করোনা নিয়ে বাস্তব কিছু না পেয়ে, মিডিয়া এখন আতঙ্ক ছড়াতে বিভিন্ন ভুল-ভাল এ্যানালাইসিসসের আশ্রয় নিচ্ছে।
প্রথমেই বলি, ফিনানসিয়াল টাইমসে কিছু সাংবাদিক একটা অ্যানালাইসিস প্রকাশ করেছে। সেই অ্যানালাইসিস কতটা গ্রহণযোগ্যতা রাখে, সেটা পরের বিষয়। কিন্তু তাদের দাবী হলো, করোনায় মূল মৃতের সংখ্যা নাকি ৬০% বেশি। তাদের ৬০% বেশিকে আমাদের দেশের অনেক পত্রিকা ৬০ গুন বেশি লিখে নিউজ করে ফেলে এবং ফেসবুকে তাদের অনুসারীরা সেটা কপি করে ছড়াতে থাকে।
[আশা করি, আপনারা ৬০% বেশি (০.৬ গুন) এবং ৬০ গুন বেশির মধ্যে পার্থক্য বুঝেন।]
এবার আসি ফিনালসিয়াল টাইমের সে কথিত কলাবিজ্ঞানী অ্যানালাইসিস নিয়ে, যেখানে মূল মৃতের সংখ্যা শুধু ঐকিক নিয়মে ৬০% গুন বেশিতে বলে দাবী করা হয়েছে।
তারা এই হিসেব করার জন্য ১৪টা দেশ (যেখানে মোটামুটি করোনা বেশি মাত্রায় আঘাত করেছে),
সেখানে তারা দেখিয়েছে গড় মৃত্যুর হার ১ লক্ষ ২২ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু ঐ একই এলাকায় করোনায় সরকারীভাবে মৃতের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৭৭ হাজার। অর্থাৎ অতিরিক্ত যে ৪৫ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে, তা তারা গায়ের জোরে করোনায় মৃত্যু বলে দাবী করেছে। এরপর সেই অতিরিক্ত মৃত্যুকে তারা পার্সেন্টিজ করে দাবী করেছে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৬০% বেশি। এরপর তারা পুরো করোনায় মৃত্যুর হিসেবকে ঐকিক নিয়ম করে দাবী করেছে বর্তমান করোনায় মৃত্যু ২ লক্ষ ১ হাজার নয়, বরং ৩ লক্ষ ১৮ হাজার। (https://on.ft.com/35eAK0h)
কথা হলো, আমাদের দেশের কথা যদি আমরা চিন্তা করি, তবে দেখবো-
করোনায় নয় বরং মিডিয়ায় অতিরিক্ত করোনা ভীতি ছড়ানোর কারণে মানুষ যেভাবে ভয় পেয়েছে তাতে কিন্তু অনেক লোকের মৃত্যু হয়েছে। কেউ হয়ত অসুস্থ হয়েছে, তার কিছু চিকিৎসা সেবা লাগতো, কেউ তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। ডাক্তাররা কাছে আসেনি, পাড়াপ্রতিবেশী এমনকি আত্মীয় স্বজন কাছে আসেনি, রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। যুক্তরাজ্য এক পরিসংখ্যানে দেখিয়েছে তাদের এ ধরনের মৃত্যুর সংখ্যা সপ্তাহে ৩ হাজার। (https://archive.is/2eKCW)। এছাড়া আতঙ্ক বৃদ্ধির কারণে মানুষের হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগ বৃদ্ধি স্বাভাবিক। সেগুলোতেও মানুষের মৃত্যু হছে।
কথা হচ্ছে, এই যে মৃত্যু বৃদ্ধি, এর দায় কার ?
করোনা ভাইরাসের ? নাকি করোনা আতঙ্ক ছড়াতে ওস্তাদ মিডিয়ার??
ফিনানসিয়াল টাইমসের কিছু সাংবাদিক সেই মৃত্যুগুলোকে করোনার উপর চাপিয়ে দিয়ে এক ঢিলে দুই পাখি মারলো।
একদিকে তারা করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে যে ভয়ঙ্কর খারাপ কাজ করেছে তার দায় ভাইরাসের উপর চাপালো।
অন্যদিকে সেই অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে ফের আতঙ্ক তৈরীর চেষ্টা চালালো।
আর বাংলাদেশী সাংবাদিকরা আরো একধাপ এগিয়ে ৬০% অতিরিক্তকে ৬০ গুন বলে খবর করে পাবলিককে আরো ভয় দেখাতে চাইলো।
পুরোটাই একটা আতঙ্ক তৈরীর গেম, মিডিয়া যা তৈরী করে যাচ্ছে, আর তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।