গত কয়েকদিন যাবত সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিলুপ্ত করতে দৈনিক পত্রিকাগুলো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু মতামত প্রকাশিত হচ্ছে-

গত কয়েকদিন যাবত সংবিধানে বর্ণিত 
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিলুপ্ত করতে দৈনিক পত্রিকাগুলো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু মতামত প্রকাশিত হচ্ছে-

Image result for নদী
গত কয়েকদিন যাবত সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিলুপ্ত করতে দৈনিক পত্রিকাগুলো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কিছু মতামত প্রকাশিত হচ্ছে-
১) গত ২রা জানুয়ারী, ২০১৯ দৈনিক আমাদের সময়ে ছাপা হয়, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূলে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই” শিরোনামে একটি কলাম। কলামটি লিখে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন কার্যালয়ের পরিচালক ড. সেলিম জাহান। কলামে সেলিম জাহান আওয়ামীলীগ সরকারকে রাষ্ট্রধর্ম তুলে দিতে আহবান জানায়। (https://bit.ly/2GU06Id)
২) একইদিন, অর্থাৎ ২রা জানুয়ারী ২০১৯ দৈনিক আমাদের সময়ে কথা সাহিত্যিক জাকির তালুকদারের কলাম, “রাষ্ট্রধর্মের ধারণাটি কোত্থেকে এলো?” প্রকাশ হয়। (https://bit.ly/2GUaoIg) সেখানেও রাষ্ট্রধর্মের কোন দরকার নেই বলে উল্লেখ করে জাকির তালুকদার। উল্লেখ্য জাকির তালুকদার জ্যামকন গ্রুপের থেকে পুরষ্কার প্রাপ্ত সাহিত্যিক। জ্যামকন গ্রুপ হচ্ছে আওয়ামী এমপি কাজী নাবিল আহমেদের বাবার প্রতিষ্ঠান। কাজী নাবিল আহমেদের ভাইয়ের নাম কাজী আনিস আহমেদ, যে বাংলাট্রিবিউন চালায়, বাংলা ট্রিবিউন জ্যামকন গ্রুপেরই সংবাদ পোর্টাল। উল্লেখ্য এমপির ভাই কাজী আনিস আহমেদ হচ্ছে জার্মান ভিত্তিক নাস্তিক লেখক সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনাল এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি। উল্লেখ্য গত কয়েকদিন আগে একটি জার্মানিতে এক অর্পিতা রায় চৌধুরী (তমালিকা সিংহ) নামক এক নাস্তিক ব্লগার মারা যায়। মেয়েটি মারা যাওয়ার পর নাস্তিকদের মধ্যে দুই গ্রুপের মধ্যে কথা কাটা কাটির এক পর্যা য়ে তারা ফাস করে বাংলাদেশ ব্লগ জগতে যে নাস্তিকতা, টাকা পাওয়া এবং ইউরোপে অ্যাসলাইমের যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার সবটাই হয় জার্মান ভিত্তিক লেখক সংগঠন পেন ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে। তারাই বাংলাদেশের ব্লগগুলোতে টাকা দিয়ে নাস্তিকতা ছাড়ায়, লেখক-সাংবাদিকদের ট্রেনিং দেয় এবং প্রয়োজনে ইউরোপে অ্যাসালাইম দিয়ে তাদের বাসা ও অন্যান্য খরচ চালায়।
৩) আজকে অর্থাৎ ৩রা জানুয়ারী দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে ছাপা হয়, তসলিমা নাসরিনের কলাম, যার শিরোনাম “যুবসমাজকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব কে নেবে?”। কলামে তসলিমা নাসরিন বলে, “ ধর্ম যদি রাজনীতির মধ্যে ঢুকে যায়, তবে সেই রাজনীতি নিঃসন্দেহে মানুষের মঙ্গলের বদলে অমঙ্গল বয়ে আনে। ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে সরিয়ে রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। এতে ধর্মেরও ভালো, রাষ্ট্রেরও ভালো।”( https://bit.ly/2CKSVOy),
এর একদিন পর তসলিমার আরেক কলাম দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে যেখানে ছাপা হলো। সেখানেও সে শেখ হাসিনাকে ৭২ এর সংবিধানে ফিরে গিয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দিতে বলে। (https://bit.ly/2F6CdLI)
৪) ১লা জানুয়ারী, ড. জাফর ইকবাল নববর্ষের প্রত্যাশা কলামে সরকারকে রাষ্ট্রধর্মের দিকে ইঙ্গিত করে, “নতুন বছরের এই সময়টি হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক একটি দেশের স্বপ্ন দেখার সময়। আশা করব আগামী পাঁচ বছর নতুন সরকার নতুন প্রজন্মকে পুরোপুরি অসাম্প্রদায়িক হতে শেখাবে। (https://bit.ly/2AqeJNM)
৫) নির্বাচনের দুইদিন আগে হিন্দু সাংবাদিক রনেশ মৈত্র রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে বলে, “দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট বে-আইনী ঘোষণা করা সত্বেও জিয়া প্রবর্তিত “বিসমিল্লাহ” “জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামীসহ সকল ধর্মাশ্রয়ী দলকে এই সরকারই তো কুখ্যাত পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা দিয়েছে এবং স্বৈরাচারী এরশাদ প্রবর্তিত “রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম” সংবিধানে পুনরায় অন্তর্ভূক্ত করে বাহাত্তরের মূল সংবিধান ও তার ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্যকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিয়ে একটি সাম্প্রদায়িক ও পাকিস্তান মুখী সংবিধানে পরিণত করা হয়েছে। পৃথিবীর কোন মুসলিম রাষ্ট্রের সংবিধানে ও ‘বিসমিল্লাহ’ “রাষ্ট্রধর্ম” খুঁজে পাওয়া যাবে না। “ (https://bit.ly/2LRJOP6)
৬) নির্বাচনের দিন ভারতের বাংলা ভাষার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় আওয়ামীলীগের সমালোচনা করে বলা হয়, “কেন তারা সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও বিসমিল্লাহ রেখে ১৫তম সংশোধনী করে ?” (https://bit.ly/2R7Uy1C)
৭) নির্বাচনের একদিন পর ইউরোপে পাকা পায়খানার লোভে যাওয়া হিন্দু নাস্তিক ‘সন্নাসি রতন’র ফেসবুকে স্ট্যাটাসে তরুণ বড়ুয়া নামক এক বৌদ্ধ কমেন্টে বলে, “এবার সরকারের প্ল্যান আছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দেয়া”র। (https://bit.ly/2F5U98B) উল্লেখ্য, এই কথাটাই কিন্তু আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলো, সুযোগ পেলে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তুলে দেয়া হবে। (https://bit.ly/2F710iY), তারমানে আওয়ামীলীগ সেই সুযোগের অপেক্ষায় আছে।
একটি বিষয় স্পষ্ট, নির্বাচনের আগে এবং পরে একটি মহল আওয়ামীলীগের উপর প্রেসার ক্রিয়েট লক্ষ্য করা যাচ্ছে, রাষ্ট্রধর্ম তুলে দেয়ার জন্য। এটা রাষ্ট্রধর্ম তুলে দেয়ার সরকারের পরিকল্পনার কথিত জনসমর্থনের প্রদর্শনীও হতে পারে।
এখন তাহলে মুসলমানরা কি করবে -
ক) রাষ্ট্রধর্ম যেহেতু সংবিধান স্বীকৃত বিষয়, তাই কেউ যদি এর বিরুদ্ধে বলে তবে তার কঠোর শাস্তির দাবি তুলতে হবে। যে এর বিরুদ্ধে বলবে, তাকেই ফাঁসি দিতে বলতে হবে।
খ) গত ৩ টার্ম ধরে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহার হচ্ছে, “ক্ষমতায় গেলে আওয়ামীলীগ কোরআন সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন পাশ করবে না”। অথচ ২০১১ সালে তারা সংবিধান থেকে ‘আল্লাহ’র উপর আস্থা ও বিশ্বাস’ তুলে দেয়। এটা অবিলম্বে ফিরিয়ে আনার জোড়ালো দাবী তুলতে হবে।
গ) সংখ্যাগুরু মন্ত্রনালয় এবং সংখ্যাগুরু অধিকার আইন করতে হবে। সংখ্যাগুরুদের বিরুদ্ধে যে কোন হামলা হলে বিশেষ ট্রাইবুনালে তার বিচারের ব্যবস্থা করার দাবী তুলতে হবে।
Image may contain: text that says '৩টি দাবী - ১) ২০১১ সালে সংবিধান থেকে বাদ দেয়া 'আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস' ফিরিয়ে আনা I ২) সংবিধান স্বীকৃত রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে যে কোন কথা ও কাজের বিরুদ্ধে শাস্তি মৃত্যুদু বিধান রেখে আইন পাশ করা ৩) সংখ্যাগুরু মন্ত্রনালয় ও সংখ্যাগুরু সুরক্ষা আইন পাশ করা এবং সংখ্যাগুরুর বিরুদ্ধে যে কোন হামলার বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে দ্রুত বিচার করা I'