বাংলাদেশ: সরস্বতী পূজো নাকি লাভ জিহাদের হাতে খড়ি

বাংলাদেশ: সরস্বতী পূজো নাকি লাভ 
জিহাদের হাতে খড়ি

Image result for নদী
বাংলাদেশ: সরস্বতী পূজো নাকি লাভ জিহাদের হাতে খড়ি
কলকাতায় সরস্বতী পূজোকে ডাকা হয় বাঙালীর ভ্যালেন্টাইন ডে নামে। কলকাতার সাহিত্য থেকে পাই, এ দিন সদ্য কৈশোরপ্রাপ্তা মেয়েটি এক প্যাচে শাড়ি গায়ে দিয়ে, মাথায় ফুল ঝুলিয়ে স্কুলে যায় দেবী সরস্বতীর আরাধণা করতে। সারাক্ষণ স্কুল ড্রেস আর স্কুলের সাজ ছেড়ে ঐ একদিনের অপরূপ সাজ সবকিছুকে উল্টেপাল্টে দেয়। সদ্য তরুণ কোন ছেলের মনে ধরে বসে থাকে। ব্যস শুরু হয়ে গেলো প্রেম। এ কারণে সরস্বতী পূজোকে বলে হয় বাঙালীর ভালেন্টাইন ডে বা প্রেমের হাতে খড়ি নামে ডাকা হয়।
কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গে সরস্বতী পূজো বাঙালী হিন্দু তরুণ শ্রেণীর জন্য আশির্বাদ হলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিষয়টি কিন্তু সে রকম নয়। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা সংখ্যাগুরু হওয়ায় ঐ দিন প্রেমভালোবাসাটা নাহয় নিজেদের মধ্যে হয়, কিন্তু বাংলাদেশে সেটি কার মধ্যে হয়, তার কোন হিসেব আছে কি ?
হিন্দু মেয়েটি যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফরমাল ড্রেস ছেড়ে শাড়ি পড়ে, কপালে টিপ দেয়, তখন তার দিকে কত মুসলমানের চোখ পড়ে একবার ভেবে দেখেছেন ? সেখানে হিন্দু ছেলে আর হিন্দু মেয়ে কয়টি ? ১০টি হিন্দু মেয়ের বিপরীতে মুসলিম ছেলে ৯০টি, আর কোন মুসলিম ছেলে যদি একবার কোন হিন্দু মেয়েকে পছন্দ করেই ফেলে তবে সেখানে হাত দেবার ক্ষমতা কোন হিন্দু ছেলের আছে ?
অতি সাম্প্রতিক সময়ে সরস্বতী পূজো বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে আমাদের হিন্দুদের মধ্যে কয়েকটি গ্রুপ কাজ করছে। বাহ্যিকদৃষ্টিতে মহৎ হিন্দুত্ববাদী কার্যক্রম। অনেক মুসলিমকে পর্যন্ত পূজোর মণ্ডপে উপস্থিত করতে পারছেন। কিন্তু আলটিমেট রেজাল্ট কি ? কতজন ইসলাম ত্যাগ করে হিন্দু প্রেমী হয়েছে, আর কতজন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়েছে, একবার তুলনা করে দেখেছেন ? দিনে দিনে মুসলমানদের জিহাদী মনোভাব আর হিন্দু বিদ্বেষ তো বাড়ছেই।
তাছাড়া আমাদের মধ্যে যে গ্রুপগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরস্বতীপূজো ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে, সবার যে হিন্দুত্ববাদী উদ্দেশ্যে আছে, সেটা আমার মনে হয় না। এর মধ্যে একটি বড় গ্রুপ আছে যাদের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। কিছু থাকে এই উপলক্ষ করে ফূর্তি করে। আবার কিছু আছে, এই উপলক্ষ্য করে টাকা মেরে খায়।
এই যখন পেছনের কথিত হিন্দুত্ববাদীদের উদ্দেশ্য, তখন আমরা সাধারণ হিন্দুরা এর দ্বারা কি উপকার পেতে পারি ?
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজোর নাম দিয়ে আমরা লোক জড়ো করছি, এটা ঠিক, কিন্তু আমাদের মেয়েগুলো সাজিয়ে-গুছিয়ে কি মুসলমান জিহাদীদের খাবার বানিয়ে দিচ্ছি না ??
আজকাল শিক্ষিত হিন্দু নারীদের এক বড় অংশ মুসলমানদের ঘরে যাচ্ছে, আমার তো মনে হয় এর একটা বড় কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরস্বতী পূজোর গণপ্রচলন। এই দিনটিতেই লাভ জিহাদের হাতেখড়ি হচ্ছে, হিন্দু মেয়েগুলো মুসলমানদের চোখে পড়ে যাচ্ছে, আর পরবর্তীতে ঘটছে ধর্মান্তরণ।
আমার কাছে এবারের কয়েক ডজন’ ছবি আছে, যেখানে সরস্বতী পূজার নাম করে হিন্দু মেয়েগুলো মুসলমান সহপাঠীর কোলে উঠে বসেছে। এই সুন্দরী হিন্দু মেয়েটি তো কোন হিন্দু পুরুষের ঘরে যাওয়ার কথা ছিলো, অথচ সে যাচ্ছে মুসলমান পুরুষের ঘরে। দুইদিন সংসার করে হিজাব পড়ে, নামাজ-রোজা করে সহী মুসলিম হয়ে উঠছে। মাঝে মাঝে হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধেও পোস্ট দিচ্ছে। অপরদিকে হিন্দু পুরুষটি হস্তশিল্প করতে করতে পরিণত হচ্ছে অক্ষম পুরুষে।
আসলে আপনারা যতই বলেন, “লাভ জিহাদ বন্ধ করতে হবে”,
যতই লাভ জিহাদের ক্ষতিকর দিক প্রচার করেন, যতই বলেন, “এরমাধ্যমে হিন্দু জাতি বিলুপ্ত হবে”,
লাভ হবে না। কারণ আপনারাই লাভ জিহাদের উপলক্ষ তৈরী করে দেন। ভারতের রাজস্থানে দশেরা উৎসবের সময়, লাঠিখেলার সময় হিন্দু নারীরা অপরুপ সাজে সেজে আসে। ঐ সময় খুব কড়াকড়ি থাকে, যেন কোন মতেই সেখানে কোন মুসলিম পুরুষ ঢুকতে না পারে। কারণ রাজস্থানের হিন্দু সমাজ জানে, ঐ সময় সেজে থাকা হিন্দুদের নারীদের ললুপ দৃষ্টি পড়ে যায় মুসলিম পুরুষদের, আর একবার দৃষ্টি পড়ে গেলে সেটা ফেরানো সাধ্য কার ?
ভারতে কতটা মুসলমান থাকে ? তারপরও সেখানে যদি এই ব্যবস্থা হয়, তাহলে যে বাংলাদেশী হিন্দুরা অস্তিত্ব সংকটে সর্বদা তারা কেন উল্টো হিন্দু নারীদের মুসলমানদের হাতে তুলে দিচ্ছে ? কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজোর নাম করে লাভ জিহাদের হাতে খড়ি করার সুযোগ দিচ্ছে ??
হিন্দুত্ববাদ ভালো, কিন্তু লোক দেখানো হিন্দুত্ববাদে যেন হিন্দুধর্ম বিলুপ্ত না হয়, সেটা খেয়াল রাখা জরুরী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্মুক্ত পূজো নয়, পূজো নিয়ে আসা হোক হিন্দুদের ধর্মালয় মন্দিরে, এটাই আামার প্রত্যাশা।