প্রথম ছবিটা ইতালির সাবেক ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার রিপাবলিকান ব্লকের মাত্তিও সালভিনি’র

প্রথম ছবিটা ইতালির সাবেক ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার রিপাবলিকান ব্লকের মাত্তিও সালভিনি’র। সে করোনার আতঙ্ক উড়িয়ে দিয়ে রোমের রাস্তায় মাস্ক ছাড়া বান্ধবিসহকারে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে। দ্বিতীয় ছবিতে একটি নিউজে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প করোনা ভাইরাসকে বলছে ডেমোক্র্যাটদের ধাপ্পাবাজি।
এখানে আসলে বোঝার বিষয় হলো-
আমাদের নদীমাতৃক দেশে যেমন বন্যা একটা সাধারণ বিষয়। ঠিক তেমনি শীত প্রধান দেশগুলোতে ফ্লু একটি কমন বিষয়। প্রতি বছরই ফ্লুতে শীত প্রধান দেশগুলোতে অনেক বৃদ্ধ মারা যায়। যেমন ২০১৮ সালে ফ্লুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ হাজার লোক মারা গিয়েছিলো। তবে সেটাতে ডেমোক্র্যাটিক মিডিয়া ফোকাস করেনি, এখন যেভাবে করছে। তবে কোন কোন ফ্লু তুলনামূলক মারাত্মক হয়, কিন্তু এটা তাদের জন্য স্বাভাবিক বিষয়। আমরা যেমন বন্যা কমবেশিকে মেনে নেই, শীত প্রধান দেশগুলো এই ফ্লুয়ের উৎপাত স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়। এ বছর করোনা ভাইরাস নামক ফ্লু এর উৎপাত ঠিক তেমন।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এবছর ডেমোক্র্যাটিক ব্লক এই ফ্লুয়ের সুযোগটা রাজনৈতিকভাবে নিতে চাচ্ছে। বলা যায়, এবার বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ হলো তাদের সংঘবদ্ধ আক্রমণ। এর কারণও আছে, ওয়াল্র্ড ওয়াইড ডেমোক্র্যাটিক ব্লক রাজনৈতিকভাবে পেছনে চলে যাচ্ছিলো। ওয়াল্র্ড ওয়াইড রিপাবলিকানদের উত্থান, ইউরোপে ম্যাক্রোর নতুন রাজনৈতিক ধারার সূচনা, রাশিয়ার ফিরে আসা, চীনের অবস্থান শক্তিশালী হওয়া, তুরস্ককেন্দ্রীক ইসলামিস্টদের উত্থান, সবমিলিয়ে ধিরে ধিরে আবদ্ধ হয়ে পড়ছিলো ডেমোক্র্যাটিক ব্লকরা। তাই তারা চাইছিলো একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ করে নতুন করে তাদের অবস্থান তৈরী করা, যেটা তারা করলো কোভিড-১৯ এর নাম করে।
আসলে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের রাজনীতি যদি দেখেন, তবে দেখবেন তারা ক্রাইসিস ক্রিয়েট করে পরে ত্রাণকর্তা সেজে রাজনীতি করে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যদি দেখেন, তবে ১৯৮০, ১৯৯৭, ২০০৮ সালে বিশ্বে বিভিন্ন যে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে তার পেছনে এই ডেমোক্র্যাটিক ব্লকদের হাত ছিলো এবং এই মন্দায় অন্যান্য ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও লাভবান হয়েছে সরোসের মত ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের বিজনেসম্যানরা।
আবার রাজনৈতিক উত্থাণের ক্ষেত্রে যদি দেখি, তবে ১৯৯০-৯২ এর মধ্যে বাংলাদেশ মিয়ানমার সহ বেশ কয়েকটি দেশে গণতন্ত্রের উত্থানের নামে ডেমোক্র্যাটিকরা অবস্থান দৃঢ় করেছে, তখন কিন্তু সেই দেশগুলোতে ক্রাইসিস তৈরী করেই তারা রাজনীতি করেছে। ২০১০-২০১২ পর্যন্ত যে আরব বসন্ত হলো, সেটাও কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক প্ল্যান, ওরা নিজেরাই ক্রাইসিস ক্রিয়েট করে সেখানে রাজনীতি করে এবং প্রতিপক্ষকে ফেলে দিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করে। এতে বহু সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু তাদের মূল উদ্দেশ্য রাজনীতি করা সেটা যেভাবেই হোক। হয়ত নামকাওয়াস্তে তাদের সেলিব্রেটি দিয়ে কিছু ত্রাণ দিবে, কিন্তু সেখানেও নিজেদের প্রচার করবে, যদিও বাস্তবে জনগণের সেটাতে কোন উপকার হবে না। বিশেষ করে এই ঘটনার পর ডেমোক্র্যাটিক ব্লকের পরিবেশবাদী (তাদের ভাষায় গ্রিন মুভমেন্ট) দের একটা উত্থান হতে পারে।
একটা জিনিস মনে রাখবেন, ডেমোক্র্যাটিকরা যার পক্ষ নেয়, বাস্তবে তারা ওর লাভ নয় বরং ক্ষতি করে। যেমন ডেমোক্র্যাটিকরা নারীদের (নারীবাদীদের) পক্ষ নিছে। এতে কিন্তু নারীদের উপকার হয় নাই, বরং ক্ষতি হইছে, তারা নারীদের পক্ষ নিয়ে উল্টা নারীদের ব্যবহার করে তাদের স্বার্থ সিদ্ধি করছে। একইভাবে এই যে তারা ভাইরাস-টাইরাসের নাম দিয়ে পাবলিকের পক্ষ নেয়ার ভান করতেছে, বাস্তবে এতে পাবলিকের কোন উপকার হবে না, বরং ক্ষতি হবে। আমার কথা বিশ্বাস না হয়, করোনা ভাইরাস শেষ হলে সমীকরণ মিলিয়ে দেইখেন, করোনা মানুষের কতটুকু ক্ষতি করলো, আর তাদের কৃত্তিম ক্রাইসিস কতটা ক্ষতি করলো, মাঝখান দিয়ে ডেমোক্র্যাটিকরা কতটুকু নিজেদের লাভ তৈরী করে নিলো, তাহলেই বুঝতে পারবেন।