একাত্তর টিভিতে এক টকশোতে মুসলমানদের লাশ পুড়ানোর জন্য বলেছে, দেখেছেন নিশ্চয়ই।
১. আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমি ১৮ই মার্চ এক স্ট্যাটাসে বলেছিলাম- নাস্তিকদের পরবর্তী টার্গেট মুসলমানদের লাশ আগুনে পুড়ানো (https://bit.ly/2Un57wq)। আমার কথা সত্য করে ১৯শে মার্চ একাত্তর টিভিতে মুসলমানদের লাশ পুড়ানোর জন্য বলা হলো। (https://bit.ly/3beGc4R)
২. তবে, এই একাত্তর জার্নাল নামক উক্ত অনুষ্ঠানের সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় ছিলো- নাস্তিক্যবাদী ফারজানা রুপা এবং হিন্দুত্ববাদী শ্যামল দত্ত মুসলমানদের লাশ আগুনে পুড়ানোর ব্যাপারে যতটা আগ্রহী, ঐ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ কিন্তু ততটা আগ্রহী নয়। ভিডিওতে লক্ষণীয়- নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদীরা বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে মুসলমানদের লাশ পুড়াতে চাইছে। কিন্তু ঐ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকেই বলছে- লাশ মাটি দিলেও চলবে। কিন্তু নাস্তিক ও হিন্দুত্ববাদীর কিন্তু ঐ পরামর্শ মোটেও মনঃপূত হচ্ছে না।
৩. ভিডিওতে সবচেয়ে শিক্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে, ইসলামবিদ্বেষীরা বিজ্ঞানকে ব্যবহার করে মুসলমানদের ধর্মের বিরোধীতা করতে চায়, যদিও সেটা বিজ্ঞানের কথা নয়। অর্থাৎ ইসলামবিদ্বেষীরা বিজ্ঞানকে সামনে রেখে মুসলমানদের সাথে দ্বন্দ্ব করে, তারা বুঝাতে চায়- মুসলমানদের সাথে বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব, কিন্তু বাস্তবে মোটেও সেটা নয়। বরং নাস্তিকরা (অধিকাংশ আর্টসে পড়া বিজ্ঞানী) নিজেরাও বিজ্ঞানকে মানে না এবং কুসংষ্কারে বিশ্বাসী।
৪. ধর্ম হচ্ছে বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কিত, যা পূর্বনির্ধারিত এবং অপরিবর্তনীয়। অপরদিকে বিজ্ঞান হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে একটি সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত যে চূড়ান্ত তা নয়, বরং ক্ষণে ক্ষণে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়। এজন্য অনেক বিজ্ঞানমনষ্ক ব্যক্তিকে আমি দেখেছি, তারা চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত দেন না, তারা আপাতত পরীক্ষা করে যে সিদ্ধান্ত পেয়েছেন, তা প্রকাশ করেছেন, কিন্তু সেটাই যে চূড়ান্ত বা শেষ কথা এমন কোন কথাই তারা কখন বলেন না। এবং সেটা যে পরিবর্তন হবে না, এমন কথাও তারা বলেন না। কিন্তু ইসলামবিদ্বেষীরা সেই কথাটা ফিক্সড দেখিয়ে মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাসের সাথে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়। ইসলামবিদ্বেষীরা নিজেরাই যে বিজ্ঞান বুঝে না, এটাও তার প্রমাণ।
৫. ইসলামবিদ্বেষীরা বিজ্ঞানকে যাস্ট তার স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ব্যবহার করে এবং তার স্বার্থের জন্য বিজ্ঞানের কথাগুলোও কাটছাট করে। যেটা তার স্বার্থের বিপক্ষে যায়, প্রয়োজনে তারা ঐ কথাগুলো এড়িয়ে যায় । যেমন- তাপমাত্রা যত বাড়তে থাকে, ভাইরাস তার কার্যকারিতা তত হারাতে থাকে। তাই ইউরোপে করোনা ভাইরাস যতটা বিধ্বংসী হবে, বাংলাদেশে মোটেও সেটা ততটা সক্রিয় বা বিধ্বংসী হবে না। এই সত্য কথাটা কিন্তু বাংলাদেশের মিডিয়া এড়িয়ে যাচ্ছে, কারণ তারা বাংলাদেশে যে গেইম খেলতেছে এই সত্য কথাটা প্রচার করলে তারা তাদের মার্কেট হারাবে তাই।
৬. আবার ক্ষেত্র বিশেষে ইসলামবিদ্বেষীরা বিজ্ঞানকে এড়িয়ে গিয়ে কাটিং করা যুক্তি বা আবেগ নিয়ে আসে, সেখানে বিন্দুমাত্র বিজ্ঞানের তোয়াক্কা করে না। যেমন- আমি অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞকে বলতে দেখেছি- বাংলাদেশে এখনও মসজিদ বন্ধ করার প্রশ্ন আসে না। কিন্তু ঐ ইসলামবিদ্বেষী আবেগকে ব্যবহার করে বলছে, যদি ছড়ায় তখন কি হবে ? অথচ যে অসুস্থ শুধু তাকেই প্রটেকশন নিতে বলা কিংবা নিরুৎসাহিত করা যায়, কিন্তু একজনের জন্য সবার মসজিদ বন্ধ করা কখনই গ্রহণযোগ্য কোন সমাধান নয়।
৭. ইসলামবিদ্বেষীরা সাধারণ মানুষকে, খণ্ডিত যুক্তি দিয়ে বিভ্রান্ত করে বিভ্রান্ত করে। “যদি এটা হয়, তবে ঐটা হইলো কেন ?” কিংবা “ঐটা যদি হয়, তবে এটা হলো কেন ? ” সাধারণ মানুষ তো এত পটপট যুক্তির উত্তর দিতে পারে না, ফলে তাদের দ্বারা বিভ্রান্ত হয়। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা গোয়েবলস থিউরী ব্যবহার করে, এক কথা বার বার বলতে বলতে মানুষের উপর আবেগ দ্বারা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। যেমন ধরেন- এই যে তারা কথিত সচেতনার নামে দেশে একটা অরাজকতা পরিস্থিতি তৈরী করছে, এতে বহু মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে, কিংবা খাদ্য অভাবে দুর্ভিক্ষের শিকার। তারা কিন্তু ঐ খবরগুলো কৌশলে এড়িযে যাচ্ছে, বরং কোন চিপায় কোন বয়স্ক লোক করোনায় মরলো না হার্ট এ্যাটাকে মরলো সেটা এমনভাবে ফলাও করছে, মনে হচ্ছে যেন পুরো দেশ মনে হয় মরে গেছে।
সমস্যা হলো- ইসলামবিদ্বেষীদের প্ল্যান বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান ধরতে পারেনি। কথিত করোনা আতঙ্কের মাধ্যমে বিজ্ঞানের নামে মুসলমানদের ইসলামবিরুদ্ধ কাজ করিয়ে নেয়ার প্ল্যান করে সেটা তাদের মাথার উপর দিয়ে গেছে। বর্তমান মুসলমানরা এক গর্তে বার বার পরেও শিক্ষা নেয় না, এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।