করোনা নিয়ে অতি উৎসাহীর অধিকাংশই কলা-বিজ্ঞানী
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস নিয়ে অতি উৎসাহীর অধিকাংশই আর্টসে পড়া বিজ্ঞানী। যেহেতু মিডিয়া ও মিডিয়া রিলেটেড লোকগুলোর বেশিরভাগ আর্টসে লেখাপড়া করে আসা, সুতরাং তারা তাদের যুক্তি তর্ক, টিআরপি বাড়ানো অতি উৎসাহীপনাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান যদিও সেটা না বলে, তবে তারা আগ বাড়িয়ে বলতে দ্বিধা করে না। আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের অনেক আর্টিকেলের নিচে দিয়ে কমেন্টে এসব কলা-বিজ্ঞানীদের উৎপাত দেখেছি, ভাইরাস বিশেষজ্ঞ যদি ১ টাকার সচেতন হতে বলছে, তবে কলাবিজ্ঞানীরা আগ বাড়িয়ে ১০০ টাকার ভীতি ছড়াচ্ছে এবং সেটা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে।
বর্তমানে যে সব কলা-বিজ্ঞানী করোনা নিয়ে অতি উৎসাহীপনা হচ্ছে, তাদেরকে কয়েকটি প্রশ্ন করা দরকার-
১) যে এলাকায় কমিউনিটি ট্র্যান্সমিশন লক্ষ্য করা যায়, সেখানে নাকি লক ডাউন দেয়। কথা হইলো বাংলাদেশে যে লক ডাউন করা হইছে, এটা কি আদৌ লক ডাউন হইছে ? নাকি ভাইরাস ৬৪ জেলায় ছড়ায় দেয়া হইছে ? ভাইরাস যদি ৬৪ জেলায় ছড়ায় যায় তবে লক ডাউন ২ সপ্তাহ রেখে কি লাভ হইতে পারে ?
২) লক ডাউনের কারণে না হয় ২-৩ সপ্তাহ পাবলিক ঘরে আটকে থাকলো, এরপর হয়ত খুলে দিলো। তখন যদি আবার ভাইরাস চড়াও হয়, তখন কি আবার লক ডাউন করবে ? কতদিন লক ডাউন থাকতে হবে ? তারা কিসের অপেক্ষায় লক ডাউন চায়, যেটা পাইলে তারা লক ডাউন ছেড়ে দিবে, সেটা আগে কলা বিজ্ঞানীদের কাছে প্রশ্ন করেন।
৩) যে সমস্ত কলাবিজ্ঞানী লক ডাউন করতে অতি উৎসাহী, তাদের কাছে প্রশ্ন করুন তো, লক ডাউন দিয়ে, পাবলিককে না হলে ঘরের ভেতরে আটকায় রাখা গেলো, কিন্তু ভাইরাস কি ঘরের ভেতর আটকে থাকবে ??
৪) কলাবিজ্ঞানীরা সব সময় ইতালিতে মৃত্যুর উদাহরণ টেনে আনবে। খুব ভালো কথা, তাকে একটু প্রশ্ন করুন তো ইতালিতে যে লোক মারা যাচ্ছে তাদের গড় বয়ষ কত ? তাদের কাছে প্রশ্ন করুন তো, ইতালিতে বয়ষ্ক জনসংখ্যা আর বাংলাদেশের বয়স্ক জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার কত পার্সেন্ট ? যদি বৃদ্ধের সংখ্যা বাংলাদেশে অনেক কম হয়, তবে ইতালি কিভাবে বাংলাদেশের জন্য প্রকৃত উদহারণ হতে পারে ??
৫) বাংলাদেশে প্রতি ঘণ্টায় নিউমোনিয়ায় মারা যায় ১টি শিশু। ২০১৮ সালে মারা যায় ১২ হাজারের বেশি শিশু। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে নিউমোনিয়া একটি সংক্রমক ব্যাধী। তাদের মতে, এটি কফ, থুথুর মাধ্যমে ছড়ায়, বাতাসে এর জীবাণু ছড়ায়। লক্ষ্য করুণ বাংলাদেশের জনসংখ্যায় ৫ বছরের নিচের শিশু সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১০%। অপরদিকে ৬৫+ বৃদ্ধের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৬%। যেহেতু তাদের দৃষ্টিতে নিউমোনিয়া একটি সংক্রমক ব্যাধী এবং প্রতি ঘণ্টায় ১টি শিশু মারা যাচ্ছে, তাহলে ৬% বৃদ্ধ বাচাতে যদি আমাদের ৩ সপ্তাহ লক ডাউন দিতে হয়, তবে ১০% শিশুকে বাচাতে আমরা কেন প্রতি বছর লকডাউন মারছি না। কলাবিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে কি বলবে ? (https://uni.cf/2yae1Gd)
৬) প্রাকৃতিকভাবে অসংখ্য ভাইরাস আছে, এবং প্রাকৃতিকভাবেই সে সমস্ত ভাইরাস প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে। এজন্য সৃষ্টিকর্তা প্রাণীর শরীরে সেই ভাইরাস মারার জন্য একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরী করে দেন। এত এত ভাইরাসের ভয়ে আমাদের কত শত বছর লক ডাউন থাকতে হইছে ?
৭) বাংলাদেশের মত অল্প যায়গায় জনবহুল দেশে, যেখানে লক ডাউন সম্ভব নয় এবং তা হয়ও নাই, তাহলে সেটা বাদ দিয়ে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ বা প্রাকৃতিকভাবে ভাইরাস নিধনের দিকে যাওয়ার ব্যাপাটারটা কলা বিজ্ঞানীরা কেন এড়িয়ে যাচ্ছে (https://bit.ly/2UmTYNv)।
কথায় বলে, “সেই তো মল খসালী তবে কেন লোক হাসালি”। এ ধরনের ভাইরাস, যার এখনও চিকিৎসা মোকাবেলায় হার্ড ইউমিনিটি বা প্রাকৃতিকভাবে দমন একমাত্র উপায়। আর বাংলাদেশের জন্য এ পদ্ধতি আরো বেশি কার্যকর কারণ বাংলাদেশে শিশু ও তরুণের সংখ্যা বেশি, বৃদ্ধের সংখ্যা অনেক কম। ইউরোপ-আমেরিকায় যেখানে ১৩-২৬%, সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ৬%। ফলে তাদের যত রিক্স আছে, বাংলাদেশের জন্য বিষয়টি মোটেও রিক্স না বরং আরো সহজ ও কার্যকর। সত্যিই যদি বাংলাদেশে ভাইরাস প্রকোপ আসে, তবে কিন্তু এই উপায়েই কাজ হবে। মাঝখান দিয়ে লক ডাউনের নামে দেশের অবস্থা খারাপ করে দিলো।