আমি আগেই বলেছি, আগ্রাসন ৩ প্রকার- সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক। এন.সি- ৩৪৬

আমি আগেই বলেছি, আগ্রাসন ৩ প্রকার- সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক।
Image result for সাগর
আমি আগেই বলেছি, আগ্রাসন ৩ প্রকার- সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক।
আগ্রাসীরা চায়, আপনি তাদের সংস্কৃতি গ্রহণ করেন, তাহলে মন-মগজ-আচার-ব্যবহারে আপনি তাদের মত হয়ে যাবেন, তখন আপনাকে আগ্রাসন করা অনেক সহজ হবে। এজন্য তারা নানানভাবে নিজের সংষ্কৃতি আপনার মধ্যে প্রচার ঘটায়।
যেমন ধরেন-
বর্তমানে একটা সংস্কৃতির খুব প্রচার হচ্ছে, তার নাম ‘কুকুর সংষ্কৃতি’। পশ্চিমারা কুকুরকে খুব ভালোবাসে, তারা কুকুরকে গায়ে হাত দিয়ে আদর করে, মুখে চুমু দেয়, একপ্লেট থেকে খায়, একই বিছানায় ঘুমায়। বাঙালীরাও যে কুকুর পালে না, তা নয়। কিন্তু বাংলাদেশীদের কাছে কুকুরের স্থান রাস্তায়, পাহাড়া দেয়ার জন্য, এর বেশি নয়। যদি কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যায়, তবে তারা সিটি কর্পোরেশনে খবর দেয়, ব্যস সিটি কর্পোরেশনের লোক এসে বাড়তি কুকুর মেরে নিয়ে চলে যায়। কিন্তু অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে কিছু বিদেশী মদদপুষ্ট এনজিও সক্রিয় হয়েছে কুকুরের প্রতি অতি দরদ প্রমোট করে। ফেসবুক, মিডিয়া ও ফিল্ডে বেশি কিছু কার্যক্রম করেছে বাড়তি কুকুর নিধনের বিরুদ্ধে। কিন্তু এর ফলে সমস্যা হয়েছে পাবলিকের। রাস্তায় গিজ গিজ হয়ে গেছে কুকুর, বিভিন্ন এলাকায় কুকুরের কামড়ে শত শত আহত হচ্ছে। রাতে অনেক এলাকায় চলাচলে হয়ে গেছে বিরাট সমস্যা। আসলে পশ্চিমা কালচার বাংলাদেশে চালু করা কখনই সম্ভব না। বাংলাদেশের আবহাওয়া যে কোন প্রাণীর জন্মবিস্তারের জন্য খুব উপযোগী। বাংলাদেশে নিয়মিত কুকুর নিধন না করলে বিরাট সমস্যা হবে, রাস্তায় রাস্তায় কুকুরের সংখ্যা বাড়বে, যা ইচ্ছা অনিচ্ছায় তৈরী করবে বিরাট সমস্যা। হয়ত কোন কোন কুকুরকে জলাতঙ্কের টিকা দিতে পারে, তবে সেটা দিলে কুকুর নিধন বন্ধ রাখা যাবে না।
আমি দেখছি, বিভিন্ন এনজিও বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে উব্ধুদ্ধ করছে, ‘কুকুর প্রেম জাগিয়ে তুলতে’।
আমি সেই সব তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্য বলবো- কোন প্রাণীর প্রতি ভালোবাসাকে আমি তুচ্ছ বলি না। তবে বাংলাদেশের যে পরিস্থিতি তাতে মানুষ নিয়ে আগে চিন্তা করার দরকার, মানুষের জন্য কি করা যায় সেটা নিয়ে ভাবা দরকার। কুকুরের পেছনে যে মন-মস্তিষ্ক, আর কায়িক শ্রম ব্যয় করতে চাইছেন, সেটা আগে মানুষের জন্য ব্যয় করুন, কারণ বাংলাদেশের মানুষ এখনও তার মানবিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।
এতো গেলো কুকুর সংষ্কৃতি, আরো কিছু সংষ্কৃতি আমার চোখে লেগেছে। যেমন: নারীবাদী একটা কমিউনিটি চালু করতে চাইছে ‘ন্যাপকিন’ সংস্কৃতি। “একজন গরীব নারীকে ১০টি টাকা দেন, না- একজন গরীব নারীকে একটি ন্যাপকিন দেন। ” বিরাট সম্মেলন কইরা স্কুল ছাত্রীদের ন্যাপকিন দেয় শিক্ষকরা। ক্লাসে চিটার এসে বলে দেয়, কোন ছাত্রীর ব্যাগে ন্যাপকিন না থাকলে বহিষ্কার।
আহহারে, এতদিন কত নারী স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি পাশ করলো, তাদের ব্যাগে বই ছিলো, কিন্তু নাপকিন ছিলো না। তাহলে কি তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার অযোগ্য ??
এতো গেলো ন্যাপকিন রাখা নিয়ে, এবার আসুন ন্যাপকিন কেনা নিয়ে।
গত কয়েকদিন আগে দেখেছিলাম, একটা মহল প্রচার করতেছে- মেয়েদের ন্যাপকিন কিনতে হবে বাবাকে দিয়ে, আবার মা’কে তার পুত্র সন্তানকে বলতে হবে মেনস্ট্রুয়েশন সাইকেলের কথা। কিছুদিন আগে দেখলাম ছাত্রীরা যেন ক্লাসে তার পুরুষ সহপাঠীর সাথে তার মেনস্ট্রুয়েশন সাইকেল নিয়ে আলোচনা করে সেটাতেও উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।
এবার আরেকটা কালচারের কথা বলি, সেটা আমার নতুন করে চোখে লাগছে। যদিও অনেক আগে থেকেই বিষয়টি ছিলো। এই কালচারটা হলো ‘ক্রস ড্রেসার’। অর্থাৎ একজন পুরুষ নারী পতিতাদের মত করে সাজবে (হিজরা নয়)। হুমায়ুন আহমেদ ঘেটুপুত্র নামক মুভি করে বিষয়টি দেখিয়েছে, কিন্তু সেটা ছিলো শিশু ছেলেদের মেয়েদের পোষাক পরানো। কিন্তু ক্রস ডেসারটা বয়স্ক পুরুষকে দেখা যায়। অতি সম্প্রতি ফেসবুকে এনজিও মদদপুষ্ট বিভিন্ন আইডি দেখা যাচ্ছে, যারা ক্রস ড্রেসার কালচারটা ফেসবুকে প্রমোট করছে। আসলে এগুলো ইহুদী সম্রাজ্যবাদীদের কাউন্টার কালচারের অংশ। ইহুদী বিলিয়নার জর্জ সরোস তার ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনে ৩২ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করেছে এসব কাউন্টার কালচার প্রমোট করার জন্য।
শেষ করবো, আরেকটি বিষয় দিয়ে,
মা-ছেলে মধ্যে ছবি তোলার বিষয়টি নিয়ে। আজকাল একটা গ্রুপ গজিয়েছে, যারা মা-ছেলের মধ্যে এমনভাবে ছবি তুলে যেন প্রথম দেখায় অনেকে মা-ছেলেকে প্রেমিক-প্রেমিকা মনে হরে। আসলে একটা পশ্চিমাদেশে অনেক পুরাতন কালচার। তারা ইনসেস্ট কালচারে বিশ্বাসী। তারা ফেসবুকে মা-ছেলে এমন ছবি আপলোড করে যেন মনে হয় যেন তাদের মধ্যে ভিন্ন সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু অতি সম্প্রতি বাংলাদেশে একটা গ্রুপ এটা প্রোমোট করতে চাইতেছে, পশ্চিমবঙ্গে অনেক আগে আসছে কালচারটা। তারাও বাংলাদেশে সে সংস্কৃতি ঢুকানোর জন্য চেষ্টা করেছে। এর আগে প্রেগনেন্ট মহিলার পেটের মধ্যে স্বামী কান লাগিয়ে ছবি আপলোড দেয়ার কালচার বাড়ছিলো, সম্ভবত সেটা কমে গেছে। মা-ছেলের মধ্যে কূটউদ্দেশ্য বানানো ছবির কালচারটা যেন বাংলাদেশে বিস্তার না করতে পারে, সে জন্য আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে।