যারা ধর্মনিরপেক্ষতা চায়, তারা কিন্তু সব সময় মুসলমানদের এটা বুঝাতে চেষ্টা করে-
রাষ্ট্র চলবে ধর্মনিরপেক্ষ পদ্ধতিতে, কারণ রাষ্ট্রে সকল ধর্মের লোক আছে। তবে হ্যা ধর্ম থাকবে, কিন্তু সেটা থাকবে তার ব্যক্তিগত জীবনে। সে ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম পালন করতে পারবে, কিন্তু রাষ্ট্রের কার্যকলাপে ধর্মের কোন হস্তক্ষেপ বা প্রভাব থাকবে না।
মূলতঃ এই বয়ান দিয়ে তারা ইসলাম ধর্মকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ঘরের গোপন প্রকোষ্ঠে সীমাবদ্ধ করে দিলো।
রাষ্ট্র চলবে ধর্মনিরপেক্ষ পদ্ধতিতে, কারণ রাষ্ট্রে সকল ধর্মের লোক আছে। তবে হ্যা ধর্ম থাকবে, কিন্তু সেটা থাকবে তার ব্যক্তিগত জীবনে। সে ব্যক্তিগতভাবে ধর্ম পালন করতে পারবে, কিন্তু রাষ্ট্রের কার্যকলাপে ধর্মের কোন হস্তক্ষেপ বা প্রভাব থাকবে না।
মূলতঃ এই বয়ান দিয়ে তারা ইসলাম ধর্মকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ঘরের গোপন প্রকোষ্ঠে সীমাবদ্ধ করে দিলো।
অথচ এবার স্বরসতী পূজায় দেখা গেলো ভিন্ন অবস্থা, যারা ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করতে চান, তারাই কিন্তু স্বরসতীপূজাকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিয়ে আসলেন। পূজার জন্য ভোট, এসএসসি পরীক্ষা এবং একুশের বই মেলার মত ৩টি গুরত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বিষয়কে পিছিয়ে প্রমাণ করলেন, রাষ্ট্রে ধর্মের হস্তক্ষেপ হবে না বলে এতদিন যে সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিপেক্ষতা আমাদের বুঝানো হয়েছে, সেটা শুধু ইসলামের জন্য প্রযোজ্য কিন্তু হিন্দু ধর্মের জন্য প্রয়োজ্য নয়।
স্বরসতী পূজা নিয়ে একাত্তর টিভিতে একটা টক শো শুনতেছিলাম, সেখানে একটা কথা উঠলো, অন্যদেশে কি স্বরসতী পূজার সময় সব বন্ধ থাকে ?
তখন টকশোতে আগত একজন উদার সেক্যুলার উত্তর দিলো- কোন দেশে স্বরসতী পূজায় বন্ধ দেয়, কি না দেয়, এটা নিয়ে তর্ক করা কুতর্ক।
বুঝেন অবস্থা, এরাই যখন ভাস্কর্য-মূর্তি নিয়ে টক শো করে, তখন কিন্তু বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে বলেছিলো- ঐ দেশে থাকতে পারলে, বাংলাদেশের মুসলমানদের তা মেনে নিতে সমস্যা কোথায় ? কিন্তু হিন্দু ধর্মের বেলায় সেটাকেই তারা কুতর্ক বলে উড়িয়ে দিচ্ছে।
তখন টকশোতে আগত একজন উদার সেক্যুলার উত্তর দিলো- কোন দেশে স্বরসতী পূজায় বন্ধ দেয়, কি না দেয়, এটা নিয়ে তর্ক করা কুতর্ক।
বুঝেন অবস্থা, এরাই যখন ভাস্কর্য-মূর্তি নিয়ে টক শো করে, তখন কিন্তু বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে বলেছিলো- ঐ দেশে থাকতে পারলে, বাংলাদেশের মুসলমানদের তা মেনে নিতে সমস্যা কোথায় ? কিন্তু হিন্দু ধর্মের বেলায় সেটাকেই তারা কুতর্ক বলে উড়িয়ে দিচ্ছে।
সত্যিই বলতে, বাংলাদেশে সেক্যুলার বা তথাকথিত বিজ্ঞানমনষ্কদের পুজার প্রতি ভালোবাসা দেখলে আমি অবাক হই। অথচ প্রতি বছর, ‘ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি’ স্বরসতী পূজা আসলেই ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বরসতী পূজা বন্ধ করতে কার্যক্রম চালায়, অথচ বাংলাদেশে আর্টসে পড়া সেক্যুলার বিজ্ঞানীরা কিভাবে স্বরসতী দেবীর মধ্যে বিজ্ঞান খুজে পায় আমার তা মাথায় আসে না ?
আসলে বাংলাদেশে যারা সেক্যুলার রাজনীতি (ডেমোক্র্যাটিক ব্লক) করে তারা কখনই চায় না ডানপন্থার উত্থ্যান ঘটুক। তারা ভাবে ডানপন্থার উদ্ভব ঘটলে তারা তাদের রাজনীতির ফিল্ড হারাবে। মেনে নিলাম তাদের কথা- ডানপন্থার উদ্ভব হলে সেক্যুলাররা রাজনীতি ফিল্ড হারাবে। কিন্তু কথা হলো- তারা সবক দিয়ে মুসলমানদের ডানপন্থার উত্থান বন্ধ করলেও, হিন্দুদের মধ্যে ডানপন্থার উত্থান কি ঠেকাতে পেরেছে ? এই নির্বাচনের দিনে স্বরসতী পূজা ইস্যু নিয়েই দেখুন, হাইকোর্টের অর্ডারের পরও রানাদাশ গুপ্তের মত অ্যাডভোকেট হিন্দুনেতাও হুঙ্কার ছেড়ে বলেছে- তারা নির্বাচন যে কোন মূল্যে প্রতিহত করবে। এটা কি উগ্রডানপন্থী কার্যক্রম না ?
যাই হোক, কথা হলো- এই যে সেক্যুলাররা নিজ রাজনীতির স্বার্থে শুধু মুসলমানদের নিউট্র্যাল রাখছে কিন্তু হিন্দু ডানপন্থা থামাতে পারছে না, অর্থাৎ এই যে একটা ইমব্যালেন্স তৈরী হচ্ছে, এতে কি অদূর ভবিষ্যতে মুসলমানদের লাভ হবে না ক্ষতি হবে ? মুসলমানরা সেক্যুলার হলে গেলে কি তারা ডানপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের বিরুদ্ধে দাড়াতে পারবে ? ভারতে কি পেরেছে ? ভারতে কি সেক্যুলাররা গরুর মাংশের জন্য মুসলমান পিটিয়ে হত্যা বন্ধ করতে পেরেছে ? পেরেছে কি মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির বানানো বন্ধ করতে ? কিংবা এনআরসি’র নাম মুসলিম বিতাড়ন কি বন্ধ করতে পেরেছে ? ভারতে সেক্যুলাররা যেটা পারেনি, বাংলাদেশের সেক্যুলাররা সেটা পারবে, এটা আমি বিশ্বাস করি না। তাহলে সেক্যুলারদের কথা শুনে মুসলমানরা কোন ভরসায় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বা কথিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সবক গ্রহণ করছে? বাংলাদেশের মুসলমানদের পাশ্ববর্তী ভারতীয় সেক্যুলার মুসলমানদের কঠিন পরিণতি থেকে শিক্ষা নিতে না পারাটা সত্যিই ভয়ানক বিষয়।