আমি ব্যক্তিগতভাবে পিপিই নামক পোষাক পরার বিরুদ্ধে।
পিপিই পোষাক কতটুকু কোভিড-১৯ থেকে সেইফটি দিয়েছে, সেই বিষয়ে আমি তর্কে যেতে চাই না,
তবে আমার কথা হলো- এই পোষাকটির মধ্যে এক প্রকার ভীতি আছে।
হ্যা, আইসিইউ বা অপরেশন থিয়েটারে ডাক্তাররা বিভিন্ন পোষাক পরে, সেটা অন্য বিষয়,
কিন্তু সেখান থেকে বের হলেই খুলে রাখা দরকার।
আর সাধারণ জনসম্মুক্ষে পরাকে কখনই সাপোর্ট করি না।
বিশেষ করে গণহারে প্রশাসনসহ সর্বত্র এই পোষাক পরে ঘুরে বেড়ানো,
কিংবা এই পোষাক পরে লাশ জানাজা-দাফন করানো, মিডিয়ায় বার বার প্রচার,
এগুলোর মাধ্যমে এক প্রকার ভীতি ছড়ানো হচ্ছে বলে আমার কাছে মনে হয়।
আসলে একটা কথা আমাদের মনে রাখতে হবে,
কোভিড-১৯ কিন্তু দুনিয়াতে একমাত্র রোগ/সমস্যা না,
আরো অনেক রোগ/সমস্যা আছে।
সুইডেন কেন লকডাউন দেয়নি, এটা নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছে।
কিন্তু একবারে শুরু দিকে সুইডেনের যারা নীতিনির্ধারক তারা এ বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা করেছে,
তাদের অন্যতম বক্তব্য ছিলো, তারা এসব লকডাউন দিয়ে জাতিকে মানসিকভাবে দুর্বল বা ভীত করতে চায় না।
এই যে লকডাউন/সোশ্যাল ডিসটেন্সিং/পিপিই যাই বলেন,
এগুলো মধ্যে কিন্তু এক ধরনের ভীতি আছে।
এই যে আপনি পুরো একটি জাতিকে ভয় দেখালেন, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কি ?
অনেকে লকডাউনের অর্থনৈতিক ক্ষতি নিয়ে কথা বলছে,
না, শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি না, আমার মনে হয় এই করোনা ভীতির কারনে জাতির মানসিক যে ক্ষতি হয়েছে, তা অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে অনেক বেশি।
একটা জাতি বহু বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে এই ভয় দেখিয়ে।
ছোটবেলায় এইডসের একটা গান প্রচার হইতো টিভিতে,
শিরোনাম ছিলো- শোনো মানুষ !”
ছোটবেলায় সেই গানের সুর, কালোবিড়াল আর রোগীর একাকিত্বের ছবি দেখে আমি মানসিকভাবে অনেক ভেঙ্গে পড়েছিলাম। প্রতি রাতে আমার সেই কথাগুলো মনে করে ভয় লাগতো।
একডস কি তা বুঝতাম না, কিন্তু সেই বিজ্ঞাপনের ভয় আমাকে তাড়িয়ে বেড়াতো।
কথা হচ্ছে, রোগ শোক অনেক আছে এবং থাকবে।
কিন্তু সেটা নিয়ে ভয়ের চাষ করতে হবে কেন ?
মানুষ যখন ভয় পায়, তখন সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে,
এতে যে সে নানান শারীরিক অুসস্থতায় আক্রান্ত হতে পারে তাই নয়,
বরং যে সাহস দিয়ে একটি জাতি এগিয়ে, সেই সাহসকে কিন্তু এই ভয় নষ্ট করে দিতে পারে।
একটা জাতিকে পুরোপুরি মানসিক ডেস্ট্রাকশনের দিকে ঠেলে দিতে পারে এই ভয়ের চাষ।
একটা সময়- ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের লোকেরা মুসলমান নারীদের বোরকার বিরুদ্ধে বলতো, ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআনের বিরুদ্ধে বলতো। তাদের কথা হলো- এইগুলো দেখে মানুষ ভয় পায়। এগুলোর মধ্যে ভয়ের কথা আছে। ঠিকই আছে। সৃষ্টিকর্তার ভয়েই মুসলমানরা এগুলো পড়ে। মৃত্যুর পর শাস্তির ভয়ে সে ভালো কাজ করে, এবং খারাপ কাজ থেকে বেচে থাকে। দীর্ঘদিনের এই নির্দেশনা মেনেই সমাজ তৈরী হয়েছে। এখানে সৃষ্টিকর্তার কিন্তু দৃশ্যত্ব কোন লাভ ক্ষতি নেই। মানুষ ভয় পেয়ে নিজেই নিজের ভালো করছে, সমাজের ভালো করছে।
কথা হচ্ছে, ডেমোক্র্যাটিকরা ধর্মের বিরুদ্ধে বলে এখন ধর্ম থেকে পলিসি চুরি করেছে।
তাদের তো সৃষ্টিকর্তা নেই, কি দিয়ে ভয় দেখাবে ?
তাই ইবোলা, সার্স, মার্স, এইডস, কোভিড-১৯ সহ নানান রোগকে সুপার ন্যাচারাল বানিয়ে মানুষকে অত্যাধিক ভয় দেখাচ্ছে।
মানুষ যখন ভয় দেখে উপায় খুজছে, তখন সেটার উপশম হিসেবে নিজেদের নিয়মনীতি (উদা: সোশ্যাল ডিসটেন্সিং) ছড়িয়ে দিচ্ছে, ডেমোক্র্যাটিক ধর্ম তৈরী করছে, নিজেদের অর্থনৈতিক লাভ হয় এমন জিনিস কেনাচ্ছে। অর্থাৎ অপরকে ভয় দেখিয়ে নিজের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক লভ্যাংশ তৈরী করা।
অনেকটা রাস্তায় দাড়িয়ে যৌন রোগের ওষুধ বিক্রি করা ক্যানভাসারদের মত।
তারা তাদের পণ্য বিক্রি করার সময় এমন লক্ষণ বলে ভয় দেখায়,
যেন আপনার মনে হয়- কত বড় ভয়ঙ্কর যৌন সমস্যায় ভুগছেন আপনি।
অথচ যে লক্ষণগুলোর কথা সে বললো- এগুলো স্বাভাবিক বিষয়। মানুষভেদে স্বাভাবিক লক্ষণ।
কিন্তু আপনি হয়ত বিষয়গুলো জানেন না। আর সে আপনার সেই অজ্ঞতাকে পূজি করেই,
তার পণ্য বিক্রির সুযোগটা নিলো।
এগুলো আসলে খুব খারাপ জিনিস । সাধারণ মানুষ হয়ত সব বুঝতে পারে না,
কিন্তু সবার চোখ সব কিছু এড়িয়ে যায় না।