বিএনপি’র কিছু এমপি শপথ নিলেন এবং ফখরুল শপথ নিলেন না।এন.সি- ৩৫২

বিএনপি’র কিছু এমপি শপথ নিলেন এবং ফখরুল শপথ নিলেন না।
Image result for সাগর
বিএনপি’র কিছু এমপি শপথ নিলেন এবং ফখরুল শপথ নিলেন না।
এটা নিয়ে কয়েকদিন মিডিয়া খুব গরম ছিলো।
ঘটনা অবজারভেশন করে, আমার কিছু চিন্তা ছিলো, যাস্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করছি-
আমার কাছে পুরো ঘটনা অবজারভেশনে মনে হয়েছে,
এটা বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামীলীগ-ডেমেক্র্যোট ব্লক টানাটানি।
আওয়ামীলীগ চাইছে বিএনপি সংসদে আসুক, তাতে ‘নির্বাচন অবৈধ হয়েছে’, এটা বলার যেন আর সুযোগ না থাকে।
অপরদিকে, বিএনপিকে সর্বদা আওয়ামী বিরোধীতায় ব্যবহার করতে চায় অদৃশ্য মার্কিন ডেমোক্র্যাট ব্লক। তাই বিএনপির কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত হওয়ার সত্ত্বেও তারা চায় না বিএনপি সংসদে যাক, তাদের ভয়-“বিএনপি যদি আওয়ামীলীগের হাতে চলে যায়”। তাই ডেমোক্র্যাটদের মুখপাত্র দৈনিক প্রথম আলো, বিবিসি’র এ ইস্যুতে চিৎকার থামছে না। তারা বার বার বিএনপিকে ভয় দেখায়-বিএনপি যদি আওয়ামীলীগের ঘরে যায়, তবে বিএনপির ‘শেষ’ ঘটে গেলো। বিএনপিকে গৃহপালিত বিরোধীদল বানানো হবে। মুসলিম লীগ, কেএসপি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি এবং জাসদ- এদের মত হাল হবে বিএনপির।
বাস্তবে আমার কাছে, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নীতি এবং ফিল্ড পর্যায়ের নীতির মধ্যে একটা দো’টানা লক্ষ্য করা যায়। সম্ভবত তারেক রহমান মার্কিন ডেমোক্র্যাট ব্লকের ঘরে হাটতে চায় না, কিন্তু ফিল্ড পর্যায়ের লোক ঐ ঘরে পা দিয়ে রাখতে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করেই হাটে।
এক্ষেত্রে আমার মনে হয় বিএনপি ও জামায়াতের কিছু কৌশলগত ‍ভুল আছে।
ডেমোক্র্যাট ব্লক সদস্যরা সর্বদা আওয়ামীবিরোধীতার একটা প্লট তৈরী করে দেয় এবং বিএনপি-জামায়াতকে আহবান করে সেই প্লটে আওয়ামীলীগের বিরোধীতা করার জন্য। যেহেতু ‘আওয়ামীবিরোধীতা’ সেহেতু তারাও চোখ বন্ধ করে ঝাপিয়ে পড়ে। আমার কাছে এটা ভুল মনে হয়। কারণ ডেমোক্র্যাটরা এমন প্লট তৈরী করে, যেখানে অনেক প্যাচ আছে। এই প্যাচে পড়লে মূল সত্যটা বিএনপি-জামায়াতের কাছে পৌছে না, আবার ফলটা চলে ডেমোক্র্যাট ব্লকের ঘরে।
এটা যে ‘ভুল’ তার দলিল হচ্ছে, এই পলিসিতে চলার কারণে বিএনপির অবস্থা এখন করুণ, জামায়াত ইতিমধ্যে ভেঙ্গে গেছে। অপরদিকে আওয়ামীলীগ টানা ৩ বার ক্ষমতায়। ডেমোক্র্যাটরা আওয়ামী বিরোধীতারা জন্য জামায়াত ও বিএনপিকে ব্যবহার করেছে এবং দিনশেষে ‘ফল’ নিজের ঘরে তুলেছে এবং ক্ষয় হয়েছে বিএনপি-জামায়াতের। বাস্তবতা হচ্ছে, বর্তমান রাজনীতির মূল গেমকোটে আওয়ামীলীগ-ডেমোক্র্যাট লড়াই চলছে, আর বিএনপি-জামায়াত চলে গেছে সাইড বেঞ্চে।
ক্রিকেট খেলায় ‘পিচ’ বলে একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর আছে। যে দেশে খেলা হবে, তারাই পিচ বানায় এবং তারা চায় সবাই এ পিচে খেলুক। এতে দেশী দল যত দুর্বল হোক, দিন শেষে তার জয়লাভ হওয়ার সম্ভবনা বেশি। ঠিক তেমনি, রাজনীতির মাঠে সবাই চায়, তার কোটে এসে সবাই খেলুক, এতে সে সুবিধা পাবে। জামায়াত-বিএনপি হয়ত ভাবে, আওয়ামীবিরোধীতার ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাট ব্লককে আমরা ব্যবহার করবো, সেই ফল আমাদের ঘরে আনবো। কিন্তু বাস্তবতা হলো ডেমোক্র্যাট পলিসি ও কার্যগত অনেক শক্তিশালী, তাই দিনশেষে ফলটা চলে যায় ডেমোক্র্যাটদের কাছে, আর ‘বি-ফল’ গিয়ে আঘাত করে বিএনপি-জামায়াতকে।
আমার মনে হয়, জামায়াত বিএনপির এখন সময় আছে, তাদের উচিত পলিসিগত স্ম্যার্ট হওয়া। দল-মতবাদ-ব্লকগুলোকে বুঝা এবং সে অনুপাতে সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন- একটা উদাহরণ দেই,
ছাত্রলীগের মূল অংশটা কন্ট্রোল করে লিয়াকত আলী শিকদার গ্রুপ। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় অংশের সাথে এটা নিয়ে কিন্তু অনেক দ্বন্দ্ব। এই যে ছাত্রলীগের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব, এটা খুব সুন্দরভাবে ব্যবহার করেছে ডেমোক্যাট ব্লকরা। এই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে কিছুদিন আগে একটি ছাত্র আন্দোলন তারা দাড় করিয়ে দেয় এবং তা সরকারের গদি ধরে পর্যন্ত টান দেয় (যদিও ডেমোক্র্যাট ব্লক শেষ পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে নাই)। আমার কথা হলো, ডেমোক্র্যাটরা কত সুন্দর আওয়ামীলীগকে আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে দাড় করিয়ে দিলো, কিন্তু বিএনপি-জামায়াত এতদিন বিরোধীদল থেকেও সেই বিভেদটা ব্যবহার করতে পারেনি।
আমার মনে হয়,
বিএনপি-জামায়াতের প্রথম কাজ হতে পারে, ডেমোক্র্যাটদের পথে না হাটা।
এমনকি সেটা যদি আওয়ামীলীগের বিরোধীতার জন্য হয়, তবুও।
একইসাথে পৃথক পলিসি তৈরী করা, যেটা অবশ্যই ডায়নামিক হবে গোয়ার্তুমি করে নয়।
যেটা দিয়ে একদিকে নিজের অবস্থান শক্ত করা যাবে এবং অন্যদিকে প্রতিপক্ষের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে।