্।
বিদেশী আমদানি করা গুড়া দুধও বেসকারি ল্যাবগুলোতে পরীক্ষা করে যাচাই করা দরকার।
দেশী দুধ বন্ধ করে দিলেন, মানুষ বিদেশী দুধ খাবে। কিন্তু বিদেশী দুধ কতটুকু ভালো সেটা যাচাই না করে, দেশী দুধ বন্ধ করা হাইকোর্টের মোটেও উচিত হয়নি।
আসলে হাইকোর্টের এই রুল স্পষ্ট দেশী খামারিদের শেষ করার ষড়যন্ত্র,
৩৫ দিন বন্ধ রাখায় অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী-খামারি বসে যাবে, তারা সেটাই চায়।।
সারা দেশের খামারীদের এই ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে মাঠে নামা উচিত।
কারণ সমস্যা যেই পয়েন্টে শুধু ততটুকু চিহ্নিত করে সেটার সমাধান করুন।
পুরো সিস্টেম ৩৫ দিনের জন্য বন্ধ করে দিবেন, এটা স্পষ্ট দেশী শিল্প ধ্বংস করার বিদেশী ষড়যন্ত্রের অংশ। স্বাবলম্বী হওয়া ১ কোটি লোককে নতুন করে বেকারের খাতায় নাম উঠানোর কার্যক্রম।
তাই হাইকোর্টের এসব আজগুবি রুল অবিলম্বে বাতিল করা হোক।
আর রুল দেয়া বিচারক- রেফাত আহমেদ ও ইকবাল কবিরের বেঞ্চ বিদেশী গুড়া দুধ কোম্পানির থেকে কতটাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছে তাও জনগণের সামনে উন্মুক্ত করা হোক।
Image may contain: text