ক্রিকেটার সাকিবের সাথে যে জুড়ারী যোগাযোগ করেছিলো তার নাম দিপক আগারওয়াল।

ক্ষুদে বিজ্ঞানী - বাতি জ্বলবে-নিভবে ...ক্রিকেটার সাকিবের সাথে যে জুড়ারী যোগাযোগ করেছিলো তার নাম দিপক আগারওয়াল। সে ভারতের অধিবাসী।
নামের সাথে ‘আগারওয়াল’ উপাধি সাধারণত ‘মারওয়াড়ী’রা ব্যবহার করে। ভারতে যেমন মারোয়াড়ী আছে, নবাংলাদেশেও তেমন মারোয়াড়ী আছে। বাংলাদেশের পুরান ঢাকা বা কুষ্টিয়া, জয়পুরহাটে মারোয়াড়ী দেখা যায়। মূলতঃ মাড়ওয়ারী হলো একটি গোষ্ঠী, যারা ভারতের রাজস্থান প্রদেশের যোধপুরের মাড়োয়ার অঞ্চল থেকে আগত। এ গোষ্ঠিটি মূলত ব্যবসায়ীক হিসেবেই বেশি পরিচিত।
বাদশাহ আকবারের সময় থেকে মাড়োয়ারীরা রাজস্থানের বাইরে সারা ভারত উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সপ্তদশ শতকে তারা বাংলা এলাকায় আগমন করে বলে জানা যায়।
ইতিহাসে এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি পরিচিত মারোয়াড়ী ব্যবসায়ী হলো জগৎশেঠ, যে নবাব সিরাজউদদৌল্লাহকে হটানোর পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছিলো। মূলত মারোয়াড়ীরা ব্রিটিশদের সাথে কোয়ালিশন করে। আফিম ও নীল ব্যবসা ইংরেজেদের একচেটিয়া হওয়া সত্ত্বেও এর মূল লগ্নিকারী ছিল তারাই। এরা হিন্দু ও জৈন ধর্মের অনুসারী। এদের একটা বড় বৈশিষ্ট্য হলো এরা হলো নিরামিষভোজী।
গত শতাব্দীর বিশের দশকে এসে মাড়োয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলো মুসলমানদের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি এক্ষেত্রে পণ্য বিক্রি, বাড়ি ভাড়ায় অস্বীকৃতি শুরু করে মুসলমানদেরকে দর্জি, তাঁতি, বাদক, গাড়োয়ান, সহিসদেরও বর্জন করে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এও জানানো হয় যে, এরপর কোন মাড়োয়ারি তাদের প্রতিষ্ঠানে কোন মুসলমান নিয়োগ দিবে না। অনেকে মনে করেন, ১৯২৬ সনের দাঙ্গা তাদের এই সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির ফল।
বর্তমানে বাংলাদেশের মারোয়াড়ী’র সংখ্যা কমে গেছে, তারপরও যে নেই সেটা বলা যাবে না।
বাংলাদেশের মারোয়াড়ী ব্যবসায়ীদের আলাদা সংগঠন আছে, যার নাম- বাংলাদেশ মারোয়াড়ী সমিতি।
বিভিন্ন পূজা-মণ্ডপে অতিরিক্ত সাজসজ্জা ও খরচের পেছনে মারোয়াড়ী ব্যবসায়ীদের অর্থ ছড়ানো আছে বলে ধারণা করা হয়।
বাংলাদেশের মারোয়াড়ী ব্যবসায়ীদের দুই নেতা এই পূজা অর্চনার পেছনে নেতৃত্ব দেয়।
একজন দোয়েল গ্রুপের দেওকি নন্দন কেজরিওয়াল এবং অপরজন উত্তরা গ্রুপের গিরিধারী লাল মোদি।
দুইজনের বাড়ি কুষ্টিয়া-চুয়াডাঙ্গার দিকে।
এরমধ্যে গিরিধারী লাল মোদী’র হলো বাংলাদেশের সাবেক বিচারপতি এসকে সিনহার বন্ধুর মত।
সিনহা যে হঠাৎ করে সরকারবিরোধী হয়ে উঠলো এর পেছনে গিরিধারী লাল মোদী’র হাত রয়েছে বলে মনে করা হয়।
ইসরাইলের লিকুদ পার্টির মেন্দি এন সাফাদির একটি গ্রুপ বাংলাদেশে উগ্রুহিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠা এবং আওয়ামী সরকারকে হটানোর জন্য কাজ করে, এই গিরিধারী লাল মোদি এসকে সিনহাকে সেই ইসরাইলি গ্রুপটির সাথে কানেক্ট করে দেয়।
এর ফল অবশ্য গিরিধারী লাল মোদি পায়। সিনহা বাইরে চলে যাওয়ার পর গিরিধারীর পুরো পরিবারের ব্যাংক হিসেবে তলব করা হয়। এবং এতদিন লুকিয়ে রাখা তাদের দোষ ত্রুটিগুলো উন্মুক্ত করে দেয় সরকার, বিশেষ করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ছিলো গিরিধারীর নামে তার বিচার শুরু হয়। যদিও এখন সে জামিনেই আছে। একই অভিযোগে অভিযুক্ত মারোয়াড়ী ব্যবসায়ী এইচবি অ্যাপারেলস লিমিটেডের মালিক ওম প্রকাশ আগারওয়াল এর ১৫ বছরের জেল হয়। এই রায়ের পর অবশ্য ওম প্রকাশ আগারওয়াল ভারতে পালিয়ে যেতে পারে। এছাড়া গিরিধারীর ছেলে দিলীপ কুমার মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হুণ্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচারের অভিযোগ আসে। (https://bit.ly/2N1An1ohttps://bit.ly/333wdfe)
উল্লেখ্য ভারতে নরেন্দ্র মোদির উত্থানের পেছনে মারোয়াড়ী ব্যবসায়ীরা বড় ভূমিকা রেখেছিলো বলে শোণা যায়।
ঠিক একইভাবে বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুত্ববাদ বিস্তারে আড়াল থেকে অর্থ ইনভেস্ট করে চলেছে এই মারোয়াড়ী ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে তারা এসকে সিনহার মাধ্যমে একটা আঘাত হানতে চেয়েছিলো, যদিও সফল হয়নি।
তাই বাংলাদেশে এই সব হিন্দুত্ববাদী মারোয়াড়ী ব্যবসায়ীদের নজরে রাখা অতিব জরুরী।