মানুষ এখন বিজ্ঞানের থেকে কুসংস্কারকে বেশি প্রাধান্য দেয়।
তবে সমস্যা হইলো, এখন যারা কুসংস্কারের বিশ্বাস করে,
তারা মুখ দিয়ে বিজ্ঞানের কথা বলে বেশি।
মানে বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে তারা কুসংস্কারকে প্রচার করে।
মানুষ একত্র হলেই করোনা অনেক ক্ষতি করে ফেললো,
এই তত্ত্ব আমার কাছে কুসংস্কার মনে হয়,
এটা পুরোটাই বানোয়াট তত্ত্ব ও ভ্রান্ত ভীতি।
আমি এর বাস্তবতা পাই না কিছুতেই।
কারণ মানুষ মানুষের কাছে আসলেই করোনা হয়, এটা বিজ্ঞানও স্বীকার করে না। কারণ সেখানে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে,
সেই ফ্যাক্টরগুলো না মিললে করোনা কিভাবে ক্ষতি করে, মানুষের মৃত্যু ঘটাবে, সে হিসেব আমি মিলাতে পারি না।
ধরে নিলাম, একটি বিরাট গণজমায়েত হলো-
বিজ্ঞান অনুসারে-
-প্রথমত ভীড়ের মধ্যে একজন করোনা রোগী থাকতে হবে।
ঐ রোগী তার পুরো আক্রান্তের সময়ে (৭ দিনে) সর্বোচ্চ দু্ থেকে আড়াই জনের মধ্যে করোনা ছড়াতে পারবে। তাহলে ১-২ ঘন্টার গণজমায়েতে কতটুকু ভাইরাস ছড়াতে পারবে ? যতটুকু ছড়াবে, ততটুকু আরেকজনকে আক্রান্ত করার জন্য যথেস্ট ভাইরাস কি ?
-তারপরও শর্ত হলো- আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাচি-কাশী দিতে হবে এবং সেই বাতাস দু্ থেকে আড়াই জনকে গ্রহণ করতে হবে।
-যে করোনা আক্রান্ত, তাকে করোনা দ্বারা মারাত্বক পর্যুদস্ত বা অসুস্থ হতে হবে, তাহলে তার ভাইরাস রেপ্লিকেশন পর্যাপ্ত হবে, তার ভাইরাল লোড-শেডিং বেশি হবে এবং
-তৈরী হওয়া ভাইরাসগুলো ফেইক হলে হবে না, অরজিনাল হতে হবে। এবং এরপর সেগুলো দু্ থেকে আড়াই জনকে পর্যাপ্ত সংখ্যক গ্রহণ করতে হবে।
-যে গ্রহণ করবে, তার ভেতরেও পর্যাপ্ত সংখ্যক ভাইরাস প্রবেশ করতে হবে, সামান্য সময়ে সেটা কতটুকু হবে ?
- যার শরীরে পর্যাপ্ত সংখ্যক ভাইরাসটি প্রবেশ করলো তার বয়স, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রাধান্যযোগ্য। দেখা গেলো বয়স কম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হওয়ায় ভাইরাস আক্রান্ত হয়ায় শুরুতেই সে ভাইরাসটি পর্যুদস্ত করে ফেললো। ফলে ভাইরাসের অস্তিত্ব শুরুতেই নষ্ট হয়ে গেলো।
- যাদের শরীরে ভাইরাসটি প্রবেশ করলো, তাদের ৮০% আবার এ্যা-সিমটোমেটিক রয়ে গেলেন। কেউ জানাইলোই না সে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলো। তার লক্ষণ (হাচি-কাশী) কম হওয়া এবং ভাইরাস রেপ্লিকেশন কম হওয়ায় তার দ্বারাও মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারলো না।
১-২ ঘন্টার গনজমায়েত হওয়ায় মানেই গণমৃত্যু বা গণআত্মহত্যা করা এটা একটা কুসংস্কার ছাড়া কিছু না।
তবে আজকে এক হুজুরের জানাজা নিয়ে মিডিয়ার অতিরিক্ত লাফালাফির কারণটা আসলে অন্য,
কারণ নাস্তিকরা ভাবছিলো- হুজুরদের করোনার ভয় দেখায় ঘরে বন্দি করতে পারছি,
মসজিদ বন্ধ করতে পারছি, এটা তাদের জন্য একটা বিরাট সাফল্য।
এখন একটা অজুহাতে তারা যদি ছাড়া পায়, তবে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
তাদের সেই সর্বনাশ যেন না হয়, সে জন্য এত চিৎকার চেচামেচি।
কারণ প্রতিদিনই ত্রাণ নিতে গিয়ে, ব্যাংকের লাইনে, হাট-বাজারে গণ জমায়েত হচ্ছে,
টিভি-মিডিয়া সেন্টারে, বঙ্গবন্ধুর খুনির মৃত্যুতে আনন্দ মিছিলে, রাজনৈতিক ফটোসেশনে,
গণ জমায়েত হতেই আছে, কিন্তু সেটা নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই, সব ব্যাথা হলো হুজুরদের নিয়ে।
তাদের একবার ঘরে ভরতে পারছি, এটা রোজা-ঈদের পর প্রয়োজনে একবারে বন্ধ করে দিবো।
এখন হঠাৎ করে যদি বের হয়ে যায় তবেই আমাদের সর্বনাশ।
সেই সর্বনাশ থেকেই এত চিৎকার, কুসংস্কারের প্রচার, আর কিছু না।