জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শারজিল ইমামকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় পুলিশ


জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শারজিল ইমামকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় পুলিশ
14 hrs
Image result for হারিকেনজওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র শারজিল ইমামকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় পুলিশ। আসামে মুসলমানদের উপর চলমান নির্যাতন ও আসন্ন গণহত্যা রুখতে পরামর্শ দেয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। শারজিল ইমামের বক্তব্য-
“ অসমে মুসলিম ও বাঙালিদের মারা হচ্ছে। ধীরে ধীরে সব বাংলাভাষীকে মারা হবে। ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হবে। তাই অসমকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। রেললাইন বিচ্ছিন্ন করে অন্তত কয়েক দিনের জন্য এই রাজ্যকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে। বিচ্ছিন্ন করতে হবে মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশকেও। চিকেনস নেক নামক একটি সরু অংশের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারত এ দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। লাখ পাঁচেক মুসলিম ঘাঁটি গেড়ে বসে পড়লেই, উত্তর-পূর্বকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া সম্ভব হবে। আর তা হলেই হুঁশ ফিরবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের।’’ (https://bit.ly/2O9nMcW)
আজ থেকে ৫ মাস আগে আমিও আসামের মুসলমানদের বাচতে প্রায় এই বুদ্ধি দিয়েছিলাম- “মুসলমানদের দিয়েই আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন মানেই এই নয় প্রথমে মারামারি কাটাকাটি। প্রথমে ৮-১০ লক্ষ মুসলমানের জনসমাবেশ ঘটানো। যায়গায় যায়গায় সমাবেশ করতে হবে। প্রয়োজনে আসাম দিয়ে যাওয়া সেভেন সিস্টারের মূল হাইওয়েগুলো অবরোধ করা যেতে পারে।”
(https://bit.ly/2uIMqKg)
আসলে শিলিগুড়ি করিডর বা চিকেনস নেক হলো ভারতের কলিজার মত। এটি মাত্র ২২ কিলোমিটার এলাকা, যা মূল ভারতের সাথে ৭ সিস্টার্সকে সংযুক্ত করেছে। চিকেনস নেক বা মুরগীর গলা অবরোধ করা মানে ভারতকে দুইটুকরা করে ফেলা। উল্লেখ্য, ৭ সিস্টার্সে অনেক উপজাতি আছে, যারা স্বাধীনতার জন্য বহু বছর ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। ফলে চিকেনস নেক দিয়ে ভারত পৃথক হলে সেই বিদ্রোহী দলগুলোর জন্যও পোয়াবাড়ো হবে।
লক্ষ্যণীয় এতদিন এনআরসি/সিসিএ নিয়ে অনেক আন্দোলন হয়েছে, সেসব আন্দোলনে ৫-৭ লক্ষ লোকও একত্র হয়েছে, সেটা নিয়ে মোদি সরকার তেমন হুমকি মনে করছিলো না। কিন্তু চিকেনস নেকের দিকে আঙ্গুল তুলতেই মোদি সরকারের অন্তরাত্মা কেপে উঠেছে। তবে শুধু শিলিগুড়ির চিকেনস নেক নয়, আসামের যে এলাকাগুলো মুসলিম অধ্যুষিত এবং যারা এনআরসিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে (যেমন- ধুবরী, গোয়ালপাড়া, কোকরাঝাড়, বঙ্গাইগাঁও জেলা, যেগুলো ১৮২৫ সাল পর্যন্ত ছিল পুরানো রংপুর জেলার অন্তর্গত), ঐ এলাকার মুসলমানরা অবরোধ শুরু করে, তবেও ভারত বাংলাদেশ-ভুটান বরাবর কাটা যায়, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে সেভেন সিস্টার্স।
আমার মনে হয়, শারজিল ইমাম গ্রেফতার হলেও তার দেখানো পথ থেকে মুসলমানদের সরে আসা ঠিক হবে না। ৫-৭ লক্ষ লোক একত্র হয়ে শিলিগুড়ি অভিমুখের তাদের মার্চ করা উচিত। কারণ আজ হলেও মরতে হবে, কাল হলেও মরতে হবে। এখন ঠিকমত আন্দোলন করলে হয়ত কিছু লোককে সেক্রেফাইজ করতে হতে পারে, কিন্তু এতে আসন্ন গণহত্যা বা গণবিতারণ ঠেকানো সম্ভব।
পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণেরও উচিত, সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে সেই চিকেনস নেক বা শিলিগুড়ি করিডর সীমান্ত অভিমুখে একটা মার্চ করা। সীমান্তের ঐ পার না গেলেও এ পারে হলেও একটা বড় জনসমাবেশ ঘটানো উচিত। তাহলে বাংলাদেশে জনগণের পক্ষ থেকে মোদি সরকারকে একটা ভালো মানের সতর্ক বার্তা দেয়া সম্ভব।