আপনার কি সর্দি আছে ?

আপনার কি সর্দি আছে ?
হা !
তাহলে তো আপনারে করোনা ধরছে।
বলেন কি ? কিন্তু আমার তো বছরে ৬ মাসই সর্দি থাকে।
---আপনার কি কাশি আছে ?
হা !
তাহলে তো আপনার নির্ঘাৎ করেনা।
বলেন কি ? কিন্তু আমার তো মাঝে মাঝেই কাশি হয়।
---আপনার কি জ্বর !
হা।
তাহলে তো আপনার করোনা। আপনি মনে হয় আর বাচবেন না।
বলেন কি ? কিন্তু সিজন চেঞ্জের সময় তো প্রায় আমার জ্বর আসে।
---আপনার কি গলা ব্যাথ্যা ?
হা ।
তাহলে আপনার নিশ্চিত করোনা।
কিন্তু আমার তো ফ্যানের নিচে ডাইরেক্ট শুইলে, একটু বেশি ঠাণ্ড পড়লে বা ঠাণ্ডা কিছু খাইলেই গলা ব্যাথ্যা করে।
---আপনার কি শ্বাসকষ্ট।
হা।
তাহলে আপনি করোনা আক্রান্ত, তাড়াতাড়ি ভাগেন।
কিন্তু ঠাণ্ডা লাগলে তো আমার বুকে কফ হয়, তখন শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এটা ছোট থেকেই হয়।
সমস্যা হইলো-
বাংলাদেশে এমন এক সময় করোনা ভীতি ছড়ছে,
যখন বাংলাদেশের ৮০% লোকের জ্বর, সর্দি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট বা গলাব্যাথ্যা আছে।
আর এই লক্ষণগুলাই নাকি করোনা ভাইরাস আক্রান্তের লক্ষণ।
সমস্যা হইলো এখন করোনা যতটা না শারীরিক সমস্যা, তার থেকে বেশি প্রেস্টিজ সমস্যা হয়ে গেছে।
কারণ আপনি যার কাছে আপনার কষ্টের কথা বলতে যাইবেন, সেই ভয় পেয়ে আপনার থেকে দৌড়ে পালাবে। এমনকি যে ডাক্তাররা ছিলো রোগীর চিকিৎসার আশ্রয়স্থল তারাও এমন রোগী দেখতে অস্বীকার করছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হসপিটালের সহযোগী অধ্যাপক একে বসাক তার চেম্বারে ঝুলিয়ে দিয়েছে শ্বাসকষ্ট/জ্বর/কাশির রোগী দেখা হয় না, এমন একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়েছে।
হোস্টেল, হল বা ডরমেটরিতে এই লক্ষণের পোলাপাইনের অভাব নাই। একবার শুধু খবর পাইলেই হইলো, পুরো হলে রটায় দিছে এখানে করোনা ধরা পড়ছে। অনেকে তো ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তা হলের গন্ডি পার করে রাষ্ট্রীয় নিউজ বানায় দিছে। ভাবখানা এমন, হলের পাকঘরেই বোধহয় করোনার টেস্ট করা হয়।
বিষয়টি এমন হয়ে দাড়িয়েছে, একটা কাশী দিলে, বা গা একটু গরম লাগলে নিজের কাছেই মনে হচ্ছে- “আয় হায় আমার মনে হয়ে করোনা ধরেছে। আমাকে আইসিইউতে ভর্তি করাও।
মানুষকে আর বনের বাঘে নয়, মনের বাঘেই খেয়ে নিচ্ছে।
তবে করোনা ভীতি ছড়ানোর পক্ষের লোকদের প্রশংসা না করলেই নয়, তারা সিজন চেঞ্জের মত একটি উপযুক্ত সময়কে তারা করোনা ভীতি ছড়ানোর জন্য বেছে নিছে।