আমার মনে হয়, ঢাবির ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলের সিট না পাওয়া একটি কৃত্তিম সংকট, এর সমাধান করা কোন ব্যাপারই না। তাদের গণরুমের রেখে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করাই হচ্ছে এই সংকট তৈরীর মূল উদ্দেশ্য। কারণ ছাত্ররা যদি ১ম বর্ষেই পৃথক সিট পেয়ে যায়, তবে তারা কখনই রাজনীতিতে আসবে না এবং রাজনৈতিকদলগুলো মাঠে মারা যাবে। তাই ইচ্ছা করেই এই কৃত্তিম সংকট জিয়িয়ে রাখা হয়।
একটু হিসেব কষলে বুঝতে পারবেন-
ধরুন, ঢাবিতে প্রতি বছর ৭ হাজার নতুন ছাত্র ভর্তি হয়।
এই ৭ হাজার ছাত্রকে বসবাস করতে যদি প্রত্যেককে গড়ে ১০০ স্কয়ার ফিটের একটা রুম করে দেয়া হয়
তবে তাদের মোট স্পেস লাগে ৭ লক্ষ স্কয়ার ফিট।
ভবনটি যদি ২০ তলা হয়, তবে লাগে ৩৫ হাজার স্কয়ার ফিট বা ৪৮ কাঠা।
অর্থাৎ চারপাশে যায়গা ছেড়ে যদি ৬০ কাঠা বা ৩ বিঘার উপর একটি ২০ তলা ভবন করা হয়,
তবে ১ জন ছাত্রকে গড়ে ১০০ স্কয়ার ফিটের একটা রুম দেয়া সম্ভব।
তবে প্রতি ৫ ফ্লোর পর পর যদি ১টি ফ্লোর রাখা হয়, তবে খাবার রুম, লাইব্রেরী, নামাজঘরসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য, তাহলে ভবনটি করতে হবে ২৪ তলা। এবং স্কয়ারফিট হিসেবে তার পরিমাণ দাড়াবে ৮ লক্ষ ৪০ হাজার স্কয়ার ফিট।
[যায়গা আরো বড় নিলে, বাড়ির উচ্চতা কমিয়ে আনা যাবে]
এবার আসুন ভবন তৈরীতে খরচ্।
যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব জমি আছে, তাই আবাসন সংকট মোকাবেলায় তারা ছাত্রদের জন্য সেই জমি ব্যবহার করতেই পারে এবং এক্ষেত্রে ৩ বিঘা কোন জমিই না।
যেহেতু জমি ফ্রি পাওয়া যাচ্ছে, সেহেতু ৮ লক্ষ ৪০ হাজার স্কয়ার ফিটের একটা ভবন তৈরী করতে কত খরচ হবে, সেটা হিসেব করতে হবে।
বাংলাদেশে যারা রিয়েল স্টেট কোম্পানি আছে, তাদের হিসেবে মতেই প্রতি স্কয়ার ফিটে যদি আপনি সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা খরচ করেন, তবে যথেষ্ট (রিয়েল স্টেট কোম্পানিগুলো ব্যাংক থেকে সুদে লোন নেয়, ল্যান্ড ওনারদের ভাগ থাকে এতে খরচ বাড়ে)। তাহলে ৮ লক্ষ ৪০ হাজার স্কয়ার ফিটের আধুনিক ফিটিংসসহ ফ্ল্যাট বানাতে আপনার খরচ হবে ১৬৮ কোটি টাকা। টাকার অ্যামাউন্ট অনেক বেশি মনে হলেও এটা ১ বছরে লাগবে না, খুব তাড়াতাড়ি বানালেও ৫ বছর লাগবে। তাহলে প্রতি বছর লাগবে ৩৩ কোটি টাকা।
এবার আসুন, ঢাবির প্রতি বছরের বাজেট কত ?
ঢাবির এ বছরের বাজেট ছিলো ৮১০ কোটি টাকার।
তাহলে ৩৩ কোটি টাকা হচ্ছে ঢাবির মোট বাজেটের মাত্র ৪% টাকা।
তারমানে আপনি ঢাবিতে প্রতি বছর যে বাজেট পাশ করেন, তার মাত্র ৪% যদি মাত্র ৫ বছর খরচ করেন,
তবে ঢাবির সবচেয়ে যে বড় সমস্যা মানে আবাসন সংকট অর্থাৎ প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সিট না পাওয়া এবং তাকে কেন্দ্র করে মারামারি-কাটাকাটি সব বন্ধ করে দেয়া সম্ভব। এটা হলে ১ম বর্ষের ছাত্ররা আরামসে ক্লাসের ১ম দিন থেকেই একা এক রুম নিয়ে থাকতে পারবে।