আমি কিন্তু আপনাদেরকে আগেই কর্পোরেটোক্রেসির বিরুদ্ধে একটা সহজ সূত্র শিখায় দিছি,
সেটা হলো, বলবেন- “উন্নয়ন চাই না, দাম কমান”
যখনই কোন কথিত উন্নয়ন পরিকল্পনা দেখবেন, তখন সোজা প্রশ্ন করবেন,
“আচ্ছা এর মাধ্যমে কি আমার চাল-ডাল-তেল-নুন-বাড়িভাড়া-ঔষধ-যাতায়াত ভাড়া কমবে ?
যদি কমে তাহলে ঠিক আছে, নয়ত এই উন্নয়ন বাদ দেন।”
এই সূত্রে যদি যেতে পারেন, তবে কর্পোরেটোক্রেসিকে সহজে দমন করতে পারবেন, নয়ত আপনারা ধরা।
সেটা হলো, বলবেন- “উন্নয়ন চাই না, দাম কমান”
যখনই কোন কথিত উন্নয়ন পরিকল্পনা দেখবেন, তখন সোজা প্রশ্ন করবেন,
“আচ্ছা এর মাধ্যমে কি আমার চাল-ডাল-তেল-নুন-বাড়িভাড়া-ঔষধ-যাতায়াত ভাড়া কমবে ?
যদি কমে তাহলে ঠিক আছে, নয়ত এই উন্নয়ন বাদ দেন।”
এই সূত্রে যদি যেতে পারেন, তবে কর্পোরেটোক্রেসিকে সহজে দমন করতে পারবেন, নয়ত আপনারা ধরা।
স্বাভাবিক দৃষ্টিতে পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন উচ্ছেদ অনেকের কাছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বলে মনে হতে পারে। পুরান ঢাকাকে খালি করে সেখানে পর্যটন এলাকা নির্মাণ করাকেও কারো কারো কাছে উন্নয়ন মনে হতে পারে, কিন্তু কথা হলো, এর মাধ্যমে কি জনগণের খাদ্যদ্রব্য-বাড়িভাড়া-যাতায়াত ভাড়া কমবে কি না, এটাই হইলো প্রশ্ন ।
আজকে দৈনিক আমাদের সময়ে খবর আসছে,
“অভিজানের কারণে কেমিক্যালের দাম অস্থিতিশীল”
(http://www.dainikamadershomoy.com/post/186733)
“অভিজানের কারণে কেমিক্যালের দাম অস্থিতিশীল”
(http://www.dainikamadershomoy.com/post/186733)
খবরটা সবাই পড়েন, দেখেনে ভেতরে লেখা আছে, কথিত অভিজানের কারণে বাজারে
(১) কস্টিক পারঅক্সাইড প্রতিকেজি ৫৫ টাকা ৬০ টাকা হইছে।
ফলাফল: এই কেমিক্যালটি টিস্যু পেপার, সাবান, ডিটারজেন্ট, পানি পরিশোধন, খাদ্য (পাওরুটি, কেক), ধাতব প্রসেসিং, কাপড়, কাচের দ্রব্য সামগ্রীসহ অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই এ কেমিক্যালের দামবৃদ্ধির কারণে উপরোক্ত দৈনন্দিন ব্যবহৃত দ্রব্য সামগ্রীর দাম বাড়বে।
ফলাফল: এই কেমিক্যালটি টিস্যু পেপার, সাবান, ডিটারজেন্ট, পানি পরিশোধন, খাদ্য (পাওরুটি, কেক), ধাতব প্রসেসিং, কাপড়, কাচের দ্রব্য সামগ্রীসহ অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়। তাই এ কেমিক্যালের দামবৃদ্ধির কারণে উপরোক্ত দৈনন্দিন ব্যবহৃত দ্রব্য সামগ্রীর দাম বাড়বে।
(২) গ্লোবাল সল্ট ১৬ টাকা কেজির স্থলে ১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল : ডিটারজেন্ট ও সাবান উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। তাই ডিটারজেন্ট ও সাবানের দাম বাড়বে।
ফলাফল : ডিটারজেন্ট ও সাবান উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। তাই ডিটারজেন্ট ও সাবানের দাম বাড়বে।
(৩) এসিডিক অ্যাসিড ১৩০ এর স্থলে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল: ভিনেগার এর দাম বাড়বে, এবং যেসব খাদ্যদ্রমে ভিনেগার ব্যবহার করা হয় তাদের দামও বাড়বে। এছাড়া ফুড গ্রেটেড প্লাস্টিক বোতলের দাম বাড়বে, ফলে প্লাস্টিক বোতলে বাজারজাত হয়, এমন সকল খাদ্রদ্রব্যের দাম বাড়বে। কাপড়ের দাম বাড়বে।
ফলাফল: ভিনেগার এর দাম বাড়বে, এবং যেসব খাদ্যদ্রমে ভিনেগার ব্যবহার করা হয় তাদের দামও বাড়বে। এছাড়া ফুড গ্রেটেড প্লাস্টিক বোতলের দাম বাড়বে, ফলে প্লাস্টিক বোতলে বাজারজাত হয়, এমন সকল খাদ্রদ্রব্যের দাম বাড়বে। কাপড়ের দাম বাড়বে।
(৪) সোডা অ্যাশের দাম ৩৬ থেকে বেড়ে ৩৯ টাকা হয়েছে।
ফলাফল : কৃষিতে সারের দাম বাড়বে, ফলে খাদ্যের দাম বাড়বে। কাপড়ের দাম বাড়বে।
ফলাফল : কৃষিতে সারের দাম বাড়বে, ফলে খাদ্যের দাম বাড়বে। কাপড়ের দাম বাড়বে।
(৫) মাদার অব অল কেমিক্যাল’ নামে পরিচিত সালফিউরিক অ্যাসিড ৪০০ টাকা কেজির বদলে এখন ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল : ঔষদের দাম বাড়বে। কাপড়ের দাম বাড়বে। সারের দাম বাড়বে, ফলে খাদ্যের দাম বাড়বে। ব্যাটারির দাম বাড়বে, ফলে যাতায়াত ভাড়া বাড়বে।
ফলাফল : ঔষদের দাম বাড়বে। কাপড়ের দাম বাড়বে। সারের দাম বাড়বে, ফলে খাদ্যের দাম বাড়বে। ব্যাটারির দাম বাড়বে, ফলে যাতায়াত ভাড়া বাড়বে।
(৬) ১০০ টাকা কেজির নাইট্রিক অ্যাসিড ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল : সারের দাম বাড়বে, ফলে সকল খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়বে।
ফলাফল : সারের দাম বাড়বে, ফলে সকল খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়বে।
(৭) ১৩৫-১৪০ টাকা কেজির ফসফরিক অ্যাসিড ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল: সারের দাম বাড়বে, ফলে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়বে, খাদ্যকে সুগন্ধযুক্ত করে, ফলে খাদ্যদ্রেব্যের এদিক থেকেও বাড়বে, হাসপাতালে ডেন্টাল কাজে ব্যবহৃত হয়, ফলে ডেন্টাল চিকিৎসার খরচ বাড়বে, প্রসাধনীর দাম বাড়বে।
ফলাফল: সারের দাম বাড়বে, ফলে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়বে, খাদ্যকে সুগন্ধযুক্ত করে, ফলে খাদ্যদ্রেব্যের এদিক থেকেও বাড়বে, হাসপাতালে ডেন্টাল কাজে ব্যবহৃত হয়, ফলে ডেন্টাল চিকিৎসার খরচ বাড়বে, প্রসাধনীর দাম বাড়বে।
(৮) ৬০-৭০ টাকা কেজির কার্বলিক অ্যাসিড বর্তমানে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল: ঔষধ শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ঔষধের দাম বাড়বে।
ফলাফল: ঔষধ শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ঔষধের দাম বাড়বে।
(৯) স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাকোয়া রেজিয়া আগে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ফলাফল : দেশের মার্কেটে স্বর্ণের দাম বাড়বে।
ফলাফল : দেশের মার্কেটে স্বর্ণের দাম বাড়বে।
খবরের ভেতরে পড়ে দেখুন, লেখা আছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন ১৮-২০ হাজার টন কেমিক্যাল দরকার হয়, যার ৮০% সরবরাহ করা হয় পুরান ঢাকার গোডাউন ও কারখানা থেকে। এই যে এত বড় একটা মার্কেট অস্থিতিশীল করা হইলো শুধু এতটুকুর ফলাফল বাংলাদেশের মানুষের জন্য কতটা ভয়ঙ্কর হবে, আমার মনে হয় সাধারণ মানুষ বুঝতেও পারে নাই। এরপর উচ্ছেদের মাধ্যমে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হইলে ভয়াবহতার কথা না হয় বাদই দিলাম।
পুরান ঢাকায় যখন আগুন ধরলো, আমি বিষয়গুলো আগে থেকে বুঝতাম দেখেই বিষয়গুলোর বিরোধীতা করেছি। কিন্তু অনেক ফেসবুক ইউজার বিষয়গুলো আসলে এতদূর গড়াতে পারে, কিংবা এর এফেক্ট কতদূর সেটা সম্পর্কে কোন ধারণা নাই, তাই তারা মিডিয়া তাদের যেদিকে নিয়ে গেছে সেদিকেই পা বাড়াইছে।
কেমিক্যাল বা বিভিন্ন দ্রব্যের কাচামাল নিয়ে যে সঙ্কট তৈরী হয়েছে, এটা খুব ভয়ঙ্কর একটা বিষয়। যেহেতু বিষয়টি কাচামালের সাথে সম্পৃক্ত, তাই পন্যদ্রব্যে এফেক্ট পড়তে ৩ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এতে চালের দাম ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, সবজীর দাম ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, ঔষধের দাম ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, কাপড়ের দাম ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা গজ, ডিটারজেন্ট পাওডার ৭০ টাকা থেকে ৯০ টাকা, সাবান ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা হলেও অবাক হওয়ার কিছূ থাকবে না। পুরান ঢাকায় ৭০ জন মারা যাওয়াতে যারা কান্নাকাটি করছিলেন, তখন তাদের ৭ হাজার লোকের খাদ্য ও ঔষধের অভাবে মৃত্যুর খবরও শোনার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।