আজকে খবরে দেখলাম সরকার মুজিববর্ষ পালন করতেছে হাতিরঝিলে আতশবাজি পুড়ায়।


January 12
আজকে খবরে দেখলাম সরকার মুজিববর্ষ পালন করতেছে হাতিরঝিলে আতশবাজি পুড়ায়।
কোটি কোটি টাকার আতশবাজির ঝলকে আলোকিত হচ্ছে, আর তারা সেই আনন্দে উদ্বেলিত হচ্ছে
কথা হইলো- এই যে এত এত টাকা আগুনে পুড়ানো হচ্ছে, এই টাকাগুলো আসতেছে কোথা থেকে ?
ইতিমধ্যে অনেক আওয়ামীলীগার থেকে শুনেছি, মুজিববর্ষকে নাকি তারা ‘ধান্ধা বর্ষ’ হিসেবে ডাকা শুরু করেছে। কারণ এই এক বছর দলীয় কর্মীদের জন্য শেখ হাসিনা ‘বোনাস ইয়ার’ বা ধান্ধা করার জন্য সুবিধা করে দিচ্ছে।
এর জন্য একটা ফাণ্ড আসবে জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে, আর বাকিটা আসবে বেসরকারি ব্যবসায়ীদের থেকে চান্দাবাজি করে।দুইদিক থেকে এবার আওয়ামীলীগার জন্য সু-খবর, কারণ শেখ মুজিবুর রহমানের কথা বলে ধান্ধা আর চুরির করার বহুত সুযোগ হবে এবার।
বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকতে বলেছিলেন, " দেশ স্বাধীন করলে সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি..!! আমার ডানে চোর, বাঁয়ে চোর, সামনে চোর, পিছনে চোর, চোর আর চোর..!!!
আলো আমার আলোঃ বাতির ইতিহাস এবং এলইডি ...আমি বিদেশ থেকে যা কিছু আনি এই চোর চাটার দল সব খাইয়া ফেলায়..!!!”
তিনি কি জানতেন, তার মৃত্যুর পর তাকে বিক্রি করে চুরির ধান্ধা হবে ?
যাই হোক, হাতিরঝিল এলাকায় বিরাট গান বাজনা আর আতশবাজি দেখে অন্য একটা কথা মনে পড়লো।
সরকার কেন পর্যটন এলাকাগুলোতে মসজিদ রাখতে চায় না ?
কেন হাতিরঝিল থেকে ৫টা মসজিদ সরায় নিছে, কিন্তু ১টা মন্দির সরায় নাই ?
অন্যতম একটা কারণ সম্ভবত- এইসব পর্যটন এলাকায় এমন আমোদ ফূর্তি হবে, জোরে গান বাজনা হবে।
কিন্তু মজজিদ থাকলে ৫ ওয়াক্ত আজান হবে, ফলে দিনে ৫ বার তাদের আমোদ ফূর্তি বন্ধ রাখতে হবে,
আমোদ ফূর্তির মধ্যে নিশ্চয়ই কারো বার বার ব্যাঘাত ভালো লাগবে না,
এই কারণেই তারা পর্যটন এলাকা থেকে মসজিদ সরাতে চায়।
এবার আসি পোস্টের প্রসঙ্গে, সরকার আতশবাজি পুড়ায় সবাইকে বুঝাইতে চায় দেশের উন্নতি আতশবাজির মত উর্ধ্বগামি। কিন্তু দেশের অর্থনীতি নিয়ে যে সব খবর আসতেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। যেমন- খবর দেখলাম-
আমদানি ব্যয় হ্রাসের পরও বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে।
অর্থাৎ আমদানিও কমছে, আবার রফতানিও কমছে, এটা বেশি ভয়ঙ্কর,
মানে স্পষ্ট দেশের অর্থনীতির পতন হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা কাচামাল আমদানি ৫ ভাগের ১ ভাগ কমায় দিছে,
আর মেশিনারিজ আমদানি কমায় দিছে ১০ ভাগের ১ ভাগ।
এর মানেই এই নয় দেশেই এগুলো পাওয়া যাচ্ছে,
বরং এর দ্বারা এই বোঝা যাচ্ছে, দেশী কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে,
অন্যদিকে রফতানি কমে যাওয়ার মানে আরো স্পষ্ট দেশী ইন্ড্রাস্টির ধস।
অর্থাৎ ফিল্ডের বাস্তব পরিস্থিতি হচ্ছে- বাংলাদেশে গণহারে কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে,
আর বেকারত্ব হু হু করে বাড়তেছে, সাধারণ জনতা হচ্ছে দিশেহারা।
একজন জানালো, দেশের প্রাইভেট সেক্টরে এখন এমন অবস্থা,
অনেক যায়গায় নামমাত্র চাকুরী চলতেছে, মানে চাকুরী আছে কিন্তু বেতন নাই।
কোম্পানি ৩-৬ মাস বেতন দিতে পারে না।
গাটের টাকা ভেঙ্গে বা ঋণ করে চলতে হচ্ছে।
সত্যিই বলতে, আমি মন্ত্রী মিনিস্টার ভারণ শুনলেই বুঝি, তারা দেশের উন্নতি কিসে হয়, সেটাই কেউ বুঝে না। যেমন- কেউ গলা ফাটায় ব্লাউজের অর্থনীতি বৃদ্ধির কথা বলে, কেউবা বিউটি পার্লারের ব্যবহার দিয়ে অর্থনীতি মাপে, কেউ দাবী করে রাস্তাঘাট-ফ্লাইওভারে বানানোয় খরচ বাড়ায় অর্থনীতি বাড়ছে, কেউবা মোবাইল সিম ১৫ কোটি হওয়ায়, তাকে অর্থনীতির মাপকাঠি মানছে।
কিন্তু বাস্তবতা হওয়া উচিত ছিলো- সরকারী লোকরা যখন ভাষণ দিবে, তাদের বলা উচিত- আমি অমুক অমুক ইন্ট্রাস্টি্র দাড় করিয়েছি।” কে কার আমলে কতটা ইন্ড্রাস্ট্রি দাড় করালো, ডেভেলপ করলো সেটার উপর নির্ভর করছে তার অর্থনৈতিক সাফল্য।
আপনি চামড়ার মত বড় বড় ইন্ড্রাস্ট্রি ফেলে ভারতে চামড়া রফতানির অনুমোদন দিবেন, জ্বালানিখাত কুক্ষিগত করে গার্মেন্টেসের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে বাজার হারাবেন, আর বিদেশের কামলা খাটা পাবলিকের পাঠানো টাকা দিয়ে রিজার্ভ ভরে গর্ব করে বলবেন-আমাদের সময় অর্থনীতির মারাত্মক উন্নয়ন ঘটেছে, এটা সম্পুর্ণ বোগাস কথাবার্তা। সর্বশেষ খবরে দেখলাম- বাংলাদেশের পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেক বা স্থায়ী বিদায় দেয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছে সরকার। সরকার যে অর্থনৈতিকভাবে কতটা অথর্ব, এটা প্রমাণের জন্য তা যথেষ্ট। (https://tinyurl.com/rbngflt)
কথা হইলো- পুরো দেশের অবস্থা যখন এতটাই করুণ, এবং ক্ষণে ক্ষণে অবস্থা জটিল হচ্ছে,
সেখানে সরকার কিভাবে আতশবাজি পুড়ায় আনন্দ উদযাপন করে, আমার মাথায় আসে না।