এতদিন যে আজগুবি তথ্য দিয়ে করোনা ভাইরাসকে সুপার পাওয়ার বলে প্রচার করা হচ্ছিলো, সেগুলো ধিরে ধিরে ফাঁস হচ্ছে।

t

Sl4n cpeonMasodyreds 
এতদিন যে আজগুবি তথ্য দিয়ে করোনা ভাইরাসকে সুপার পাওয়ার বলে প্রচার করা হচ্ছিলো, সেগুলো ধিরে ধিরে ফাঁস হচ্ছে।
এ ধরনের এক আজগুবি প্রচার ছিলো – করোনা ভাইরাস দিয়ে নাকি মানুষ একাধিক বার আক্রমণের শিকার হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) নিজেই সেই প্রচারের নেতৃত্ব দিয়ে বলেছিলো-
মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নাকি দীর্ঘমেয়াদে করোনার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় না।
এমনকি সেই দাবী থেকে একধাপ এগিয়ে তারা এও দাবী করছিলো- মানুষের ইম্যুনিটি যে ভাইরাসের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকেই সুরক্ষা দেয় না, সেই ভাইরাসের বিপক্ষে কিভাবে হার্ড ইম্যুনিটি এচিভ হতে পারে?
কিন্তু এবার হু ও তার অনুসারীদের সেই আজগুবি দাবী নাকচ করে দিলো দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা। তারা নিশ্চিত হলো- করোনা কখনই মানুষকে দ্বিতীয় বার আক্রমণ করে না।
উল্লেখ্য, এর আগে দক্ষিণ কোরিয়াতে ২৭৭ জন রোগী পাওয়া যায়, যাদের দ্বিতীয়বার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তাদের এই বক্তব্যের পর বিশ্বজুড়ে অনেকে প্রচার করা শুরু করে, করোনা দ্বিতীয় বার হওয়ার সম্ভবনা আছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিজ্ঞানীরা দ্বিতীয়বার সেই সমস্ত অসুস্থ রোগীকে নিয়ে গবেষনা করে নিশ্চিত হয়, আসলে করোনা দ্বিতীয়বার হওয়ার কোন সম্ভবনা নেই।
আসলে দ্বিতীয়বার পিসিআর টেস্টে করোনা ধরা পরার মূল কারণ হচ্ছে-
মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করোনা ভাইরাসকে ডিটেক্ট করে সেগুলো ধ্বংস করে। কিন্তু মানুষের শরীরে করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন রকম থাকে। কিছু থাকে ক্ষতি করার যোগ্যতা সম্পন্ন করোনা ভাইরাস (actual particles), আর কিছু থাকে ক্ষতি করার যোগ্যতাহীন করোনা ভাইরাসের মৃতদেহ (harmless dead samples)। মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এত শক্তিশালী ও সূক্ষদর্শী যে, সেই পার্থক্য সে ধরতে পারে এবং ক্ষতিকরগুলো ধ্বংস করে, কিন্তু অক্ষতিকর মৃতদেহগুলোকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পিসিআর টেস্টের মেশিন সেই পার্থক্যটা ধরতে পারে না। অর্থাৎ শরীরে ক্ষতিকার ভাইরাসগুলো চলে যাওয়ার পর অ-ক্ষতিকর মৃতদেহগুলোকে চিহ্নিত করে এবং পজিটিভ বলে দাবী করতে থাকে। ফলে একটা মানুষ দৃশ্যত্ব সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও আবার যখন করোনা ভাইরাস টেস্ট করায় তখনও তার করোনা পজিটিভ দেখায়।
বিজ্ঞানীরা আরো বলে, এইচআইভি এবং চিকেনপক্সের মত ভাইরাসের মত কিছু ভাইরাস আছে, যা মানবকোষের নিউক্লিয়াস ভেদ করে থাকতে পারে এবং পুনরায় জাগ্রত হয়ে আক্রমণ করে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সেই যোগ্যতা নেই। এ ভাইরাসটি কোষের নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থান করে। ফলে করোনা ভাইরাস দীর্ঘমেয়াদে বা একাধিকবার আক্রমণ করার কোন সুযোগই নেই।
বিজ্ঞানীদের মতে, মৃত বা অপ্রয়োজনী ভাইরাসের টুকরাগুলো মানুষের শরীরে কয়েক মাস পর্যন্ত থাকতে পারে, যা ফলস পজিটিভ দেখাবে, যদিও ঐ ব্যক্তি সুস্থ হোক না কেন।
এদিকেও বিশ্ব সাস্থ্য সংস্থা পক্ষ থেকেও বিষয় স্বীকার করে নেয়া হয়েছে, দ্বিতীয়বার করোনায় পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি ঘটছিলো করোনা ভাইরাসের অ-ক্ষতিকর মৃতদেহের কারণেই।
তবে এই খবর পড়ে, আমার একটি কথা মনে হচ্ছে- কোরিয়ার বিজ্ঞানীদের এমন তথ্য তো পিসিআর টেস্টের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করলো। কারণ পিসিআর টেস্ট করে যে উপসর্গহীনদের এতদিন করোনায় আক্রান্ত বলা হচ্ছে, কিংবা দ্বিতীয়বার টেস্ট করে সুস্থ-অসুস্থ ঘোষণা করা হচ্ছে, সেটাও তো প্রশ্নবিদ্ধ হলো। কারণ পিসিআর তো করোনা ভাইরাসের ক্ষতিকর-অক্ষতিকর পার্থক্য করে না, অ-ক্ষতিকরগুলোকে ধরে, ফলে তখন পজিটিভ রেজাল্ট আসে। তাই উপসর্গহীন করোনা এবং সুস্থতার সংখ্যা কম, দুটোই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।