সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া মিথিলা-ফাহমি’র ছবি দেখে ৪টি কথা মাথায় আসছে-। এন.সি-৮০

Related image
সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া মিথিলা-ফাহমি’র ছবি দেখে ৪টি কথা মাথায় আসছে-
(১)
ডিভোর্সের আগে যখন মিথিলা-তাহসানের একত্র ছবি নিয়ে কিছু পাবলিক স্ট্যাটাস দিতো,
“এটাই হলো সবচেয়ে সুখী দম্পত্তি।”
আমি তখন মনে মনে অবজেশন দিতাম।
আমি চিন্তা করতাম, একজন স্বামী যখন দেখে তার স্ত্রী অন্য পুরুষের বুকের মধ্যে জড়িয়ে আছে,
আর স্ত্রী যখন দেখে তার স্বামী অন্য নারীর সাথে জড়িয়ে আছে, তখন সেটা যতই অভিনয় বলা হোক,
বাস্তবে ঐ দম্পত্তি কখন সুখী হতে পারে না। অন্তত ঐ দম্পত্তির কাছে দাম্পত্য সুখ মুখ্য নয়,
নাম, যশ, খ্যাতি, অভিনয় ক্যারিয়ার বা অর্থ-সম্পদ মুখ্য।
তাই সুখের ছবিগুলো অভিনয় ছাড়া কিছু হতে পারে না।
এটা শুধু তাহসান-মিথিলা সব অভিনেতা-অভিনেত্রী সম্পত্তির জন্য সত্য।
সেটা অনুধাবন করে বাস্তব জীবনে কেউ অভিনয় না করতে চেয়ে ডিভোর্স নিয়ে নেয়।
অথবা কেউ নাটক-সিনেমা থেকে পালিয়ে বিদেশে গিয়ে ঘর সংসারে মনযোগী হয়।
(২)
মিথিলা এখন যে স্টেজে আছে, এটা খুব ভালো স্টেজ। যে সব পুরুষ আড়ালে থেকে নারীবাদী তৈরী করে, তারা এই মিথিলার মত মেয়েই চায়। কথা হলো- যেসব পুরুষ আড়ালে থেকে ‘নারীবাদ’ তৈরী করে, তারা কেমন নারী চায় ? এর উত্তর আমি পেয়েছিলাম, চট্টগ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইউএসটিসির শিক্ষক মাসুদ মাহমুদের কাছে। সে কিন্তু কথায় কথায় তার ছাত্রীদের কাছে সেই কথাগুলোই বলেছিলো, যে কথাগুলো আসলে নারীবাদীদের পেছনে থাকা পুরুষদের কথা। তারা চায়, নারীরা সেই ডাইসে তৈরী হোক। মাসুদ মাহমুদের ভাষায়-
“একজন মেয়ের এক পার্টনারের সাথে বেশিদিন শারীরিক সম্পর্ক রাখা উচিত নয়, পরিবর্তন প্রয়োজন।….একটা মেয়ের যে পরিমাণ সেক্স থাকে, সে চাইলে ৫টা ছেলেকে তৃপ্ত করতে পারে।….মেয়েদের উচিত ছেলেদের শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষার জন্য বিয়ের আগে ছেলেটির সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা।…..(বিবাহিত ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে).. “তুমি কেন বাচ্চা নিছো ? তুমি বাচ্চাকে দুধ খাওয়াও ? এই জন্যই তো তোমার শরীরের এই অবস্থা। বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালে তোমার ফিজিক্যাল এট্র্যাকশন চলে যাবে। দেখা যাবে ছেলেরা আর তোমার দিকে তাকাচ্ছে না।….আমাকে খুশি করতে হবে। আমাকে কিভাবে খুশি করতে হয়, সেটা তোমরা মেয়েরা ভালো করেই জানো।” (https://bit.ly/2CiMBN8)
নারীবাদীরা যত কথাই বলুক, যে সব পুরুষ আড়াল থেকে নারীবাদী তৈরী করছে, তাদের আসল উদ্দেশ্য এটাই, যা মাসুদ মাহমুদ লুকিয়ে ছাপিয়ে বলে দিছে। আর আর নারীবাদীরা মুখে যতই নিজের অধিকার নিয়ে কথা বলুক, তারা ইচ্ছা হোক অনিচ্ছায় হোক মাসুদ মাহমুদদের সেই গোপন উদ্দেশ্যর দিকেই ধাবিত হচ্ছে।
(৩) সেলিব্রেটি ওরশিপ বা সেলিব্রেটি পূজা নিয়ে দেড় বছর আগে একটা লেখা দিছিলাম (https://bit.ly/33wfJg1)
সেলিব্রেটি শব্দটা নতুন শব্দ, আগের এর সমার্থক শব্দ ছিলো ‘তারকা’।
মাঝসমুদ্রে নাবিক তারকা দেখে যেমন তার দিক নির্ণয় করে জাহাজকে গন্তব্যে পৌছায়।
ঠিক তেমনি আম জনতা এইসব সেলিব্রেটি বা তারকাদের অনুসরণ করে নিজেকে বিরাট হোমরা-চোমড়া মনে করে।
মূলতঃ এই সব তারকা বা সেলিব্রেটিদের তৈরী করা হয় কপোরেট উদ্দেশ্য পণ্য বিক্রির জন্য।
এরা উপর দিয়ে খুব ফিটফাট হয়, কিন্তু ভেতর দিয়ে হয় সদরঘাট। জনগণকে তাদের বাহ্যিক সূরত দিয়ে আকৃষ্ট করা হয়,
বোকা জনগণ এদেরকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ, শ্রেষ্ঠ অনুসরণীয়, শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী ইত্যাদি ইত্যাদি বলে,
তারকার মত অনুসরণ করতে শুরু করে।
কিন্তু বাস্তব হলো এদের ভেতরের নোংরা অংশ দেখলে সমাজের নিম্ন অংশে বাস করা মানুষটাও তাদের থুথু ছিটিয়ে দিবে।
মূল কথা- এসব কথিত সেলিব্রেটি বা তারকারা মুখে যতই ভালে দাবী করুক, বাস্তবে তারা ভালো নয় অথবা ভালো থাকতে পারে না।
আর কেউ চাইলেও ভালো থাকতে পারবে না, ছিটকে পড়বে- এটাই বাস্তবতা ও ধ্রুব সত্য।
(৪)
একটা কথা প্রচালিত আছে- “ময়লা ঘাটলে গন্ধ বের হয়”।
আর গন্ধ যত বেশি, এফেক্টেড হওয়া লোকের সংখ্যা তত বেশি।
এইসব সেলিব্রেটি নামক ব্যক্তিদের ময়লা জীবন যত বেশি ঘাটাঘাটি করা হবে,
যত বেশি গন্ধ নিগর্ত হবে, সেই গন্ধে তত বেশি মানুষ অসুস্থ হবে।
আজকে মিথিলা স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য কারো সাথে লিভ টুগেদার করতে পারে,
সেটাকে উদাহরণ হিসেব ব্যবহার করে আরেকটা মানুষ সেই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
ইতিমধ্যে একটি মহল মিথিলা-ফাহমি’র ঘটনাকে পূজি করে সমাজে “লিভ টুগেদারের প্রয়োজনীয়তা”, “ব্যক্তি স্বাধীনতা’র নামক লাগমহীনতা গুরুত্ব নিয়ে ব্যাপক প্রচার প্রসার শুরু করেছে। সাধারণত অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে কাজ করে ডেমোক্র্যাট ব্লকের লোকেরা। এটা তাদের একধরণের পলিসি, তারা নিজেদের ময়লা নিজেরাই দেখিয়ে সমাজে তার বিস্তৃতি ঘটায়, অতঃপর আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে সেই ময়লা কালচারকে বৈধতা দিতে চায়। তাই এসব নোংরা নিয়ে ঘাটাঘাটি না করে এড়িয়ে যাওয়ায়ই ভালো।