করোনা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর -
উত্তর - করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী চীনে সনাক্ত হয় ২০১৯ সালের ১৭ই নভেম্বর। ইতিমধ্যে ৪ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে এখনও যখন বাংলাদেশে করোনা ছড়ায় নাই, তাহলে বাংলাদেশে করোনা নিয়ে চিন্তিত হবার কোন কারণ দেখি না।
২. প্রশ্ন- আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন, বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত রূগী নাই ?
উত্তর – দেখেন যখন বাংলাদেশে চিকুন গুনিয়া ব্যাপকভাবে ছড়াইছিলো তখন আমার আত্মীয়ের মধ্যে কমপক্ষে দুই ডজন লোকের চিকুন গুনিয়া হইছিলো, যখন ডেঙ্গু ছড়াইছিলো তখন আমার আত্মীয়ের মধ্যে কমপক্ষে এক ডজন লোকের ডেঙ্গু হইছিলো। হাসপাতালগুলোতে রোগীর জায়গা হচ্ছিলো না। মাঝে মাঝে মানুষের সিজনাল পাতলা পায়খানা জ্বর বমি ভাইরাল হয়, হাসপাতাল বাদ দিলাম ডিসপেন্সারির দোকানগুলোতে ভীড় লেগে যায়্ । এ রকম কোন লক্ষণ কি প্রদর্শিত হয়েছে ? যেহেতু করোনা দ্রুত ছড়ায়, তাই অনেকের এভাবে করোনা লক্ষণ প্রদর্শিত হওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে- কেউ বিদেশ থেকে এসেছে করোনা ভাইরাস নিয়ে কিংবা কেউ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে ওমুক লোকের করোনা হয়েছে, এগুলো দ্বারা কখনই প্রমাণ হয় না বাংলাদেশে করোনা প্রভাব বিস্তার করেছে বা করতে পেরেছে।
৩. প্রশ্ন- বাংলাদেশে কি করোনা ভাইরাস ছড়ানোর পরিবেশ নাই ?
উত্তর- দেখুন ! আমার দৃষ্টিতে করোনা সবচেয়ে ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারতো বাংলাদেশে। কারণ বাংলাদেশে তো প্রচণ্ড ঘণবসতি, জনংসংখ্যার ঘনত্ব প্রচুর। ছোট ছোট ঘরের মধ্যে মানুষ লাগালাগি করে থাকে। যেসব দেশে করোনা ছড়াইছে, তাদের এক দেশে যত লোক থাকে, বাংলাদেশে একটা মহল্লায় তার থেকে বেশি লোক থাকে। সে হিসেবে বাংলাদেশে করোনা একটু ঢুকলেই শেষ। এছাড়া বাংলাদেশে মানুষ কফ-থুথু নিয়ে এত সচেতন নয়। বাংলাদেশে বিদেশী-প্রবাসী লোকের আনাগোনাও প্রচুর। তাছাড়া রাষ্ট্রীয়ভাবে যে ব্যাপক সচেতন হওয়া হয়েছে, তাও নয়। তাহলে ৪ মাস হয়ে যাওয়ার পরেও যখন বাংলাদেশে করোনা ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে না, তাই বাংলাদেশে আসলেই কোন কারণ বশত এর বিস্তৃতি ঘটনার সুযোগ নেই। যদি হতো, তবে অনেক আগেই প্রচুর পরিমাণে হতো। হাসপাতালগুলোতে যায়গা হতো না, আপনার আত্মীয়র মধ্যে কমপক্ষে ১ ডজন লোকের লক্ষণের খবর পেতেনে। যেহেতু এখনও পাননি, তাই ভয় সৃষ্টি অযথা ছাড়া কিছু নয়।
৪. প্রশ্ন: স্কুলগুলো বন্ধ করা কি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে না ?
উত্তর- কখনই না। বরং বোকার মত পদক্ষেপ হতে পারে। একটি মহল (ডেমোক্র্যাটিক ব্লক) চাইছে করোনা ভীতি বিস্তৃতি লাভ করাতে, এতে তাদের আন্তর্জাতিক কর্পোরেট স্বার্থ আছে। তারাই মানুষের মধ্যে ভীতি স্থায়িত্ব করতে প্রচারণা চালাচ্ছে, যার প্রথম কাজ হিসেবে স্কুলগুলো বন্ধ করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে, কিন্তু সেটা করলে বাংলাদেশ ভুল করবে। কারণ বাংলাদেশে করোনা ভীতিকে কোনভাবেই যায়গা দেয়া যাবে না। যেসব দেশে করোনা ছড়িয়েছে, সে সব দেশের খবর নিন। সেখানকার মানুষ কমপক্ষে ২ মাসের খাবার বাড়িতে মজুদ করেছে। এতে কি যে ভয়াবহ অবস্থা হয়, তা কল্পনা করা যায় না। বাংলাদেশে এক পেয়াজ সংকট হলে এটা নিয়ে বিশ্রি সমস্যা হয়। যদি করোনা ভীতি মারাত্মক আকারে তৈরী করা হয়, তখন সাধারণ মানুষ নয়, ব্যবসায়ীরাই খাদ্য মজুদ করা শুরু করবে। চালের কেজি ১ হাজার টাকা হয়ে যেতে পারে। তখন করোনায় ১০ জন মারা গেলে দুর্ভিক্ষ লেগে মারা যাবে ১০ লক্ষ লোক। সুতরাং বাংলাদেশের পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
৫. প্রশ্নঃ অনেক মুসলিম দেশে মসজিদ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে, বাংলাদেশে কেন মসজিদ বন্ধ হবে না ?
উত্তরঃ দেখুন আমি একই কথা বলছি, বাংলাদেশে অনেক কিছু স্বাভাবিকভাবে সম্ভব না। পৃথিবীর অনেক দেশে যে লোক থাকে, আমাদের এক মহল্লায় তার থেকে বেশি লোক থাকে। যেমন কুয়েতের জনসংখ্যা ৪০ লক্ষের মত, কাতারের জনসংখ্যা ২৬ লক্ষের মত। বাংলাদেশে মিরপুর বা খিলগাও থানায় এর থেকে বেশি লোকের বসবাস। সুতরাং তারা কোন সিদ্ধান্ত নিলেই সেটা বাংলাদেশে এপ্ল্যাই করা সম্ভব না। আর তাছাড়া মসজিদগুলো হচ্ছে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি বা আবেগের সাথে জড়িত। মানুষ তার বেচে থাকার শেষ আশ্রয়স্থল মনে করে ধর্মকে। আপনি যদি সেই ধর্মীয়স্থল বন্ধ করে দেন, তবে মানুষের মনের মধ্যে সেই আশ্রয়স্থলে আঘাত আসবে । ডাক্তাররা কিন্তু বলে- রোগী আসলে তাকে মানসিকভাবে শক্তি দিন। কারণ মানসিকভাবে শক্ত হলে, সে এমনিতেই অনেক রোগ হতে রক্ষা পাবে। বাংলাদেশে মসজিদগুলোতে হস্তক্ষেপ করা হলে- মানুষকে মানসিকভাবেই পঙ্গু করে দেয়া হবে, যা হবে করোনা থেকেও লক্ষগুন বেশি ক্ষতিকর। অন্তত মানুষ মসজিদে গিয়ে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে সাহায্য চাচ্ছে, এটাও একটা বড় শক্তি। আপনি রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে যে শক্তিটা দিতে পারছেন না, সে সেটা মসজিদে গিয়ে মানসিকভাবে পাচ্ছে, সেটা যদি আপনি বন্ধ করে দেন, তবে আপনি করোনা থেকেও মানুষের অধিক ক্ষতি করলেন, মানুষকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে দিলেন। এতে রোগের ভয়ে অনেক মানুষ স্ট্রোক করে মারা যেতে পারে, তখন কি করবেন ? হ্যা যদি বন্ধ করতেই হয়, তবে টিভি স্টেশন, রেডিও স্টেশন, ক্লাব, বিনোদন কেন্দ্র বিশেষ করে যেখানে কথিত সংস্কৃতি চর্চা বা নাচ-গান-খেলাধূলা-নাটক-সিনেমা হয় সেগুলো আগে বন্ধ করে দেন। কারণ সেখানেও তো জনসমাগম হয়, সেগুলো বন্ধ না করে আগেই মসজিদে হাত দেয়া কখনই নিরপেক্ষতার লক্ষণ নয়।