একটা ছেলে তার স্ত্রীকে হারিয়ে খুব হতাশ।

একটা ছেলে তার স্ত্রীকে হারিয়ে খুব 
হতাশ।

একটা ছেলে তার স্ত্রীকে হারিয়ে খুব হতাশ।
Image result for নদীতাকে কেউ বুদ্ধি দিলো, তুমি একটা বিমান হাইজ্যাকের নাটক ঘটাও, দেখবে ঐ ঘটনাটা মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পাবে। ঐ ঘটনা যখন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পাবে, তখন সবার সামনে তুমি বলতে পারবে, তুমি তোমার স্ত্রীকে আবার তোমার কাছে ফেরত চাও। দেখবে তোমার জীবনে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।
বুদ্ধিদাতার বুদ্ধি অনুসারে ছেলেটা কাজটা করে ফেললো। মুভি জগতের সাথে যুক্ত ছেলেটি জীবনটাকেই মুভির মত ভাবতো। তাই বুদ্ধিদাতার বুদ্ধি অনুসারে চলতে তার কষ্ট হলো না। কিন্তু কাজটা শেষে যখন ছেলেটা আসল কথা সবার সামনে বলতে যাবে, তার আগেই ছেলেটাকে ঐ বুদ্ধিদাতাই হত্যা করে ফেললো। কারণ ঐ বুদ্ধিদাতা চায় না, ঐ ছেলেটি কখন মিডিয়ার সামনে ফাঁস করুক, কে তার এই ‘বুদ্ধিদাতা’। মজার বিষয় হলো, এই ‘বু্দ্ধিদাতা’ ব্যক্তিটি সাধারণ কোন ব্যক্তি হতে পারে না। খুব স্বাভাবিক হচ্ছে, এই বুদ্ধিদাতা ব্যক্তিটি কোন গোয়েন্দা সংস্থার লোক। হয়ত ঐ ছেলেটি কখন কোন কারণে গ্রেফতার হয়েছিলো। গ্রেফতারের পর আইন-প্রশাসনের কাজেই ঐ ছেলেটির সাথে ঐ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তার মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরী হয়। সেই সম্পকটাকে কাজে লাগিয়ে ‘বুদ্ধিদাতা’ ঐ ছেলেটিকে ঐ পথে নিয়ে যায়।
এখন বলতে পারেন, বুদ্ধিদাতা কেন ঐ ছেলেটিকে এই বু্দ্ধি দিলো ?
গোয়েন্দা সংস্থার লোকদের সাথে এমন অনেক ‘চিকি’ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক থাকে। এই সম্পর্কটা অনেকভাবে তৈরী হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, কোন কারণে হয়ত ঐ লোকটা কোনদিন গ্রেফতার হয়েছিলো। হয়ত তারপর আইন-প্রশাসনের সহযোগীতা করতে গিয়েই ঐ লোকটার সাথে গোয়েন্দা সংস্থার লোকটার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একদিন গোয়েন্দা সংস্থার উর্ধ্বতন মিটিং এ সকল কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, উপরের মহল থেকে নির্দেশ আছে, অমুক তারিখে একটা ঘটনা ঘটায় মিডিয়া বাক নিতে হবে, তোমাদের হাতে কোন ‘চিকি’ আছে ? একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা দাড়িয়ে বললো, স্যার আমার হাতে একটা ‘চিকি’ আছে। টু-দ্য পয়েন্টে মিলে যাবে। যেমন কথা তেমন কাজ। যদিও ঐ ছেলের উদ্দেশ্য ছিলো ভিন্ন, কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থার লোক ঐ ছেলে দিয়ে ঘটনা ঘটিয়ে নিজের উদ্দেশ্য সফল করে নিলো। এ ধরনের ঘটনাকে বলে ‘ফলস ফ্ল্যাগ’।
ইউরোপে যখন প্রচুর পরিমাণে মুসলিম শরনার্থী প্রবেশ করতে থাকে, তখন অনেক রাজনৈতিক দল এ ঘটনা ঘটায়। কথিত মুসলিম হামলাকারী দিয়ে ঘটনা ঘটিয়ে অভিবাসী বা শরনার্থী বিরোধী সেন্টিমেন্ট তৈরী করে। এবং সেই সেন্টিমেন্টের পক্ষে বলে নির্বাচনে জয়লাভ করে। প্রায় সবগুলো ঘটনায় দেখা যায়, হামলাকারী আগেও গ্রেফতার হয়েছিলো এবং বেশিকিছুদিন পুলিশ হেফাজতে ছিলো। পুলিশ হেফাজত থেকে বের হয়েই সে ঘটনা ঘটিয়ে দিয়েছে। কিছুদিন আগে কাশ্মীরে পুলওয়ামা অ্যাটাকের ক্ষেত্রে একই ধরনের ঘটনা। অর্থাৎ হামলাকারী আগেও গ্রেফতার হয় এবং অনেকদিন পুলিশ হেফাজতে ছিলো। বলাবাহুল্য, নির্বাচনের মাত্র ৪ মাস আগে পুলওয়ামা অ্যাটাকের ঘটনা ঘটিয়ে মোদিও পাকিস্তানবিরোধী চেতনা সৃষ্টি করে নিজের ভোট বাড়াতে চাইছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে কথিত বিমান ছিনতাইকারীও এক সময় গ্রেফতার হয়ে পুলিশ হেফাজতে ছিলো। খুব স্বাভাবিক তাকে দিয়েও মিডিয়ায় বাক নিতে চেয়েছে সরকার।
এজন্য আমি সব সময় বলি-
কোন ঘটনা ঘটলে সেই ঘটনার দিকে তাকাইও না, সেই ঘটনা দিয়ে কে সুবিধা নিতে চাইছে সেটার দিকে তাকাও। তাহলেই ঘটনার গোমর ফাঁস হয়ে যাবে। পুরান ঢাকার অগ্নিকাণ্ডের পর আমি বলেছিলাম, এ ঘটনার দ্বারা কে কি সুবিধা নিতে চাইছে সেটার দিকে তাকানো উচিত। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্য বিশেষ করে প্রডাকশনের কাচামালের উপর হাত দিতে চাইছে একটি মহল। সকল কাচামালকে কেমিকেল ট্যাগ দিয়ে এলাকাছাড়া করতে চাইছে উদ্দেশ্য পুরান ঢাকা থেকে সকল বাণিজ্য উচ্ছেদ করে এ এলাকাকে পর্যটন এলাকা বানানো।
তারই ধারাবাহিকতায় আজকে মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দিয়েছে, আগামী ৩ দিন পর পুরান ঢাকায় বাড়িতে বাড়িতে সে গোডাউন তালাশ করবে, যেখানে গোডাউন পাবে, সেই বাড়ির মালিকের গ্যাস-পানি-বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিবে। আমার মনে হয়, ঐ এলাকার মানুষ একটা ভুল করছে। দাহ্য কেমিকেল সরাবে ভালো কথা, কিন্তু সেটা জায়েজ করার জন্য ১৫০ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করতে হবে কেন (এলাকাবাসীর দাবি নিহত হয়েছে ১৫০ জন)? এটা কি স্থানান্তরে ভালো পরিবেশ তৈরী করে, জনগণকে সাথে নিয়ে করা যেতো না ??
আমার মনে হয়, সাঈদ খোকন কেন ১৫০ জন নিরাপরাধ মানুষ হত্যা করলো সেটার আগে বিচার আগে উচিত। পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের উচিত খুনি সাঈদ খোকন ও তার বাহিনীকে পুরান ঢাকায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করা এবং সাইদ খোকনের ফাসির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা।