প্রথম আলোতে এক সাক্ষাৎকারে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলছে, আওয়ামী সরকার নাকি ব্যবসা বান্ধব।

প্রথম আলোতে এক সাক্ষাৎকারে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলছে, আওয়ামী সরকার নাকি ব্যবসা বান্ধব। 
প্রথম আলোতে এক সাক্ষাৎকারে নতুন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলছে, আওয়ামী সরকার নাকি ব্যবসা বান্ধব। (https://bit.ly/2GTJDly)
Image result for নদীসরি, টিপু মুনসি আপনার কথা মানতে পারলাম না।
আওয়ামী সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার না, ব্যবসা খেকো সরকার।
কারো কোন ব্যবসা দেখলেই সেটা খেয়ে ফেলাই আওয়ামী সরকারের কাজ।
টিপু মুনসি নিজেই তো এক সময় বিজিএমইএর সভাপতি ছিলো। সে নিজের মুখেই বলুক, বর্তমানে গার্মেন্টস শিল্পের অবস্থা কি ?
উল্লেখ্য, দৈনিক জনকণ্ঠে গত ৬ই জানুয়ারী, ২০১৮ তারিখে একটি খবরে প্রকাশ, এক সেমিনারে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাছির বলেছিলো, চার বছরে ১২০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে”।(https://bit.ly/2XcxSfY)\
যে গার্মেন্টস ব্যবসার মাধ্যমে এত এত বৈদেশিক মুদ্রা। যে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ নিয়ে শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে গর্ববোধ করে, সেই গার্মেন্টস সেক্টরের কেন এত দুর্দশা ? সরকার যদি ব্যবসা বান্ধবই হয় তবে তো এমন হওয়ার কথা ছিলো না।
ব্যবসা খেকো আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসে সর্বপ্রথম ধ্বংস করেছিলো দুটি ব্যবসা-
১) রিয়েল স্টেট
২) শেয়ার মার্কেট
নতুন করে সরকারী অব্যবস্থাপনার কারণে নষ্ট হলো ট্যানারি বা চামড়া শিল্প। সরকার যদিই ব্যবসা বান্ধবই হতো, তবে এমনটা হলো কেন ?
কোন ব্যবসায়ী ব্যবসা বিস্তৃতি করতে না পারার মূল কারণ, ব্যাংক ঋণ না পাওয়া। অনেক সৎ ও দক্ষ ব্যবসায়ী আওয়ামী সরকারের আমলে ঋণ পায়নি, শুধু আওয়ামীলীগ না করার কারণে। অপরদিকে শুধুমাত্র আওয়ামীলীগ করার কারণে অনেক নব্য গজিয়ে ওঠা ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে মিথ্যা বলে কোটি কোটি টাকা নিয়ে লোপাট করেছে, যার দরুণ আজকে ব্যাংকগুলো এক মূলধন সংকটে ভুগছে।
অজ্ঞাত কারণে সরকার দেশের গ্যাস উত্তোলন করে না। কথিত আছে, বাংলাদেশের গ্যাসে লেয়ার এমন অবস্থায় আছে যে, বাংলাদেশে থেকে গ্যাস উত্তোলন করলে ভারতীয় লেয়ারের গ্যাস বাংলাদেশ দিয়ে বের হয়ে যাবে। অথচ এই গ্যাসের অভাবে বন্ধ হয়ে আছে লক্ষ লক্ষ কারখানা। (https://bit.ly/2TTd8I1)
ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা বিভিন্ন ব্যবসাকে ধ্বংস করা ছিলো আওয়ামী সরকারের ওয়ান-টু’র কাজ। এই তো কিছুদিন আগে বাংলাদেশের ডেইরি শিল্পের পেছনে লাগলো সরকার। সরকার শিক্ষিত বেকারদের চাকুরী দিতে পারে না। তাই তারা মা-বাপের জমানো টাকা দিয়ে নামছে ডেইলি ফার্ম ব্যবসায়। লক্ষ লক্ষ বেকারের কর্মসংস্থান হচ্ছে এই খাতে। কিন্তু হঠাৎ করে বিদেশী সম্রাজ্যবাদীদের অঙ্গসংগঠন ফাউ (FAO) এর টাকায় বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এক জরিপে দাবি করে, বাংলাদেশের গরুর দুধে নাকি তারা এন্টিবায়োটিক আর শিসা পাইছে। বিষয়টি প্রচারের দায়িত্ব নেয় সিআইএ’র মুখপাত্র দৈনিক প্রথম আলো। মূলত এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশে স্বপ্রণোদিত হয়ে গড়ে ওঠা ডেইরি শিল্পকে ধ্বংস করে বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি করে নিয়ে আসা। (https://bit.ly/2IrV0njhttps://bit.ly/2TXOwOn)
শুধু এবারই না, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের ডেইরি ফার্মগুলোর পেছনে লেগেছে সরকার প্রশাসন। আবাসিক এলাকা থেকে ডেইরি ফার্ম সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেয় প্রশাসন (https://bit.ly/2V8GC4R)। অথচ আবাসিক এলাকায় এসব ফার্ম আছে বলে আবাসিক এলাকার মানুষ গরুর দুর্ধ খেতে পারছে, নয়ত তাদেরকে গুড়া দুধ পানিতে গুলিয়ে খেতে হতো। উল্লেখ্য বিভিন্ন এলাকায় এইসব ফার্ম গড়ে উঠায়, দুধের পাশাপাশি, কোরবানীর ঈদে গরু সরবরাহ অনেক সহজ হয়ে গেছে, ফলে ভারত থেকে গরু আমদানি করা লাগছে না। কিন্তু এই ব্যবসা খেকো সরকার কোন সম্ভবনাময় শিল্প দেখলেই সেটাকে কিভাবে করে কোমড়ভাঙ্গা যায়, সেটা নিয়ে থিসিস শুরু করে, যা দেখা যাচ্ছে এবার ডেইরি ফার্মের বেলায়।
এবার আসুন, দোকান-মার্কেট ব্যবসার দিকে তাকাই। সরকারের বাপের টাকা না, নিজের টাকা দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তোলা ব্যবসা। কিন্তু ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল এর দাপটে ব্যবসা সব লাটে উঠছে। বছরের পর বছর রাস্তা কাটা, মার্কেটে বেচা বিক্রি নাই। বিক্রি ছাড়া দোকান ভাড়া আর স্ট্যাফ খরচ দিয়ে কত দিন লসে চলতে পারে ? ফ্লাইওভার-মেট্রোরেলের নির্মাণের জন্য সারা ঢাকা শহরে অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়, এসব স্থাপনা তৈরী হওয়ার পর গাড়ি আর নিচ দিয়ে যায় না, উপর দিয়ে যায়। তাই অনেক চালু দোকান কাস্টমারের অভাবে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। ফ্লাইওভার মেট্রোরেল করতে গিয়ে তো সরকার আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে, কিন্তু কত লোকের পেটে লাত্থি পড়ছে তার হিসেব কেউ রেখেছে?
কোচিং-কে যদি আমরা এক ধরনের শিল্প হিসেবে দেখি, তবে সেটাও কিন্তু বন্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ব্যবসা খেকো আওয়ামী সরকার। শিক্ষিত যুবকরা নিজের পকেটের টাকা জমিয়ে পাড়ার অলিতে গলিতে গড়ে তুলেছে কোচিং সেন্টার, যা আজকে দেশের স্কুল-কলেজের প্যারাল্যাল হিসেবে কাজ করছে। কিন্তু সরকার চায় না, সরকারী বইয়ের বাইরে কোন ছাত্র ১ অক্ষর বেশি জানুক। তাই এর বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র। নানান মিথ্যা ছুতা-নাতা দিয়ে বন্ধ করে দিচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলো।
আপনাদেরকে আগে থেকে সতর্ক করে দিচ্ছি, বাংলাদেশের চিংড়ী শিল্প ধংষ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে সরকার। ভেনামি চিংড়ী নামক এক ক্ষতিকারক চিংড়ী এনে বাংলাদেশের চিংড়ি সম্পূর্ণ লাটে উঠার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একটি ইহুদীবাদী বিদেশী সংস্থা ‘উইনরক ইন্টারন্যাশনাল এর টাকা খেয়ে এর সাথে যুক্ত হয়েছে মৎস ও প্রাণীপ্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু। (https://bit.ly/2U62AFm)
উল্লেখ্য ২০১৩ সালেও একবার ভেনামি চিংড়ী আসার কথা ছিলো বাংলাদেশে। কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক বেশি হওয়ায় এই বিদেশী চিংড়িটি আর বাংলাদেশে আসা হয়নি। এর কারণ, ভেনামি চিংড়ি আমদানির পর প্রথমেই যে সমস্যাটি দেখা দিবে তা হলো ব্রুড চিংড়ি অনুপ্রবেশের মাধ্যমে আমাদের দেশীয় চিংড়িতে ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ। গত কয়েক দশকের ইতিহাস থেকে জানা যায়, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে ব্রুড চিংড়ি অনুপ্রবেশের কারণে ভাইরাসজনিত রোগ বিশেষ করে 'হোয়াইট স্পট ডিজিস' ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। একটু অসতর্কতার কারণে একবার রোগের রাস্তা খুলে গেলে দেশীয় বাগদা চিংড়ির অপার সম্ভাবনা চিরতরে বিনষ্ট হবে। (https://bit.ly/2GAtXV9)
উৎপাদন বন্ধ করো, বেকারত্ব বৃদ্ধি করো।
বিদেশ থেকে ঋণ আনো, নিজের পকেট ভর্তি করো।
অনুৎপাদন খাতে ব্যয় করো, জীবনব্যয় বৃদ্ধি করো,
বেকারত্ব বৃদ্ধি করো, দারিদ্রতার চাষ করো।
বিদেশী কলকারাখানা স্থাপন করো, নামমাত্র মজুরিতে শ্রমিক নিয়োগ করো।
স্ব-নির্ভর নয়, স্বাধীন দেশে দাসত্ব জীবন গড়ো।
এটাই হলো কর্পোরেটদের শাসন বা কর্পোরেটোক্রেসি, এক সময় নীলকর এই কাজটি করেছিলো, এখন নব্য উপায়ে, নতুন সিস্টেমে তার বাস্তবায়ন চলছে। সময় পাল্টেছে মীর জাফরদের স্থানটি দখল করেছে সরকার, তবে জনগণ এখনও অবুজ। নতুন ষড়যন্ত্র বুঝতে তাদের আরো সময় প্রয়োজন।