গরীবের জুয়ারী অর্থমন্ত্রী
এবার নতুন অর্থমন্ত্রী হয়েছে আ.হ.ম মুস্তফা কামাল। মুস্তফা কামাল সাহেব এসেই ঘোষণা দিয়েছেন, ৩ লক্ষ কোটি টাকা খাজনা আদায় করবেন (https://bit.ly/2sfqgec)। শুনেছি তিনি একজন সিএ। দেশের অর্থনীতি বোঝার জন্য সিএ পাশ করা লোকের দরকার আছে, কিন্তু খাজনা আদায়ের জন্য সিএ পাশ করা লোকের দরকার নাই। দরকার ভালোমাপের একজন কোতোয়ালের।
ছোট বেলায় কবিতা পড়েছিলাম, “ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো বর্গী এল দেশে, বুলবুলিতে ধান খেয়েছে খাজনা দেব কিসে।। ধান ফুরল, পান ফুরল খাজনার উপায় কি? আর ক'টা দিন সবুর কর রসুন বুনেছি।”
ছোটবেলার কবিতা থেকে শিখেছিলাম, খাজনার দেয়ার আগে রসুন বুনাতে হবে। অর্থাৎ উৎপাদন করতে হবে। যদি উৎপাদনই না হয় তবে খাজনা আসবে কোথা থেকে ?
একজন অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের আগে উচিত ছিলো কিভাবে দেশের উৎপাদন বা প্রডাকশন বানানো যায় সেদিকে খেয়াল দেয়া। কিভাবে বিদেশী পণ্য আমদানি বন্ধ করে, তা দেশে উৎপাদন করা যায়, কিভাবে রফতানি বাজার আরো সক্রিয় করা যায়, কিভাবে অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হ্রাস করে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো যায় সেদিকে খেয়াল দেয়া। কিন্তু আশ্চর্য ঘোষণা আসলো ঠিক তার উল্টো, মানে খাজনা আদায় নিয়ে।
একজন অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের আগে উচিত ছিলো কিভাবে দেশের উৎপাদন বা প্রডাকশন বানানো যায় সেদিকে খেয়াল দেয়া। কিভাবে বিদেশী পণ্য আমদানি বন্ধ করে, তা দেশে উৎপাদন করা যায়, কিভাবে রফতানি বাজার আরো সক্রিয় করা যায়, কিভাবে অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হ্রাস করে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো যায় সেদিকে খেয়াল দেয়া। কিন্তু আশ্চর্য ঘোষণা আসলো ঠিক তার উল্টো, মানে খাজনা আদায় নিয়ে।
মুস্তফা কামাল নামটি কারো অপরিচিত হয়। তিনি গতবারের পরিকল্পনামন্ত্রী। তবে এবারের টার্মে তাকে করা হয়েছে অর্থমন্ত্রী হিসেবে। তবে বাংলাদেশে খেলামত্ত জনগণের কাছে মুস্তফা কামাল বেশি পরিচিত বিপিএল ক্লাব কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মালিক (যদিও প্রদর্শন করা হয় তার মেয়েকে) হিসেবে। সত্যিই বলতে বিপিএল খেলা দেখলে চোখ ছানাবড়া হতে হয়। বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর হয়ে খেলতে আসে উচু ভাড়ার প্লেয়াররা। ডেভিড ওয়ার্নার, এবি ডি ভিলিয়ার্স, শহীদ আফ্রিদী, স্টিভ স্মিথ, ড্যারেন ব্রাভো বা ক্রিস গেইলের মত প্লেয়ারদের ভাড়া করে আনা হয় কোটি কোটি টাকা খরচ করে। বাংলাদেশের মত রাষ্ট্র যেখানে ২১% শতাংশ মানুষ চরম শ্রেণীর দরিদ্র, ৫ কোটি শিক্ষিত বেকার, সেখানের অর্থমন্ত্রীর ক্লাব কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে শহীদ আফ্রিদী, ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা দিয়ে এভিন লুইস, ১ কোটি টাকা দিয়ে স্টিভ স্মিথ আর ১ কোটি টাকা ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে থিসেরা পেররাকে কিনে আসে মজমা করার জন্য (https://bit.ly/2C8aF4Q)। একজন অর্থমন্ত্রীর জন্য এ ধরনের অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় কতটুকু গ্রহণযোগ্য হতে পারে ? শুধু কি তাই, এই বিপিএলের কারণে পুরো দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে জুয়ার আসর। এমন কোন দোকান, ক্লাব, মেস, হোস্টেল নাই যেখানে জুড়ার আসর বসছে না। জুয়া খেলে মানুষ হচ্ছে সর্বস্বান্ত্ব, জুয়ার কারণে হচ্ছে খুন, ঘটছে আত্মহত্যা, জুয়ার টাকা না পেয়ে বাবা-মাকে আঘাত করছে সন্তান, টাকা না পেয়ে শেষে নিজের স্ত্রীকে তুলছে জুয়ার বাজিতে। আর বড় বড় জুয়ায় পেছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে মুস্তফা কামালদের ক্লাবগুলো।
বাংলাদেশের মত রাষ্ট্রে বিপিএল’র মত বিরাট অপচয় দেশের জন্য যে কত বড় ক্ষতি, সেটা বোঝার দরকার আছে। শত শত কোটি টাকা খরচ করে বিদেশী প্লেয়ার কিনে আনছে ক্লাবগুলো। সেই টাকা উঠাতে দিচ্ছে বিজ্ঞাপন। দেশ-বিদেশী কোম্পানিগুলো সেই বিজ্ঞাপনের মূল পরিশোধ করছে ঠিকই, কিন্তু তার বহুগুন তুলে নিচ্ছে জনগণের পকেট থেকে। বিষয়টা অনেকটা ফুটপাতের দাড়িয়ে ক্যানভাসের মজাদার কথা শোনার মত। একদিকে তাদের চটকদার কথা শুনবেন, পেছনে তাদের লোকই আপনার পকেট মেরে দেবে।
গতবারের অর্থমন্ত্রী জুয়ারী ছিলো না, কিন্তু তারপরও রিজার্ভে জনগনের কষ্টে জমানো অর্থের ৮১ মিলিয়ন ডলার চলে গিয়েছিলো ফিলিপাইনের জুয়ার কোটে । আর এবার অর্থমন্ত্রী বানানো হলো পাক্কা বিপিএল জুয়ারীকে। এবার রিজার্ভের বাকি টাকাগুলো থাকবে তো ?
গতবারের অর্থমন্ত্রী জুয়ারী ছিলো না, কিন্তু তারপরও রিজার্ভে জনগনের কষ্টে জমানো অর্থের ৮১ মিলিয়ন ডলার চলে গিয়েছিলো ফিলিপাইনের জুয়ার কোটে । আর এবার অর্থমন্ত্রী বানানো হলো পাক্কা বিপিএল জুয়ারীকে। এবার রিজার্ভের বাকি টাকাগুলো থাকবে তো ?