ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা কতটুকু?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা কতটুকু?
Image result for হারিকেন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা কতটুকু? শাহবাগের মোড় কি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানার মধ্যে পড়ে ?
আমার যতদূর মনে পড়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলো শেষ চারুকলা পর্যন্ত,
এরপর যে পাবলিক লাইব্রেরী বা যাদুঘর আছে, সেগুলোও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ না।
আর শাহবাগ মোড় তো আরো দূরে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা আন্দোলন করবে, ভালো কথা, তারা ঢাকা ভার্সিটির ভেতর আন্দোলন করুক, ঢাকা ভার্সিটির সীমানা থেকে বের হয়ে শাহবাগ রাস্তায় গিয়ে আন্দোলন করে কেন ?
শাহবাগ রাস্তা বাংলাদেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ মোড়, আর পোলাপাইন তাদের নানান কারণে সেটা বন্ধ করে দেয়, এটা কেমন কথা ?? পাবলিকের যায়গা তারা বন্ধ করার কে ?
কিছুদিন আগে ডাকসুর ভেতরে কোটা আন্দোলনের পোলাপাইনকে পিটাইছে ছাত্রলীগের পোলাপাইন।
তাদের দাবী হলো- তারা বাহিরাগতদের ঢাবির ভেতরে আনছে, এজন্য পিটুনি দেয়া বৈধ।
বুঝলাম, এখন নিজেদের সীমানার পাইরে গিয়ে পাবলিকের রাস্তা যে ঢাবির পোলাপাইন বন্ধ করলো, তারাও তো শাহবাগে বহিরাগত, এখন ঐ সূত্রে তাদের কি করা উচিত ? ডাকসুর ঘটনার মত পিটুনি দেয়া উচিত ??
আরেকটা কথা হইলো, আপনারা ঢাবির পোলাপাইন মানবতার কথা বলেন, ভালো কথা।
কিন্তু ৪-৫টা বড় বড় হাসপাতাল যে রাস্তায়, সে রাস্তা আপনারা এই-সেই কারণে বন্ধ করে কি করে মানবতা ফলাবেন আমাকে বলুন?
বাদ দেন রোগীর কথা, প্রত্যেকটা মানুষের প্রয়োজন তার কাছে বড়। কে কোন প্রয়োজনে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে, তার গুরুত্ব তার কাছে। এমন লোক আছে, একবার রাস্তায় আটকালে তার সারা দিনের ইনকাম বন্ধ হয়ে যাবে, কারো সারা মাসের ইনকাম। এমনিতেই ঢাকা শহরে যানজটের ছড়াছাড়ি, এর মধ্যে আপনারা যদি ঢাকা শহরের একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে দেন, তবে তারা প্রভাব ছড়িয়ে আরো ১০টা রাস্তার উপর পড়ে। এই কাজটা কিভাবে মানবতার কাজ হতে পারে, আমি বুঝিনা।
যে লোক আপনাদের রাস্তা আটকানোয় ক্ষতি হয়েছে,
সে কখনই আপনাদের মানবতার দাবীদার হিসেবে মানবে না, কখনই না।
বরং আপনাদের উপর ক্ষেপপে, হয়ত মাথা বিগড়ে গিয়ে মেরেও বসতে পারে।
আজকে শুনলাম এক ব্যবসায়ী গাড়ির ভেতর অসুস্থ স্ত্রী আর বাচ্চাদের নিয়ে অতিষ্ট হয়ে বন্ধুক বের করেছে,
খুব স্বাভাবিক, তার হাতে যা আছে তাই বের করেছে। এতগুলো ছেলের মাঝে একটা বন্দুক দিয়ে সে কিছুই করতে পারবে না, এটা সে ভালো করেই জানে, তারপরও করেছে শুধুমাত্র কষ্ট থেকে, অতিষ্ট হয়ে। অনেকের হয়ত বন্দুক নাই, হয়ত জানের ভয় আছে, তাই কিছু বলে না। কিন্তু জ্যামে আটকা বাসগুলোর ভেতরে ঢুকে দেখুন, সেইখানে পাবলিক অতিষ্ঠ হয়ে ঠিকই মুখ দিয়ে আন্দোলনকারীদের গালির গুলি করে চলেছে।
খবরে দেখলাম, জগন্নাথ হলের হিন্দু ছেলেপেলে ঐ ব্যক্তিকে মাইর দিয়েছে, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিজের গা পেতে তাকে বাচিয়েছে। একটা কথা না বললেই না,এতদিন না হিন্দু ছেলেপেলেরা বলতো- পূজা হলো মানবতার জিনিস, পূজা দিয়ে নাকি তারা মানবতা শেখাবে।
ভালো কথা, তাহলে আজকে কি করা হলো ?
পূজার পরের দিন হিন্দুরা বিশ্রাম করবে, সেই দিন ভোট বাতিল করতে হবে, এই জন্য তারা ঢাবির সীমানার বাইরে গিয়ে পাবলিকের রাস্তা বন্ধ করে রাখবে ? আবার পাবলিক কষ্ট পেয়ে ক্ষেপে গেলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করবে, এরপর পাবলিক আক্রমণ করলে নিজেদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ১০০ জন মিলে ১ জনকে গণপিটুনি দেবে, এটাই তাহলে মানবতা।
তারা যদি এতই ভালো হতে, ঐ ব্যক্তির সাথে ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলতো, তার অসুস্থ স্ত্রী ও বাচ্চাদের কথা শুনে তার গাড়ি ছেড়ে দিতো, সেটা না করে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলো কেন ?
সড়ক আন্দোলনের সময় তো ছোট ছোট বাচ্চারাও অ্যাম্বুলেন্স আর অসুস্থ রোগীদের ছেড়ে দিচ্ছিলো,
তবে এখন ঢাবির হিন্দু ছাত্ররা কেন তাকে না ছেড়ে খারাপ ব্যবহার করলো ? কেন তাকে ক্ষেপিয়ে দিলো??
মূল কথা হইলো-
আপনি সবার থেকে সহানুভূতি চাইবেন, বেশি অধিকার চাইবেন, পূজার পরের দিন বিশ্রামের ছুটি চাইবেন, কিন্তু অণ্যের বেলায় বিন্দুমাত্র সহানুভূতি দেখাবেন না, এটা কেমন কথা?
খবরের সূত্র: https://bit.ly/38l8zNF