বাংলাদেশে স্বাভাবিকভাবে ঘণ্টায় মানুষ মারা যায় ১০৬ জন, আর ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় আড়াই হাজারের উপরে।

ফাতরার বন – ভ্রমণবন্ধুবাংলাদেশে স্বাভাবিকভাবে ঘণ্টায় মানুষ মারা যায় ১০৬ জন, আর ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয় আড়াই হাজারের উপরে। আর যেহেতু বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, তাই মৃত্যুহার বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক।
এখন-
যেহেতু লক ডাউন, অমুক তমুক করেও বাংলাদেশে করোনা মহামারী প্রমাণ করতে পারেনি,
এজন্য এই স্বাভাবিক মৃত্যুগুলোকে এখন করোনা বলে চালিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা চলছে।
৪ তারিখের লক ডাউন ৩০ তারিখ পর্যন্ত টানতে চাইছে বিশেষ গোষ্ঠীর লোকজন।
ছোটবেলায় যে কোন মৃত্যুর খবর পড়তাম, সেখানে লেখা থাকতো-
“অমুক লোক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেছেন।”
একদিন একজন বললো- “আরে ভাই সবাই তো হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়েই ইন্তেকাল করে,
এটা তো মৃত্যুর কারণ নয়।”
ঘটনা হইলো- কোন মানুষের মৃত্যু যদি আপনি সামনে থেকে দেখেন,
তবে দেখবেন, মানুষ মারা যাওয়ার সময় তার শ্বাসকষ্ট হয়েই মারা যায়,
মৃতের কাছ থেকে দেখলে মনে হবে, সে বোধ হয় শ্বাস নিতে পারতেছে না,
তাই তার মৃত্যু হয়েছে।
এখন কথা হইলো,
মিডিয়া খুব জোর প্রচেষ্টা করতেছে, এই বিছিন্ন মৃত্যুগুলো করোনা মৃত্যু বলে চালায় দিতে,
একটু খোজ নিলেই বুঝতে পারবেন। যেমন-
১) খবর- খুলনা মেডিকেল কলেজে রোগীর মৃত্যু, চিকিৎসকের সন্দেহ করোনাভাইরাস
(https://bit.ly/3atnV3Q)
অথচ
১ দিন পরের খবর- “খুমেকে মৃত ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না”( https://bit.ly/3bAqgKG)
২) খবর- করোনা পরিস্থিতিতে অজানা রোগে মারা গেলেন চাঁদপুরের ব্রজেন্দ্র লাল
(https://bit.ly/33TZGta)
অথচ খবরের ভেতরে পড়ে দেখুন- করোনা টেস্ট হয়েছে কিন্তু নেগেটিভ।
৩) করোনা সন্দেহে যুবককে বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি গ্রামবাসী, চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু
(https://bit.ly/2WRWexV)
৪) আইসোলেশনে ২ জনের মৃত্যু (https://bit.ly/39oZXFO)
খবরের ভেতরে পড়ে দেখুন- একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধ টিবি রোগে ভুগছিলেন।
৫) খবর- আইসোলেশনে থাকা যুক্তরাজ্য ফেরত নারীরমৃত্যু
(https://bit.ly/2WSQELI)
অথচ একদিন পরের খবর-
সিলেটে মারাযাওয়া সেই নারী করোনা আক্রান্ত ছিলেন না
(https://bit.ly/2ULc22M)
৬) নোয়াখালীতে কাশি-জ্বরে যুবকের মৃত্যু, ভবন ঘিরে রেখেছে পুলিশ
(https://bit.ly/3dD5mwk)
একদিন পরের খবর-
নোয়াখালীতে মৃত যুবকের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ
(https://bit.ly/2WNmjhw)
৭) আইইডিসিআরকে তুলোধুনা করা সেই নারী করোনা নেগেটিভ
(https://bit.ly/3ar8wB3)
আসলে
অফিসিয়ালী করোনার নাম শোনা যাচ্ছে ১৩১ দিন আর বাংলাদেশে অফিসিয়ালী করোনা এসেছে ২২ দিন। যদি সত্যিই মহামারী হইতো, তবে আপনাকে গুগলে সার্চ দিয়ে মৃত্যুর খবর দেখতে হইতো না, আপনার বাসার পাসে শয়ে শয়ে লাশ পড়ে থাকতো, হাজার হাজার লোক অসুস্থ হয়ে কাতরাতো। মহামারী হলে একত্রে অনেক অসুস্থ বা মৃত থাকতো, এমন বিচ্ছিন্ন ভাবে ১-২ জন হতো না।
হ্যা আইডিসিআর, হয়ত পরীক্ষা কম করতে পারে, এতে করোনায় আক্রান্তের খবরও কম আসতে পারে।
কিন্তু বিভিন্ন এলাকার মহামারী তো সে আটকাতে পারবে না, মৃত্যুর মিছিল, অসুস্থতার মিছিল তো সে আটকাতে পারবে না। আর সেটাও বিচ্ছিন্নভাবে হবে না, হলে পুরো এলাকার মানুষ গণহারে হবে। আপনার আশে পাশেই সেই খবর পাবেন, সেটা আইডিসিআর লুকাতে পারবে না। এখন দুই একটা বিছিন্ন খবর একত্র যেভাবে বাংলাদেশে করোনায় মৃত্যু শুরু হয়েছে বলে ফেসবুকে একটা গোষ্ঠী প্রচার করছে, এটা ‘কনফারমেশন বায়াস’ ছাড়া কিছু না।
আসলে একটা কথা না বললেই না,
অসুখ আসবে, তার প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। কিন্তু সেখানে যদি ভিন্ন স্বার্থ জড়িয়ে যায়, তবেই সমস্যা।
হ্যা আওয়ামী সরকার খারাপ, তার পতন হওয়ায় জরুরী।
কিন্তু কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ তৈরী করে, বুভুক্ষ জনগণ বাড়িয়ে, তাদের দিয়ে সরকার পতনের আন্দোলন করার গ্রাউন্ড তৈরীর পক্ষপাতি আমি নই। সরকার পতন করার আরো অনেক স্ম্যার্ট পলিসি আছে, এত কোটি কোটি জনগণের ক্ষতি করে তারপর সেই ক্ষিপ্ত জনগণ দিয়ে রাজনীতি করার পক্ষপাতি আমি নই।
সরকারও একটা ভুল করেছে, সে গত টিভি চ্যানেলগুলোর গুজব নিয়ন্ত্রণের জন্য ১৫ সদস্যের টিম করলো, আবার কিছুক্ষণ পর সেই টিম বাতিল করে দিলো (https://bbc.in/2WQM1lh)।
কিসের চাপে করলো ? কেন টিভি মিডিয়া কি গুজব তৈরী করতে পারে না ?
শেষ কথা হইলো- লক ডাউন যে করোনা নিয়ন্ত্রণের কোন উপায় নয়, এটা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও স্বীকার করে নিছে। তাই অযথা দেশ ধ্বংসের এই সিস্টেম ৪ঠা এপ্রিল থেকে বর্ধিত নয়, বরং তার আগেই শেষ করে দিলে ভালো হয়।