শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বরসতী পূজা করার বৈধতা আছে কি ?
শুনলাম, স্বরসতী পূজায় বিঘ্ন হওয়ার দাবী করে নির্বাচন পেছাতে রিট করেছে এক হিন্দু আইনজীবি। অবশ্য হাইকোর্ট রিটটি খারিজ করে দিয়েছে। হিন্দুদের দাবী ছিলো, যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজা হয়, সেহেতু সেদিন ভোটকেন্দ্র হলে সেখানে পূজার বিঘ্ন ঘটতে পারে।
এখানে একটি প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবে উদয় হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূজা কেন্দ্র বানানোর বৈধতা আছে কি ?
পূজা হবে মন্দিরে, সেটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন ?
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পূজার মণ্ডপ বানানোর কারণে অনেক কোমলমতি মুসলিম শিশু সেগুলোতে যোগদান করছে, অথচ বাংলাদেশের সংবিধানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে এক ধর্মের শিশুকে অন্য ধর্মের কার্যকলাপে অংশ গ্রহণ করানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই হিন্দুদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা করতে দেয়াই ঠিক না।
অথচ সেই বৈধতাহীন কাজটি করতে গিয়ে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকেই বাতিল করতে চাইছে হিন্দুরা।
বিষয়টা অনেক তুলনা করা যায়, মন্দির প্রতিষ্ঠার সাথে।
মানে আপনি হিন্দুদের আদর করে একটা মন্দির বানাইতে দিলেন,
কয়েক বছর পর সেই মন্দির দেখায় বলবে- পুরা যায়াগাটাই হিন্দুদের, আপনি হইলেন দখলকারী, প্রমাণ হইলো- ঐ মন্দির।
যেমন- রমনা এলাকাটা সম্ভবত সুলতানি আমলে প্রতিষ্ঠা হইছিলো মুসলিম এলিট ক্লাসের জন্য। ঘটনা ক্রমে তার কয়েকশ’ বছর পরে এক নবাবের শাহবাগ বাগানের একজন কর্মচারি ছিলো হিন্দু, কর্মচারির স্ত্রী ধর্মকর্ম পালন করতো বিধায়, তাকে নবাব দয়া করে একটা রমনা কালী মন্দির নামক মন্দির তৈরীর অনুমুতি দিছিলো। কিন্তু এখন ঐ ইতিহাস ভুলে গিয়ে হিন্দুরা দাবী করতেছে- পুরো রমনা এলাকাটাই ছিলো হিন্দুদের, তার দলিল রমনা কালী মন্দির এবং রমনা কালী মন্দিরের নাম অনুসারেই নাকি রমনা এলাকার নামকরণ করা হইছে।
যাই হোক, এবার স্বরসতী পূজার কথায় আসি।
পূজা হচ্ছে ২৯ জানুয়ারী, আর ভোট ৩০শে জানুয়ারী।
ঘটনা হইলো- হিন্দু ধর্ম অনুসারে পূজার তিথি’র ২৯শে জানুয়ারী সকাল থেকে ৩০শে জানুয়ারী সকাল ১১টা পর্যন্ত। ধর্ম অনুসারে পূজার তিথি ১ ঘন্টা ৩০ তারিখ ভোটের মধ্যে পড়ে গেছে, যদিও বাস্তবতা হলো- ২৯ তারিখ সারাদিন সময় পেয়ে তখনই পূজা করে সব শেষ হবে। ৩০ তারিখ সকাল ৯-১০টার দিকে কে স্কুলে তিথি পূরণ করতে যাবে ?
কিন্তু ঐ যে হিন্দুদের স্বভাব, “গায়ে মানে না আমি সাম্প্রদায়িক”।
মানে পায়ে পায়ে লাগিয়ে সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশ করবে।
২৯ তারিখ স্বরসতী পূজা, সেটার তিথির হিসেব দিয়ে ৩০ তারিখ ভোট আটকায় দিতে চাইছে। বুঝেন এবার।
সেই হিসেব করলে তো মুসলমানদের কোরবানী ঈদ ৩ দিন, কিন্তু ঈদের তৃতীয় দিন অফিস আদালত খুলে যায়।
কথা হইলো- “গায়ে মানে না আমি সাম্প্রদায়িক” এটা খুব খারাপ স্বভাব।
এই স্বভাবযুক্ত হিন্দুরা ভারতের মুসলমানদের উপর সর্বোচ্চ নিপীড়ন চালাইতেছে।
আবার বাংলাদেশে এসে রাজারহালে থেকেও মুসলমানদের পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া লাগাইতে চাইতেছে।
কয়েকদিন আগে খবরে দেখলাম- এবার ভারতের সরকারি ক্যালেন্ডারে মুসলমানদের সমস্ত ধর্মীয় ছুটি বাতিল করা হইছে।
অথচ ঐ ভারতের সাপোর্টে থাকা হিন্দুটাই বাংলাদেশে এসে নির্যাতিত'র বেশ লইয়া মুসলমানদের গলায় পাড়া দিয়ে নিজেকে নির্যাতিত প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লাগছে।
অথচ বাংলাদেশে তারা নিজেদের নির্যাতিত বলে প্রমাণ করতে চাইলেও তাদের আচরণের মধ্যে নির্যাতিত’র লেশ বিন্দুমাত্র নাই, যেহেতু তাদের কানেকশন ভারতের বিজেপি’র নেটওয়ার্কে, তাই তাদের আচরণও আক্রমণকারীর মত। যেমন- একটা পোর্টালে দেখলাম রিটকারী আইনজীবি অশোক কুমার ঘোষ তার ড্রাফটে লিখছে, “বাংলাদেশ কোন মুসলিম দেশ নয়।” (বিডিনিউজ, ১৩ই জানুয়ারী, শিরোনাম-ভোটের তারিখ বদলাবে কি না, জানা যাবে মঙ্গলবার)
বাংলাদেশ মুসলিম দেশ নয়, এটা তো ড্রাফটে লেখার কোন দরকার নাই। কারণ এখানে মুসলিমদের কথা আনার কোন দরকারই না, হুদাই এই কথা লেখার কোন দরকার আছে ? মুসলিম বিদ্বেষ ছাড়া !!
আবার যেই লাল ফিতাওয়ালা সনজিত কিছুদিন আগে কোটা আন্দোলনের পোলাপাইনদের পিটায় হাসপাতালে পাঠাইছে, সেই আজকে নির্যাতিত হইয়া টিএসসি-শাহবাগে পূজার দাবীতে রাস্তা বন্ধ করে দিছে। বুঝেন, বাংলাদেশের হিন্দুরা কেমন নির্যাতিত !!
এরা ভারতের মুসলমানদের বুলডোজার দিয়ে পিষে মারে,
আর ঐ একই গ্রুপ বাংলাদেশে রাজারহালে থেকেও বলে- “আহ কত কষ্টে আছি, কত নির্যাতিত আমরা, আহ!! আমাদের আরো দাও, আরো দাও। আমরা যদি অখণ্ড ভারতে থাকতাম, তাহলেই কেবল শান্তি পাইতাম।”
কথা হইলো- বাংলাদেশকে অখণ্ড ভারত বানানোর পায়তারাকারীগুলোকে দেশে রাখলে কি দেশে শান্তি আসবে?