কেউ কেউ বলতেছে- দরিদ্র ও দিনমজুররদের সাহায্য করুন।

6 hrs
পবিত্র বন মাউফলাং | 696195 | কালের কণ্ঠ ...
কেউ কেউ বলতেছে-
দরিদ্র ও দিনমজুররদের সাহায্য করুন।
খুব ভালো কথা।
কিন্তু কত লোককে সাহায্য করবেন ?
যমুনা টিভির একটা হিসেব পেলাম, সেখানে বাংলাদেশে দিনমজুরের সংখ্যা বলতেছে ৭ কোটি।
আবার বণিকবার্তা একটা ডিটোইলস হিসেব করেছে, তাদের হিসেব মতে দিনমজুরের সংখ্যা ২ কোটি,(https://youtu.be/0Ygco0mpDSY)
তবে ঐ ২ কোটিকে পরিবারের কর্তা হিসেবে যদি চিন্তা করি, তবে দিনমজুরের উপর নির্ভরশীল হবে ১০ কোটি মানুষ। (প্রতি পরিবারে ৫ জন সদস্য ধরে)।
কথা হচ্ছে, এই ১০ কোটি লোকের কত খাবার দরকার ?
১৫ দিন যদি ছুটি ধরি, তবে দৈনিক ৩ বেলা হিসেবে করে,
তাদের প্রয়োজন ৪৫ বেলা খাবার।
তাহলে ১০ কোটি লোকের দরকার ৪৫০ কোটি বেলা খাবার।
প্রতি বেলা খাবারের মূল্য যদি ১০০ টাকা করে হয়,
তবে মোট খাবার লাগবে ৪৫ হাজার কোটি টাকার।
গতকাল শুনলাম বাংলাদেশ সরকার ত্রাণ পাঠিয়েছে ৬ কোটি টাকা এবং ১৩ হাজার টন চাল। (https://bit.ly/2WXA25j)
১০ কোটি লোকের মাঝে যদি ৬ কোটি টাকা বণ্টন করি, তবে সবাই ৫০ পয়সা করেও পাবে না।
আবার ১৩ হাজার টন যদি সবার মাঝে বণ্টন করা হয়, তবে ১০ কোটি নয়, বরং ৫ কোটি লোক মাত্র ১ বেলা শুধু ভাত খেতে পারবে। বাকি ৪৪ বেলা তারা খাবার পাবে কোথায় ? আর বাকি ৫ কোটি লোক তো এখনও ১ বেলা খাবারই পায়নি।
তারপরও কথা হচ্ছে, সরকার যত টাকাই বরাদ্দ করুক, সেটা কত পার্সেন্ট পাবলিকের হাতে পৌছাবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। আর কবে পৌছাবে তার অপেক্ষায় কি পেট ক্ষুধা লাগানো বন্ধ করে দিবে ?
গত ২৪ ঘন্টার খবর বলছে-
১) করোনাভাইরাস সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দের চাল চুরি, গ্রেপ্তার ২
(https://bit.ly/2UVjhW1)
২) আওয়ামীলীগ নেতার উপর চাল চুরির অভিযোগ করায় সাংবাদিককে নির্যাতন
(https://bit.ly/3dOag9U)
৩) দলীয় লোক ছাড়া ভাগ্যে জুটছে না ত্রাণ!
(https://bit.ly/2QXUVcH)
প্রধানমন্ত্রী বলছে, খেটে খাওয়া মানুষের তালিকা করতে।
আরে ভাই, তালিকা করতে যদি ৭ দিন লাগে, তবে পেটের ভেতর বসে থাকা ছুচো কি ৭ দিন অপেক্ষা করবে?
আবার অনেক সাধারণ হয়ত ভাবছেন,
এসব লোককে আমরা সাহায্য করবো।
সাহায্য করার চিন্তা খুব ভালো, কিন্তু মানুষ আসলে আবেগে অনেক কথা বলে।
যেমন- অনেকে হয়ত মাস্ক বিতরণ করছেন। কিন্তু মাস্ক আর খাবার বিতরণ করা কিন্তু এক নয়।
একটা মাস্ক ধুয়ে মুছে আপনি ১ মাস ব্যবহার করতে পারবেন।
কিন্তু ১ বেলা একটা মানুষকে আপনি পেটপুরে খাওয়ালেন, সে ঠিক ৮ ঘণ্টা পর গিয়ে আবার খাবার চাবে, আপনি তাকে ১ বেলা খাবার দিয়ে ক্লান্ত, কিন্তু তার নিজের জন্য পরের বেলার খাবার চাই, তার ৪-৫ জন পরিবারের সদস্যদের জন্য খাবার চাই সেটা কে দিবে ?
আপনি একজনকে ৩ কেজি চাল দিলেন, ৬ জনের পরিবার এক দিনে ৩ কেজি চাল খেয়ে ফেলবে।
পরের দিন সে খাবে কি ??
আর তাছাড়া, শুধু দরিদ্ররা, করোনার কারণে মধ্যবিত্ত বা ধনীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির অনেকে কষ্টে চলতেছে, কিন্তু প্রকাশ্যে মুখে বলতে পারছে না।
যে ফ্যামিলি বাড়িতে খাদ্য মজুদ করেছে, সে কি সেই খাবার অন্যকে বিতরণ করে দিয়ে আসবে ?
কিছু মানুষ হয়ত, নামকাওয়াস্তে কিছু বিলি করতেছে, তারপর সেগুলোর বেশিরভাগ রাজনৈতিক ও প্রচার-প্রসারের স্বার্থে। সেগুলো দিয়ে ১০ কোটি লোকের ৪৫ বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা সম্ভব না।
অনেকের বিদেশ থেকে (প্রবাসীর মাধ্যমে) টাকা আসতো, সেটাও অনেকের বন্ধ।
সব কথার শেষ কথা হইলো-
যে জন একত্র বন্ধ করার জন্য সব কিছু বন্ধ করা হইলো,
ত্রাণ দিতে গেলে কি জনসমাগম হবে না ?
ত্রাণের জনসমাগমে কি করোনা ভাইরাস চলাচল নিষিদ্ধ ??