আমি অনেক আগে থেকেই একটা কথা বলে আসছি,
মুসলমানদের জন্য এমন একটা কঠিন সময় এসেছে এবং আসছে,
যেখানে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য বা একাত্ব তৈরী হওয়া খুব জরুরী।
মুসলমান যদি নিজের মধ্যে ঐক্য না থাকতে পারে, তবে পুরো মুসলিম জাতিকে বড় ধরনের ধ্বংস দেখতে থাকতেই হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মুসলমানরা খুব খারাপ কিছু দেখার অপেক্ষায় আছে। এখন অমুসলিম শত্রুর আগ্রাসন এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মত বড় সমস্যা নিকটবর্তী, কিন্তু সে সম্পর্কে বাংলাদেশের মুসলমানরা খুবই বেখবর, তারা ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি নিয়ে।
মুসলমানদের জন্য এমন একটা কঠিন সময় এসেছে এবং আসছে,
যেখানে মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য বা একাত্ব তৈরী হওয়া খুব জরুরী।
মুসলমান যদি নিজের মধ্যে ঐক্য না থাকতে পারে, তবে পুরো মুসলিম জাতিকে বড় ধরনের ধ্বংস দেখতে থাকতেই হবে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মুসলমানরা খুব খারাপ কিছু দেখার অপেক্ষায় আছে। এখন অমুসলিম শত্রুর আগ্রাসন এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মত বড় সমস্যা নিকটবর্তী, কিন্তু সে সম্পর্কে বাংলাদেশের মুসলমানরা খুবই বেখবর, তারা ব্যস্ত নিজেদের মধ্যে কামড়াকামড়ি নিয়ে।
আমি দেখেছি, ২০১৫-২০১৭ সাল পর্যন্ত স্যোশাল মিডিয়ায় মুসলমানদের মধ্যে একটা ভালো ঐক্য ছিলো এবং সব মুসলমান এক হয়ে মুসলিমবিরোধী সব ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করার জন্য এক জোট ছিলো। কিন্তু আশ্চর্য কোন কারণ বশতঃ ২০১৭ সাল থেকে দৃশ্যপট পরিবর্তন হয়ে যায় এবং মুসলমান-মুসলমান দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে ধারণ করে। আমি বলবো- এটা কোন মুসলমান কমিউনিটির জন্য লাভ-ক্ষতি কি তা আমি জানি না, কিন্তু মুসলমানদের শত্রুদের জন্য চরম লাভজনক একটা বিষয়।
অতি সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা আমি উল্লেখ করবো, যেমন-
তাবলীগ জামাতের মধ্যে দুইটি গ্রুপ হয়েছে। ভালো কথা। তারা আলাদা আলাদা ইজতেমা করে। অতি সম্প্রতি তাদের যে দুই পর্বের ইজতেমা শেষ হয়েছে, সেখানে ফেসবুকে তাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি আমার চোখে পড়েছে, তা খুব ন্যাক্কারজনক। তারা তো আলাদা সমাবেশ করছে, শুধু শুধু একজন অন্যজনের সাথে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে মুসলিম শত্রুদের হাতে অস্ত্র না তুলে দিলেই কি নয় ?
এরপর ইরানের জেনারেল কাশেম সুলাইমানির হত্যা প্রসঙ্গ দেখুন- সেখানে শুরু হয়েছে শিয়া-ুসুন্নী দ্বন্দ্ব। আমি আমার স্ট্যাটাসে একটা কথা বলেছিলাম- এই প্রসঙ্গ নিয়ে আমাদের আপাতত আলোচনা করারই দরকার নাই। কারণ আমার জানা মতে, বাংলাদেশে শিয়া মতাবলম্বী বলতে গেলে নাই, বা খুব কম সংখ্যক, প্রায় সবাই সুন্নী। কিন্তু কাশেম সুলাইমানিকে নিয়ে আলোচনা করলে বাংলাদেশে সুন্নী-সুন্নী দুইভাগ হয়ে যাচ্ছে, এর কোন দরকারই নাই।
এরপর অতি সম্প্রতি শুরু হয়েছে ওয়াজ মাহফিল নিয়ে দ্বন্দ্ব।
মুসলমান-মুসলমান কঠিন দ্বন্দ্ব।
ওয়াজ মাহফিল নিয়ে আমার কিছু কথা আছে।
প্রথমতঃ যারা ওয়াজ করেন, তাদের উচিত হবে মুসলিম-মুসলিম ভাতৃত্ব তৈরী হবে এমন বিষয় নিয়ে ওয়াজ করা এবং মুসলিম-মুসলিম দ্বন্দ্ব/বিতর্ক তৈরী হবে, এমন বিষয় নিয়ে ওয়াজ না করা বা এড়িয়ে যাওয়া।
মুসলমান-মুসলমান কঠিন দ্বন্দ্ব।
ওয়াজ মাহফিল নিয়ে আমার কিছু কথা আছে।
প্রথমতঃ যারা ওয়াজ করেন, তাদের উচিত হবে মুসলিম-মুসলিম ভাতৃত্ব তৈরী হবে এমন বিষয় নিয়ে ওয়াজ করা এবং মুসলিম-মুসলিম দ্বন্দ্ব/বিতর্ক তৈরী হবে, এমন বিষয় নিয়ে ওয়াজ না করা বা এড়িয়ে যাওয়া।
দ্বিতীয়তঃ যারা ওয়াজ শুনেন বা আয়োজন করেন তাদের একটা বড় দায়িত্ব আছে।
ক) যারা ওয়াজ শুনে তারা বেশিরভাগ এন্টারটেইন বা বিনোদনের জন্য ওয়াজ শুনে, এজন্য দুইপক্ষ লেগে গেলে সেটা তারা উপভোগ করে। এ ধরনের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। ওয়াজ শুনতে হবে জ্ঞান বৃদ্ধি বা ধর্মীয় কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য।
খ) আপনারা যারা ওয়ায়েজদের দাওয়াত দিবেন, তাদের শর্ত দিবেন- মুসলিম মুসলিম ভাতৃত্ব কিভাবে বৃদ্ধি পায় সেই ওয়াজ যেন করেন, মুসলমানরা কিভাবে অমুসলিম শত্রুদের রুখবে সেই ওয়াজ যেন করে। এমন কোন ওয়াজ করবেন না, যা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী হয় বা বিতর্কর্ সৃষ্টি করে।
গ) মানুষ মাত্র ভুল করতে পারে, ওয়ায়েজরাও ভুল করতে পারে, এটা খুব স্বাভাবিক, এখানে অস্বাভাবিকতার কিছুই নেই। তবে আপনি ঐ ওয়ায়েজকে ভালোবাসতে পারেন, কিন্তু ভুলেও তার ভুলের পক্ষে সাফাই গাইবেন না। বরং তাকে ভালোবেসে ভাই হিসেবেই বলবেন-সে যেন বিষয়টি শুধরে নেয়। আপনি অন্ধ ভক্ত না হয়ে, শুরুতেই যখন ভাই হিসেবে তাকে শুধরাতে বললেন, তখন দেখা যাবে সে ভুলের আর পুনরাবৃত্তি করলো না। শুরুতেই যদি আপন ভাই হিসেবে তার ভুল/বিতর্কগুলো থামিয়ে দেয়া যায়, তখন সেটা নিয়ে অন্য মুসলমানদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরী হয় না, বরং এক পর্যায়ে সেটা মুসলমানদের ছাপিয়ে তাদের শত্রুদের হাতিয়ার হয়ে দাড়ায় না। মনে রাখবেন- কোন ওয়াজের আলোচনা ইউটিউবে কোটি কোটি মানুষ শুনলেই ইসলামের অনেক বড় উপকার হয়ে যাবে, বিষয়টি এমন না, কিন্তু কোন ওয়াজের কারণে যদি মুসলিম সমাজ দুইভাগ হয়ে যায়, তবে সেটা ইসলামের জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ।
ক) যারা ওয়াজ শুনে তারা বেশিরভাগ এন্টারটেইন বা বিনোদনের জন্য ওয়াজ শুনে, এজন্য দুইপক্ষ লেগে গেলে সেটা তারা উপভোগ করে। এ ধরনের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। ওয়াজ শুনতে হবে জ্ঞান বৃদ্ধি বা ধর্মীয় কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য।
খ) আপনারা যারা ওয়ায়েজদের দাওয়াত দিবেন, তাদের শর্ত দিবেন- মুসলিম মুসলিম ভাতৃত্ব কিভাবে বৃদ্ধি পায় সেই ওয়াজ যেন করেন, মুসলমানরা কিভাবে অমুসলিম শত্রুদের রুখবে সেই ওয়াজ যেন করে। এমন কোন ওয়াজ করবেন না, যা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরী হয় বা বিতর্কর্ সৃষ্টি করে।
গ) মানুষ মাত্র ভুল করতে পারে, ওয়ায়েজরাও ভুল করতে পারে, এটা খুব স্বাভাবিক, এখানে অস্বাভাবিকতার কিছুই নেই। তবে আপনি ঐ ওয়ায়েজকে ভালোবাসতে পারেন, কিন্তু ভুলেও তার ভুলের পক্ষে সাফাই গাইবেন না। বরং তাকে ভালোবেসে ভাই হিসেবেই বলবেন-সে যেন বিষয়টি শুধরে নেয়। আপনি অন্ধ ভক্ত না হয়ে, শুরুতেই যখন ভাই হিসেবে তাকে শুধরাতে বললেন, তখন দেখা যাবে সে ভুলের আর পুনরাবৃত্তি করলো না। শুরুতেই যদি আপন ভাই হিসেবে তার ভুল/বিতর্কগুলো থামিয়ে দেয়া যায়, তখন সেটা নিয়ে অন্য মুসলমানদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরী হয় না, বরং এক পর্যায়ে সেটা মুসলমানদের ছাপিয়ে তাদের শত্রুদের হাতিয়ার হয়ে দাড়ায় না। মনে রাখবেন- কোন ওয়াজের আলোচনা ইউটিউবে কোটি কোটি মানুষ শুনলেই ইসলামের অনেক বড় উপকার হয়ে যাবে, বিষয়টি এমন না, কিন্তু কোন ওয়াজের কারণে যদি মুসলিম সমাজ দুইভাগ হয়ে যায়, তবে সেটা ইসলামের জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ।
এখানে একটা বিষয় আপনাদের বলতে চাই-
মুসলমানরা নিজেদের মধ্যেই কত কত গ্রুপ তৈরী করেছে, অপরদিকে তাদের শত্রুরা নিজেদের মধ্যে তৈরী করেছে বহুমুখী কোয়ালিশন। মুসলমানদের শত্রুরা অন্য কমিউনিটিগুলোকেও নিজেদের দলের মধ্যে ভিড়িয়ে ফেলে। যেমন ধরুন, আমি আন্তর্জাতিক রাজনীতি শেখানোর সময় ডেমোক্র্যাটিক ব্লক বা রিপাবলিকান ব্লক টার্মগুলো আপনাদের শুনাই। ডেমোক্র্যাটিক ব্লক মানে তারা ওয়াল্ডওয়াইড একটা জাল তৈরী করেছে। এতে অনেক চিন্তাধারা ও ভাব আদর্শের লোকের সাথে তারা একাত্ব হয়েছে। যেমন ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের মধ্যে আছে- যারা পিওর মার্কিন নেটওয়ার্কের ডেমোক্র্যাট, কানাডার নেটওয়ার্কে লিবারেলরা, স্যোসালিস্টরা, জার্মানির নেটওয়ার্কের নাস্তিকরা, রুশব্লক থেকে বেড়িয়ে যাওয়া বামপন্থী, মর্ডান ইসলাম পছন্দকারীরা, পরিবেশবাদী, বিচারবিভাগীয় সদস্য, সংবাদিক, মিডিয়া সেলিব্রেটি, নারীবাদী, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ এমন আরো বহু দেশে বহু কমিউনিটি তাদের নেওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে। একইভাবে- রিপাবলিকান ব্লক মানে খ্রিস্টান ডান, ইহুদী ডান, বৌদ্ধ ডান, হিন্দু ডান এমন আরো বহু দেশের বহু ব্যবসায়ী বা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এই ব্লকের সংযুক্ত আছে। এই যে তাদের নেটওয়ার্ক ওয়াল্ডওয়াইড এত বড় আর এত বহুমুখী তাদের সাথে মুসলমান জন্য পারা খুব কঠিন, কারণ মুসলমানরা ছোট কমিউনিটি এক হয়ে থাকতে পারে না, এত বহুমুখী কমিউনিটির বিপক্ষে দাড়াবে কিভাবে? ফলে খুব সহজেই এদের কাছে মুসলমানদের পরাজিত হতে হয়।
মুসলমানরা নিজেদের মধ্যেই কত কত গ্রুপ তৈরী করেছে, অপরদিকে তাদের শত্রুরা নিজেদের মধ্যে তৈরী করেছে বহুমুখী কোয়ালিশন। মুসলমানদের শত্রুরা অন্য কমিউনিটিগুলোকেও নিজেদের দলের মধ্যে ভিড়িয়ে ফেলে। যেমন ধরুন, আমি আন্তর্জাতিক রাজনীতি শেখানোর সময় ডেমোক্র্যাটিক ব্লক বা রিপাবলিকান ব্লক টার্মগুলো আপনাদের শুনাই। ডেমোক্র্যাটিক ব্লক মানে তারা ওয়াল্ডওয়াইড একটা জাল তৈরী করেছে। এতে অনেক চিন্তাধারা ও ভাব আদর্শের লোকের সাথে তারা একাত্ব হয়েছে। যেমন ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের মধ্যে আছে- যারা পিওর মার্কিন নেটওয়ার্কের ডেমোক্র্যাট, কানাডার নেটওয়ার্কে লিবারেলরা, স্যোসালিস্টরা, জার্মানির নেটওয়ার্কের নাস্তিকরা, রুশব্লক থেকে বেড়িয়ে যাওয়া বামপন্থী, মর্ডান ইসলাম পছন্দকারীরা, পরিবেশবাদী, বিচারবিভাগীয় সদস্য, সংবাদিক, মিডিয়া সেলিব্রেটি, নারীবাদী, বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ এমন আরো বহু দেশে বহু কমিউনিটি তাদের নেওয়ার্কে যুক্ত হয়েছে। একইভাবে- রিপাবলিকান ব্লক মানে খ্রিস্টান ডান, ইহুদী ডান, বৌদ্ধ ডান, হিন্দু ডান এমন আরো বহু দেশের বহু ব্যবসায়ী বা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা এই ব্লকের সংযুক্ত আছে। এই যে তাদের নেটওয়ার্ক ওয়াল্ডওয়াইড এত বড় আর এত বহুমুখী তাদের সাথে মুসলমান জন্য পারা খুব কঠিন, কারণ মুসলমানরা ছোট কমিউনিটি এক হয়ে থাকতে পারে না, এত বহুমুখী কমিউনিটির বিপক্ষে দাড়াবে কিভাবে? ফলে খুব সহজেই এদের কাছে মুসলমানদের পরাজিত হতে হয়।
তবে কঠিন হলেও মুসলমানদের জন্য অসম্ভব আমি তা বলছি না, অবশ্যই তাদের সাথে পারা সম্ভব। কিন্তু তার জন্য প্রথম প্রয়োজন মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য। আমি আগেও বলেছি, আবারও বলছি- মুসলমানদের মধ্যে যারা তরুণ প্রজন্ম আছে, তাদেরকে ব্যতিক্রমী মানসিকতার হতে হবে। তাদের পুরাতন কালচার ভেঙ্গে নতুনের দিকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে, যাদের কারণে দ্বন্দ্ব/বিতর্ক তৈরী হয়, তাদের শুরুতেই শুধরে দেয়া। ওয়ায়েজদের বলা, আপনারা মুসলিম ভাতৃত্ব এবং মুসলিমদের শত্রুদের সম্পর্কে আলোচনা করেন, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা বিতর্ক তৈরী হয় এমন বিষয়গুলে এড়িয়ে যান, কষ্ট হলেও এড়িয়ে যান, আপাতত মুসলিম জাতির বর্তমান কঠিন অবস্থার কথা চিন্তা করে হলেও এড়িয়ে যান। এক্ষেত্রে খুব দ্রুত উদ্যোগ নেয়া জরুরী, নয়ত মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে শতমুখী বিভেদ তৈরী হয়ে খুব খারাপ সময় অপেক্ষা করছে।