গরম কালে সবাই করোনার ভয়ে আতকে আছি কিন্তু বাস্তবে করোনার ভয় হলো শীত কালে


১) ইকুয়েডর করোনা ভাইরাস নিয়ে অনেকে চিন্তায় আছে। একটা বিষয় না বললেই না, ইকুয়েডর রাষ্ট্রটি কিন্তু নিরক্ষরেখার উপর অবস্থিত। ইকুয়েডরে দুইটি ঋতু একটি ভেজা মৌসুম (যা শীত), ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত। অন্যটি শুষ্ক মৌসুম, যা অপেক্ষাকৃত গরম এটি মে থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত্। বর্তমানে ইকুয়েডরের অনেক স্থানে কিন্তু তাপমাত্রা অনেক কম বিরাজ করছে। গুগল বলছে আজকে ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোতে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বিরাজ করেছে। ইতিমধ্যে অনেকেই তাপমাত্রার সাথে করোনা বিস্তারের একটা সম্পর্ক পেয়েছে। এখানে থেকে কিন্তু একটা মেসেজ আসছে বাংলাদেশের জন্য। সেটা হলো- রাখাল ও বাঘের গল্পের মত। আমরা এখন গরম কালে সবাই করোনার ভয়ে আতকে আছি। কিন্তু বাস্তবে করোনার ভয় হলো শীত কালে, যা আসতে আরো ৫-৬ মাস বাকি। কিন্তু এখন যদি আমরা শীতের দেশের অনুসরনে ভয়ে সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে হার্ড ইমুউনিটি তৈরী করতে না দেই, তবে ৫ মাস পর বাংলাদেশে যদি সত্যিই আসল বাঘের মত আসল করোনা দেয়, তখন আমরা সামাল দিতে পারবো তো?
২) আমার পোস্টে একজন কমেন্ট করেছিলো-
“বাংলাদেশের প্রথম সর্বনাশ করলো রেমিট্যান্স যোদ্ধারা, দ্বিতীয় মসজিদের হুজুররা এবং তৃতীয় গার্মেন্টস শ্রমিকরা।”
আমি তার উত্তরে বলেছিলাম- “ইউরোপ আমেরিকায় তো বাংলাদেশের মত রেমিট্যান্স যোদ্ধাও নেই, বাংলাদেশের মত মসজিদের হুজুরও নেই এবং গাদা গাদা একত্র করে গার্মেন্টস শ্রমিকও নেই। তাহলে তাদের দেশে কেন এত মহামারি লাগলো ? কেন এত মানুষ মরে গেলো ?? ”
৩) “ইসলামে ছোয়াছে রোগ বিশ্বাস আছে না নাই” এটা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে দুই গ্রুপের মধ্যে তর্ক দেখেছি। আমি কোন পক্ষ নিচ্ছি না। তবে “ইসলাম ছোয়াচে রোগে বিশ্বাস করে” মুসলমানদের মধ্যে যে পক্ষ এটা বলে তারা মূলত ইসলামকে বিজ্ঞানময় প্রমাণ করতে চান। তবে আমার মনে হয়, ছোয়াচে রোগ বিশ্বাসের মধ্যে কেমন জানি এক ধরনের অমানবিকতার বলয় আছে। যে ছোয়াছে রোগ বিশ্বাস করে, সেই যেন কেমন অবমানবিক হয়ে যায়। ইসলামকে বিজ্ঞানময় প্রমাণ করতে গিয়ে ইসলামকে অমানিবকতার ধর্ম বানিয়ে ফেলা হচ্ছে কি না, ধর্মীয় বেত্তারা সেদিকেও নজর রাখবেন।
৪) ইউরোপ-আমেরিকার জন্য আবহাওয়াগত কারণে করোনা অধিক ক্ষতিকর, কিন্তু লকডাউন কম ক্ষতিকর (কারণ তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো)। তাই তারা লকডাউন গ্রহণ করছে।
কিন্তু বাংলাদেশের জন্য আবহাওয়াগত কারণে করোনা কম ক্ষতিকর, কিন্তু লক ডাউন অধিক ক্ষতিকর (জনগণের আর্থিক সামর্থের কারণে)। কিন্তু আমরা যদি তাদের অন্ধ অনুকরণে লকডাউন করি, তবে সেটা হবে ছোট কারণে বিরাট ক্ষতিকে সাদরে গ্রহণ করা।
৫) John Ioannidis একজন গ্রিক-মার্কিন চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী। এই চিকিৎসক বিজ্ঞানী করোনা ভাইরাসের কারণে অনেক দেশের সব বন্ধ করে দেয়াকে তুলনা করেছে, হাতি ও ইদুরের এক গল্পের মাধ্যমে।
গল্পে তিনি বলেন, ইদুর ঘোষণা করলো সে হাতিকে আক্রমণ করবে। এই কথা শুনে হাতি ভয়ে পাহাড় থেকে লাফ দিয়ে পড়ে মারা গেলো। তার বক্তব্য হলো-হাতি হলো জনগন, ইদুর হলো করোনা ভাইরাস। জনগণ করোনা ভাইরাসের ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে লক ডাউন গ্রহণ করে নিজেদের সর্বনাশ বয়ে আনছে। (https://bit.ly/2UUT75q)