কেন এই ভীতি !!! আজকে হাইকোর্টে কাচা তরল দুধের ৯৬ নমুনার ৯৩টিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এন.সি- ৩৫১

কেন এই ভীতি !!!
আজকে হাইকোর্টে কাচা তরল দুধের ৯৬ 
নমুনার ৯৩টিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে
Related image
কেন এই ভীতি !!!
আজকে হাইকোর্টে কাচা তরল দুধের ৯৬ নমুনার ৯৩টিতে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া রয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করেছে ‘‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ” বা বিএফএসএ।
৯৬টি কাচা তরল দুধের নমুনার মধ্যে ৯৩টিতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে বলে যে নতুন ‘আবিষ্কার’ মনে করা হচ্ছে, বাস্তবে এটা নতুন কোন আবিষ্কার নয়, বরং এটা পুরাতন একটি আবিষ্কার, কিন্তু কি কারণে এত পুরাতন জিনিস নতুন করে প্রকাশ করে আমাদের ভয় দেখানো হচ্ছে সেটাই আলোচনার বিষয়।
মূলত কাচা দুধের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এজন্য কাচা দুধকে পাস্তুরিত করা হয়। পাস্তুরিত করলে এই সব ক্ষতিকর প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। আবার বাসায় এনে আমরা সেই দুধ গরম করে ফুটিয়ে পান করি। ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে সকল ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মারা যায়, তবে এতে কিছু প্রোটিন ক্ষয় হয়। এজন্য ৬৩ ডিগ্রি সেলিসিয়াসে পাস্তুরাইজেশন করলে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া মরে কিন্তু পুষ্টি উপাদান ঠিক থাকে।
যেমন: খবরে দেখুন, কলিফরম ব্যাকটেরিয়ার কথা বলছে। যেটা স্তন্যপায়ীর কোলনে থাকে। অনেকে এটাকে মলের ব্যাকটেরিয়াও বলে। খাবার পানিতে অনেক সময় এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। ৬৩ ডিগ্রি সেলসিয়াতে ৩০ মিনিট পাস্তরিত করলে এই ব্যাকটেরিয়া অবশ্যই মরবে। আর ১০০ ডিগ্রিতে ফুটালে সেটার কথা চিন্তাও করতে হয় না। আবার সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ার নামও এসেছে। সকল ডেইরি প্রোডাক্টে এটা কমন অরগানিজম। এটাও ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে মারা যায়। তাই এসব ব্যাকটেরিয়া অনেক আগে থেকেই ছিলো, কিন্তু হঠাৎ করে তাদের নাম দিয়ে ভয় দেখানোর কারণ কি ?
আবার খবরে একটি কথা বলা হয়েছে, “ক্ষতিকর মাত্রায় বিদ্যমান”। এই কথাটা দেয়ার উদ্দেশ্যটা কি ?
কারণ-
প্রতি ২০-৩০ মিনিট পর পর ব্যাকটেরিয়া তার সংখ্যা দ্বিগুন করে। নমুনা সংগ্রহের পর তা কতক্ষণ পর কাউন্ট করা হয়েছে তা কিন্তু বলা হয় নাই। আর যত সংখ্যাই বৃদ্ধি করুক, পাস্তুরিত করলে বা ফুটালে সবগুলোই মারা পরবেই।
তাহলে অযথা এই ভীতি ছড়ানোর মূলে কে ?
১) বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের ডেইরি ও পোল্ট্রি শিল্পে হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। তারা যেসব প্রডাক্টিভ খাতে ঢুকবে সেখানে পতন অত্যাসন্ন।
২) ‘‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ” বা বিএফএসএ বলে যে সরকারি সংস্থাটি এই রিপোর্ট দিয়েছে, তাদের নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ মার্কিন এনজিও ‘ইউএসএইড’র ফান্ড, পলিসি ও লোকবল এই সংস্থাটির মধ্যে ইনফিলট্রেট করেছে। সুতরাং তাদের যেকোন প্রতিবেদন সম্রাজ্যবাদীদের পলিসির পক্ষে আসা স্বাভাবিক।
৩) আরলা ফুড বা ডানো’র অনেক দিনের প্ল্যান হলো তারা বাংলাদেশের বেসরকারি ডেইরি শিল্প ধ্বংস করে বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি করবে। ইতিমধ্যে তারা মিল্পভিটার সাথে গুড়া দুধের জন্য চুক্তিও করেছে। তারাই আড়াল থেকে বাংলাদেশের ডেইরি শিল্প ধ্বংস করতে কলকাঠি নাড়ছে বলে অনেকে মনে করে।

মূল কথা হলো,
বাংলাদেশের ডেইরি শিল্প নতুন সম্ভবনায় দ্বার উন্মু্ক্ত করেছিলো, যার মাধ্যকে কোটি তরুণের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং মানুষের দুধের চাহিদা পূরণ হচ্ছিলো। কিন্তু এর মধ্যে সম্রাজ্যবাদীদের চোখ পড়েছে। তারা কখনই চায় না, বাংলাদেশের কোন প্রডাক্টিভ খাত প্রতিষ্ঠিত হোক। তারা চায় আমাদের সকল প্রডাক্টিভ খাত ধ্বংস হয়ে যাক, আর আমরা তাদের উপর নির্ভরশীল হই।
No photo description available.