একজন এ্যানালিস্ট চিন্তা করবে উপর থেকে। এন.সি- ৩৬৯

একজন এ্যানালিস্ট চিন্তা করবে উপর থেকে
Image result for কলমএকজন এ্যানালিস্ট চিন্তা করবে উপর থেকে
আর একজন সাধারণ মানুষ চিন্তা করবে নিচ থেকে,
তফাৎটা এখানেই।
ধরুণ- শ্রীলংকায় বোমা হামলা হইছে।
একজন সাধারণ মানুষ দেখবে, বোমা হামলাাকারী কোন ধর্মের, কোন দেশের, কোথায় লেখাপড়া করছে, কতটুকু ধর্ম পালন করছে, কার সাথে ছবি তুলছে, এরপর কোন দেশ থেকে নির্দেশনা দিছে, এভাবে উপরে উঠতে থাকবে। এভাবে উঠতে উঠতে তাকে বহু ‘আর্টিফিসিয়াল ফেস’র সম্মুক্ষিণ হতে হবে। যার সবগুলো ব্যুহ ভেদ করার সম্ভবও নয়। যার ফলশ্রুতিতে এক সময় সে ষড়যন্ত্রকারীদের তত্ত্ব মেনে নিবে। কেউ কেউ হয়ত নানান তত্ত্ব দিয়ে মেলাতে চেষ্টা করবে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেলানো কষ্টকর।
কিন্তু আপনি যখন উপর থেকে চিন্তা করবেন, তখন সোজা-
যেমন – এ অঞ্চলে এখন মুল মূল এক্টর কে কে ?
তাদের পলিসি কি কি?
মূল এক্টর আমেরিকা, ভারত আর চীন।
চীনের পলিসি হলো- ব্যবসীয়ক। মুক্তার মালা, ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড
আর তার বিপরীতে আমেরিকার পলিসি হলো অস্থিরতা তৈরী, পিভট টু এশিয়া পলিসি আর আমেরিকার সমর্থনে ভারতের লুক ইস্ট পলিসি
ব্যস এই টুকু নিয়ে যদি বিভিন্ন দেশে দেশে তাদের কর্মকাণ্ডগুলো নিয়ে একটা গ্রাফ তৈরী করেন, তবে বুঝে যাবেন, শ্রীলংকার ঘটনা কে ঘটাইছে, তাদের উদ্দেশ্য কি ?
এরপর সেই অনুসারে আপনি আপনার জাতির কথা চিন্তা করে নিজের পলিসি সাজান।
যেটা আমেরিকা-ভারত (মোদি) এর পক্ষেও যাবে না, আবার চীনেরও পক্ষে যাবে না।
এবার ধরুন রোহিঙ্গা-
আমেরিকা চায় রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে থাকুক,
আর মার্কিনপন্থী এনজিওগুলো তাদের মধ্যে ইনফিলট্রেট করে পরবর্তীতে তাদেরকে আমেরিকার পলিসির স্বার্থে এবং চীনের পলিসির বিপরীতে ব্যবহার করুক।
অপরদিকে চীন চায়- রোহিঙ্গারা যেন মার্কিনপন্থী এনজিওগুলো সাথে মিশতে না পারে। তাদের আইসোলেট করে রাখতে ভাসান চরে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে মার্কিনপন্থী এনজিওগুলো ঢুকতে পারবে না।
আওয়ামী সরকার এতদিন চীনা নীতির পক্ষে ছিলো এবং এখনও আছে।
কিন্তু আমেরিকানরা তাদের এনজিও মাধ্যমে টাকা ঢেলে, মিডিয়ার মাধ্যমে প্রেসার এবং বিভিন্ন বিদেশী কূটনীতিক ও সংস্থাদের দিয়ে হুমকি দিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে রাখতে চাইছে।
এখন রোহিঙ্গা ক্যাম্প নিয়ে সরকার-জাতিসংঘের মধ্যে যতো সংলাপ হচ্ছে বা বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে তা এই নীতির আলোকে বিশ্লেষণ করলে সহজে মিলে যায়।
এখন কথা হলো, আগে পুরো বিষয়টি বুঝতে হবে।
প্রত্যেকের পলিসি সম্পর্কে জানতে হবে।
তারপর কোনটা হলে কোন ব্লকের না বরং আমাদের দেশ ও জনগণের ভালো হয়, সেটা চিন্তা করে তারপর মতামত জানাতে হবে, অনলাইনে লিখতে হবে। তখন সেটাতে কাজ হবে, এর আগে না।
অনেকে বলে- লেখালেখি করে কি লাভ ? কোন কাজ হয় লেখালেখি করে ?
আমি তাদের বলবো- ভুল এ্যানালাইসিস বাদ দিন, সঠিক এ্যানালাইসিস করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।
তখন দেখবেন কাজ হবে।
মনে রাখবেন- রোগ সারানোর জন্য আগে রোগ নির্ণয় বেশি জরুরী।
সঠিক রোগ নির্ণয় করে সামান্য ওষুধ দিলেই তা সারানো সম্ভব।
কিন্তু ভুল রোগ ধারণা করে, সেই রোগের চিকিৎসা সারা জীবন করলেও তা সারবে না, বরং হিতে বিপরীত হবে।
যেমন- আমি প্রায় বলি, অমুকের পেছনে মার্কিন ব্লক আছে।
অনেকে বলে, ভুল। এগুলো পেছনে আছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’।
সত্যিই বলতে কি জানেন, যে ভারতের অর্ধেক মানুষ এখনও ল্যাট্রিনের অভাবে থাকে, এক তৃতীয়াংশ মানুষ পেটের ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যায়, সে ভারতের গোয়েন্দা পলিসি খুব উন্নত, এটা আমার কাছে মনে হয় না। কথায় আছে- “বনের বাঘে খায় না, মনে বাঘে খায়”। ভারত যতটুকু শক্তি রাখে, তার থেকে বড় কিছু যদি আমরা ভেবে রাখি, তবে সেটা কিন্তু ভারতের স্বার্থের পক্ষেই যায়। তাই কোন ঘটনা ঘটলে চোখ বন্ধ করে সেটা ভারতীয় র’ করছে, এটা বলার পক্ষপাতি আমি নই।
আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে সুপার পাওয়ার, এটা আপনাকে মানতেই হবে।
আপনি হয়ত তার অস্ত্রপাতি বিচার করে তাকে সুপার পাওয়ার মনে করেন,
কিন্তু বাস্তবে অস্ত্রপাতি নয়, বরং পলিসি সবচাইতে উন্নত বলেই সে সুপার পাওয়ার হতে পারছে।
আর তাছাড়া এসব পলিসি সে তো ইতিমধ্যে অনেক তৃতীয় বিশ্বের দেশে প্রয়োগ করে তাদের ধ্বংস করে আসছে। সেগুলো যদি আমরা না দেখে, ভারতকে বিরাট কিছু বানিয়ে বুক দুরু দুরু করি, তবে সেটা তো লাভের থেকে ক্ষতিকর বেশি হবে বলে মনে হয়।
বাংলাদেশের কিছু বিশেষ ব্যক্তি বা সংস্থার পেছনে যে বহুদূর ঘুরিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা আছে, সেটা আমার আবেগপূর্ণ কথা নয়, বরং দলিল দিয়েই আমি তা আজ থেকে ২ বছর আগে ব্যাখ্যা করেছি।
যেমন, তিনটি লেখা পড়ুন-
ক) নাস্তিক্যবাদীদের পেছনে কে (১)
(https://bit.ly/2s8oH1z)
খ) নাস্তিক্যবাদীদের পেছনে কে (২)
(https://bit.ly/2DAnbvi)
গ) নাস্তিক্যবাদীদের পেছনে কে ? (৩)
(https://bit.ly/2UMiEMa)
আমার মনে হয়, এই লেখাগুলো পড়লে কিছুটা অনুধাবন করতে পারবেন, মার্কিন ব্লকগুলো কিভাবে বাংলাদেশে কাজ করে, তারপরে অন্য স্ট্যাটাসে আরো বিষদ আলোচনা করবো, অপেক্ষায় থাকুন।