পুতুলের আজ মুখ ফুটেছে, আজ সে ন্যায্য ভাগ চায়। এন.সি- ১০০

পুতুলের আজ মুখ ফুটেছে, আজ সে ন্যায্য ভাগ চায়

পুতুলের আজ মুখ ফুটেছে, আজ সে ন্যায্য ভাগ চায়
Related imageগ্রাম গঞ্জে চলে পুতুল নাচ। পুতুলের হাতে পায়ে মাথায় সুতা বেধে আড়াল থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়, পাবলিক দেখতে পায় না। পুতুলকে দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন কাহিনী। সেই কাহিনী দেখতে জড়ো হয় হাজার হাজার লোক। মিশে যায় পুতুলের অঙ্গ-ভঙ্গীতে। হারিয়ে যায় কল্পনার রাজ্যে। ভাবে, এটাই বুঝি সত্য, এটাই বুঝি জীবন, এটাই বুঝি জীবনের সব কিছু। কিন্তু দর্শকের সেই ভাব-আবেগে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেয়, পুতুল নাচের আয়োজকরা। কিছু পকেটমার পাঠিয়ে বেখেয়াল দর্শকের পকেট কেটে নেয়। দর্শকরা তার টের পায় না।
পুতুল নাচ শেষে বাড়ি ফিরে যায় দর্শক। বাড়ি ফিরে গিয়ে টের পায় তার পকেট কাটা, হারিয়ে গেছে সারা মাস চলার প্রয়োজনীয় টাকা। সারা মাস সে কিভাবে চলবে, সেই চিন্তা তাকে ব্যথিত করার ছিলো। কিন্তু না টাকা হারানো থাকে চিন্তিত করে না, কারণ তার মনের মধ্যে তখনও গেথে আছে পুতুল নাচের কাহিনী, এখনও যেন সে স্পষ্ট পুতুলের রাজা-রানী-রাজপুত্র-রাজকণ্যার কাহিনী দেখতে পাচ্ছে। পুতুল নাচের আবেগ, উত্তেজনা, হাসি-কান্নার চিন্তাগুলো মনে করতেই সে ভুলে যায় পকেটে প্রয়োজনীয় টাকা হারানোর দুঃখ। পুতুল হাসি কান্নার ঘটনাগুলোকে যেন তার সারা মাস অর্থ সংকটে সংসার চালানোর কষ্টগুলো ভুলিয়ে দেয় প্যাথেডিনের মত।
এদিকে,, হটাৎ করে সেই পুতুলগুলো চিন্তা করলো, আচ্ছা, আমাদের মালিক আমাদের দিয়ে নাচ দেখিয়ে কত মানুষের পকেট মারে। কত লক্ষ টাকা লুটে নিয়ে যায়। কিন্তু মাস শেষে আমাদের আদর যত্নের জন্য কত টাকা খরচ করে ? মাত্র কয়েকশ’ টাকা ! এত কম দিবে কেন ? মালিক যদি লক্ষ টাকা কামাই করে, তবে আমাদের জন্য তো কম করে হাজার টাকার ভাগ দেয়া উচিত। আমরা যদি সঠিক ভাবে নাচ না দেখাতাম, পাবলিককে মাতিয়ে না রাখতাম, তবে কি সে আড়াল থেকে পকেট কাটতে পারতো ?
আয়, আমরা সব পুতুলরা আন্দোলন ডাকি, আমাদেরকে প্রাপ্য টাকার ন্যায্য ভাগ দিতে হবে। নয়ত আমাদের নাচ বন্ধ। দেখি কি করে ? আমরা স্টেজে উঠে পাবলিককে বলে দেবো, এইসব কাহিনী দেখে তোমরা আবেগ আপ্লুত হইয়ো না, এগুলো সব বানোয়াট, আড়াল থেকে সুতা দিয়ে আমাদের নিয়ন্ত্রণ করে এইসব কাহিনী বানানো হয়।
ব্যস যেই কথা সেই কাজ। পুতুলদের আন্দোলন শুরু।
এদিকে পুতুলদের আন্দোলনের ডাক শুনে তো মালিকের মাথায় হাত !
মালিক বলে, আরে এই পুতুল নাচ দেখায় আমি পাবলিককে ভুলায় রাখি, আর সেই সুযোগে তাদের পকেট মেরে লক্ষ লক্ষ টাকা কামাই। তারা যদি পাবলিককে ভুলায় না রাখে, তবে আমি পাবলিকের পকেট মারবো কিভাবে ?
যা বাবা যা, তোদের ভাগ আরেকটু বাড়ায় দেবো নি। তোদের খুশি করে দেবো। তবু তোরা নাচ থামাইস না।
ব্যস খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে পুতুলের মালিক পুতুলদের সব দাবি-দাওয়া মেনে নিলো, আর পুতুলদের আন্দোলনও শেষ হয়ে গেলো।
বি: দ্র: এটা পুতুল নাচের একটা কাল্পনিক ঘটনামাত্র। এর সাথে বর্তমানে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের কোন যোগসূত্র নাই।