ইমপ্লাস টাওয়ারের আগুন লাগানোর সিসিটিভি দৃশ্য প্রকাশিত হয়েছে।এন.সি-৩৯২

ইমপ্লাস টাওয়ারের আগুন লাগানোর সিসিটিভি দৃশ্য প্রকাশিত হয়েছে
Image result for গাছ
ইমপ্লাস টাওয়ারের আগুন লাগানোর সিসিটিভি দৃশ্য প্রকাশিত হয়েছে (https://youtu.be/QJrujDrAV7E)। এই দৃশ্য দেখার পর এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে, এত ঘন ঘন আগুন লাগার পেছনে অবশ্যই কোন রহস্য আছে।
এবার আমাদের প্রথম দায়িত্ব কি ?-
প্রত্যেকে নিজ দায়িত্বে নিজ বাসাবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিং কমপ্লেক্স, বাজার, কারখানা,গুদাম হাসপাতালসহ সকল স্থাপনা ও যানবাহনে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুন। বহিরাগত কেউ এসে যেন আগুন লাগাতে না পারে সেজন্য সিকিউরিটি জোরদার করুন। আলাদা গার্ড রাখুন এবং নিয়মিত তদারকি করুন।
যে প্রশ্নসমূহ আমাদের সামনে আসলো-
১) সিসিটিভিতে আগুন লাগার দৃশ্য জনমম্মুক্ষে আসলো জনগণের সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে। কিন্তু সরকার ও প্রশাসন কেন তা আগে বলতে পারলো না, এই আগুন পরিকল্পিত বা কেউ লাগাচ্ছে ? জনগণকে কেন বলতে হলো ??
২) গান পাউডারের মাধ্যমে যদি আগুন লাগানো হয়, তবে অবশ্যই সেটা দমকল কর্মীদের বোঝার কথা। কিন্তু তারা প্রতিবারই ‘আগুন লাগছে শর্ট সার্কিট থেকে’’, ‘অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা না থাকার কারণে’, ‘অপরিকল্পিত জনবসতির কারণে’, ‘দাহ্য পদার্থের কারণে’, ‘কেমিকেলের কারণে’- এগুলো বলতেছে। তারা কেন মূল বিষয়টি এড়িয়ে যায় ?
৩) যদি সত্যিই আগুন লাগা ষড়যন্ত্র হয়, তবে সেটা উদঘাটন না করে কেন আগুন লাগার পরবর্তী ধাপ হিসেবে বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে, যেমন-
ক) ব্যবসা-শিল্প সরিয়ে সেখানে পর্যটন এলাকা করা,
খ) কর্পোরেটদের অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা ক্রয় করা,
গ) নতুন অত্যাধুনিক মার্কেট করা,
ঘ) রাজউকের নিয়ম মানার নাম করে চাদাবাজি চালু করা,
ঙ) পরিকল্পিত এলাকার নাম দিয়ে পুরাতনদের উচ্ছেদ করা।
চ) কূটনৈতিক পাড়া খালি করা।
৪) আগুন লাগার পর এমন মানুষ/ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, যারা এগুলোর সাথে জড়িত নয়। কিন্তু এমন কিছু মানুষের নাম এড়িয়ে যাওয়া হয়, যাদের আটক করলে মূল ঘটনা বের হওয়া সম্ভব। যেমন- পুরান ঢাকার আগুনের সূত্রপাত হয় একটি বিষ্ফোরণের মাধ্যমে। এবং সেই বিষ্ফোরণের কারণেই প্রাণহানি ঘটে। বলা হচ্ছে দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন ছড়িয়েছে, কিন্তু প্রথম বিষ্ফোরণটা কিভাবে ঘটলো সেটা কেউ বলছেও না, আলোচনাও করছে না। প্রথম বিষ্ফোরণটা যদি দোতালার পারফিউমের গোডাউন থেকে হয়, তবে ওয়াহিদ ম্যানসনের বাড়িওয়ালাকে না ধরে ঐ পারফিউমের গোডাউনের মালিককে কেন ধরা হচ্ছে না ? কেন তাকে নিয়ে মিডিয়ায় আলোচনা হচ্ছে না ? উল্লেখ্য ঐ গোডাউনের মালিক ছিলো মারোয়ারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান পার্ল ইন্টারন্যালশনাল এবং তার পার্টনার ছিলো ভারতীয় কোম্পানি ‘এ্যাডজাভিজ ভ্যানচার লিমিটেড ইন্ডিয়া’। বিষ্ফোরকস্থলের নাম কেন এড়িয়ে যাওয়া হলো, এটা আগে বের করা উচিত।
জনগণের ভুল কোথায় ?
জনগণের ভুল হলো অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা । জনগণ বিদেশী কর্পোরেটদের প্রভাবিত মিডিয়া ও সরকার এবং তার পক্ষ-বিপক্ষ দ্বারা প্ররোচিত হয়ে মূল আলোচনা থেকে সরে দিয়ে ভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। যেমন-
১) রিফাত রিয়া নিয়ে আলোচনা
৩) বনানী অগ্নিকাণ্ডের পর নাইমকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা
৩) হেলিকপ্টার পানি তুলতে পারলো কি না, সেটা নিয়ে অযথা আলোচনা।
মনে রাখবেন, যারা মূল কালপ্রিট তারা সব সময় চায়, জনগণ যেন মূল আলোচনায় না থাকতে পারে, তারা যেন বিভ্রান্ত হয়ে অন্য পথে আলোচনা করে, আর সেই সুযোগে তারা তাদের কার্যসিদ্ধি করবে। আমাকে অনেকে প্রশ্ন করে, এসব আগুন লাগলে আমাদের কি করার আছে? আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলবো, আপনি ফেসবুকে যে আলোচনা করছেন, সেটা অন্তত টু-দ্য পয়েন্টে করুন, অযথা ‘নাইম কে স্যালুট’, ‘হেলিকপ্টার পানি তুলতে পারলো না’- এসব ফালতু টপিকস তুলে মূল আলোকপাতকে গৌন করে তুলবেন না। সেক্ষেত্রে মূল কালপ্রিটরা যে ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যায়, সেটাতে জনগণের দায়ও কম নয়। সকল জনগণ যদি যদি একযোগে মূল পয়েন্টে আলোচনা করতে পারতো, তবে অবশ্যই ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হতো।
নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পরও আমি বলছিলাম,
মুসলমানদের আলোচনার বিষয়বস্তু হওয়া উচিত ছিলো, “খুনিকে ফাসি এবং তার সমগোত্রীয়দের নিষিদ্ধ ও দমন করার দাবী তোলা”। কিন্তু মুসলমানরা সেটা না করে জেসিন্ডা আরডেন মাথায় হিজাব পড়লো না আরবীতে উচ্চারণ করলো সেটা নিয়ে তাকে স্যালুট স্যালুট করে মুখে ফেনা তুলে মূল টপিকসকে ঘুড়িয়ে দিয়েছে। বাস্তবজীবনে খেয়াল করবেন, কোন আলোচনা সভা বা জরুরী মিটিং এর মধ্যে কিছু ফালতু কোয়ালিটির লোক থাকে, যারা হঠাৎ ফালতু বিষয়ের অবতারণা করে মূল আলোচনাকে ঘুড়িয়ে নিয়ে যায়, অধিকাংশ মানুষের দৃষ্টি ভ্রম করে। বাস্তব জীবনে কিন্তু আমরা এদের খুব নিন্দা করি। কিন্তু দেশ ও জাতি নিয়ে আমরা নিজেরাই যেহেতু চিন্তা করি না দেখে একই সমস্যা আমরা চিহ্নিত করতে পারি না। বরং নিজেরাই সেই অপ্রাসঙ্গিক আলোচনায় হাওয়া লাগাই, এবং মূল বিষয়ে আলোকপাত না করে আলোচনা অন্য দিকে ঘুড়িয়ে বেকুব হই, আর ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য সফল করতে সাহায্য করি।