বেজমেন্টে ছিলো বিশাল কেমিকেলের গোডাউন ।

বেজমেন্টে ছিলো বিশাল কেমিকেলের গোডাউন ।
Image result for নদী
বেজমেন্টে ছিলো বিশাল কেমিকেলের গোডাউন ।
যদি বিষ্ফোরণ হতো, তবে পুরো এলাকা উড়ে যেতো । কত হাজার মানুষ মারা পড়তো, তার হিসেব থাকতো না।
ঐ এলাকার অনেক মানুষ জানে না, বেজমেন্টে এত বড় কেমিকেল গোডাউন ছিলো।
কিন্তু ঐ বাড়ির সামনে এসেই সিলিন্ডার বোঝাই গাড়িটি বিষ্ফোরণ ঘটলো ?
উল্টাভাবে যদি চিন্তা করি, তবে তারাই বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে যারা জানতো বাড়ির নিচে বিশাল কেমিকেল গোডাউন আছে ! কারণ একবার যদি বেইজমেন্ট পর্যন্ত আগুন পৌছায় তবে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে! যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের উদ্দেশ্য ছিলো বড় ধরনের ক্যাজুয়ালিটি করা।
পাঠক! সময়টা ছিলো ২০শে ফেব্রুয়ারী, রাত ১০টা বেজে ৩০ মিনিট। আর মাত্র দেড় ঘন্টা পর ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহর। যারা পুরান ঢাকায় গিয়ে অভ্যস্ত, তারা বুঝবেন, ঐ সময় ঐ এলাকায় সারা ঢাকা শহর থেকে তরুণ প্রজন্ম একত্রিত হয় মজাদার খাবার খেতে। রাস্তায় রাস্তায় থাকে প্রচণ্ড ভীড়। সারা ঢাকা শহরের রেস্ট্রুরেন্ট যখন বন্ধ, তখন পুরান ঢাকায় সারা রাত খোলা বিরিয়ানীর দোকান। এমনিতেই প্রতিরাতে ই ভীড় থাকে, কিন্তু সেটা যদি থাকে একুশে ফেব্রুয়ারীর প্রথম প্রহর, তাহলে তো কথাই নেই। তাই কেউ যদি ব্যাপক হতাহত চায়, তবে সময়টা একদম উপযুক্ত।
আর তাছাড়া, সরকার যখন কেমিকেল কারাখানা বিরুদ্ধে একশনে যাবে বলে ঘোষণা দিলো, তখনই কেন এতবড় ঘটনা, একদম কেমিকেল গোডাউনের সামনে গিয়ে, জনপরিপূর্ণ রাতে ঘটে গেলো ?
এবার আসুন,
পুরো ঘটনায় খেলোয়ার কয়জন, একটু জেনে নেই:
প্রথম খেলোয়াড়: মিডিয়া। মুখে বলা হচ্ছে গণমাধ্যম বা জনগণের মাধ্যম। কিন্তু এরা সব সময় বিদেশীদের মুখপাত্র হয়। মিডিয়া রুমের মূল মূল সাংবাদিকরা ইহুদীবাদী সংস্থা পেন ইন্টারন্যাশনাল থেকে ট্রেনিং করা।
দ্বিতীয় খেলোয়াড় : সরকার। যেদিকে ঝোল পায়, সেদিকে ভাতের নলা ধরে। কমিশন খাওয়া তাদের পেশা। বিদেশীদের বড় কমিশনের সুযোগ পেলে মিস করবে না।
তৃতীয় খেলোয়াড় : পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী মহল।
চতুর্থ খেলোয়াড় : আমজনতা। হুজুকে বিশ্বাসী। বিদেশীদের এজেন্ট হয়ে মিডিয়া পোড়াদের আত্মীয়ের কান্না বার বার প্রচার করে ইমোশন তৈরী করে। আর সেই ইমোশন দিয়ে জনগণের কনসাস মাইন্ড আড়াল হয়ে তথ্য সাব-কনসাসে প্রবেশ করে তথ্য “হটাও কেমিকেল কারাখানা। সাইকোলোজির ভাষায় যাকে বলে মাইন্ড প্রোগ্রামিং। উপরে এত বড় বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটে গেলো, কিন্তু নিচে কেমিকেল কারখানায় আগুন পৌছালো না, যারা বেইজমেন্টে এত বড় কেমিকেল গোডাউন বানিয়েছে তাদের তারিফ না করে পারা যায় না।
এবার আসুন,
মিডিয়া কি চাচ্ছে ?
মিডিয়া চাইছে জনগণের হুজুর তৈরী করে কেমিকেল ব্যবসাসহ পুরো পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্যে একটা উল্টাপাল্টা করা। যেহেতু পুরান ঢাকার ব্যবসা বাণিজ্যের এক বড় অংশ যেহেতু কাচামাল থেকে প্রস্তুত এবং সেই কাচামাল অবশ্যই কোন না কোন কেমিকেল দিয়ে বানানো, তাই সেই কেমিকেল ট্যাগ লাগিয়ে পুরান ঢাকার থেকে ব্যবসা বাণিজ্য উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা তাদের। আলটিমেটলি পুরান ঢাকার বিশাল ব্যবসা বাণিজ্যে একটা ধস নামবে, যার সুযোগে বিদেশীরা ঢুকবে। শুধু কেমিকেল নয়, রং, প্রশাধনী, গৃহস্থলীর অনেক মালামাল ‘কেমিকেল’ শব্দ ব্যবহার করে পুরান ঢাকা থেকে উচ্ছেদ করা হবে।
জনগণের কি চাওয়া উচিত ?
যদি ক্ষতিকারক বা দাহ্য পদার্থ হয়, তবে সেটা সরিয়ে নেয়াই উত্তম। কিন্তু সেটা হুজুগে মেতে উচ্ছেদ করে নয়। তাদের সঠিক উপায়ে পুনর্বাসন করা, যেন তাদের ব্যবসার কোন ক্ষতি না হয় এবং সেই সুযোগে বিদেশীরা ঢুকতে না পারে। মনে রাখতে হবে, সকল কাচামাল তৈরী করতে কোন না কোন কেমিকেল লাগে। তাই গণহারে সবাইকে কেমিকেল ট্যাগ লাগিয়ে পুরো ব্যবসা-বাণিজ্যকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। চামড়া শিল্পকে যেভাবে তাড়াহুড়া করে সাভার পাঠিয়ে দিয়ে তাদের পথে বসিয়ে দেয়া হয়েছে সেটা যেন পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে না হয়। আগে ঢাকার বাইরে তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে অবস্থান তৈরী হবে, এরপর তারা পুরান ঢাকা ত্যাগ করবে।
তাছাড়া, পুরো ঘটনাটি সন্দেহজনক এবং স্যাবোটেজ হওয়ার সম্ভবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তাই যারা এই ঘটনা থেকে ফায়দা নিতে চায়, তাদের চিহ্নিত করে মূল ঘটনার কারা ঘটিয়েছে তা বের করে নিয়ে আসতে জনগণের দাবী তোলা উচিত। কারণ স্যাবোটেজকে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দিবেন, এতগুলো মানুষের জীবন নিয়ে ব্যবসা করবেন, এটা কখনই মেনে নেয়া যায় না।