রাজধানীতে এবার ইসকন দখল করলো হাসপাতালের ১৫৬ কাঠা জমি। এন.সি-৭৯


Related image
রাজধানীতে এবার ইসকন দখল করলো হাসপাতালের ১৫৬ কাঠা জমি
সম্প্রতি কাউন্সিলর মঞ্জু বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে রাজধানীর টিকাটুলির আশ্রমের জমি উদ্ধারের কথা অনেকেই শুনেছেন। কিন্তু এক দখলদারের হাত থেকে সেই জমি নতুন কোন দখলদারের হাতে পড়লো কি না, সেই খবর কিন্তু কারো কাছে নেই।
মূলত এই জমির মালিক ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব (জিসি দেব)। স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর আগেই নিজের জীবদ্দশায় ট্রাস্ট করে ওই জমি দান করে জিসি দেব। তবে শর্ত দেয়, সেখানে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল বানাতে হবে। সে অনুযায়ী জমির একাংশে এনটিআরএস (ন্যাশনাল টিউবারক্লোসিস রিহ্যাবিলিটেশন সোসাইটি) দাতব্য চিকিৎসালয় নামের একটি ছোট হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়। যার তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করা হয় বিশিষ্ট চিকিৎসক (পরবর্তী সময়ে জাতীয় অধ্যাপক) নুরুল ইসলামকে। পাকিস্তান সরকারের বরাদ্দ দেওয়া ৫০ হাজার টাকায় সেখানে একটি একতলা ভবনও তৈরি করা হয়। তৎকালীন পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ১৯৬৩ সালে হাসপাতালটি উদ্বোধনও করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে জিসি দেব নিহত হয়। উল্লেখ্য জিসি দেব ছিলো গুজরাট বংশোদ্ভূত ব্রাহ্মণ, তার মূল নাম গোবিন্দচন্দ্র দেব পুরকায়স্থ। তার পালিত কণ্যার নাম রোকেয়া সুলতানা। তার বা তার ট্রাস্টের সাথে ইসকন বা তার সহধর্মীদের কোন সম্পর্ক নেই। (https://bit.ly/2oQy0Fs)
গণ্ডগোলটা শুরু হয়, ২০১২ সালে। যখন- সাবেক প্রধান বিচারপতি ইসকন সদস্য এসকে সিনহার বন্ধু ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুব্রত চৌধুরী, রানা দাশ গুপ্ত দাবী করে বসে, পূজা অর্চনার উদ্দেশ্যে যোগেশ চন্দ্র দাস ও তার ছোট ভাই শচীনন্দন দাস ২০১২ সালের ২৩ জুন এই জমি দান করেছে। এবং এই ট্রাস্টের নতুন সভাপতি হয়েছে এসকে সিনহার বন্ধু আইনজীবি সুব্রত চৌধুরী এবং উপদেষ্টা রানা দাশ গুপ্ত। এরপর থেকেই তারা জমিটি আত্মসাৎ করার চেষ্টায় লিপ্ত। (https://bit.ly/2CmpMrO)
সর্বশেষ গত ১লা নভেম্বর, ২০১৯ তারিখে ২০ বছর ধরে ঐ জমি দখল করে রাখা মনজু গ্রেফতার হওয়ার এক দিন পর সেই জমি নিজেদের দখলে নিতে নতুন কাজ শুরু করে ইসকনীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, গেরুয়া পোষাক পরা ইসকন সদস্যরা দাড়িয়ে থেকে সেই জমির সামনে দেয়াল তুলে দেয়। অথচ ঐ জমির ভেতর একটি ছোটখাটো হাসপাতাল ছিলো। এতে এলাকাবাসীর তীব্র ক্ষোভ তৈরী হয়। কিনতু ইসকন পুলিশ এনে জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। (https://bit.ly/2NQIrBg)
এখানে উল্লেখ্য করার মত বিষয় হলো, ব্রাহ্মণ জিসি দেব আজ থেকে ৫০-৬০ বছর পূর্বেই টিকাটুলির এই ১৫৬ কাঠা জমি দান করেছে হাসপাতাল বানানোর জন্য, অপরদিকে ইসকনপন্থীরা দাবী করছে এই জমি ২০১২ সালে নমশুদ্র যোগেশ চন্দ্র দাস ও তার ছোট ভাই শচীনন্দন দাস তাদেরকে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে পূজা অর্চনার জন্য। এবং সে কারণে তারা দেয়াল তুলে জমির দখল নিয়েছে। দুই কথার মধ্যে অনেক ফারাক আছে। (https://bit.ly/2ChrqLt)
উল্লেখ্য ইসকন সদস্য এসকে সিনহা ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর সে তার বন্ধু সুব্রত চৌধুরী নিয়ে অনেকগুলো কাজ করে। তারমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিলো রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করতে মামলা পুনরাজ্জীবিত করা। কিন্তু জনগণ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুললে সেটায় সফল হয়নি (https://bit.ly/36IHeVg)।
তবে সিনহা বিভিন্ন সময় হিন্দুদের জমির জন্য কাজ করছে সে স্পস্ট করেছিলো। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিলো সিলেটের তারাপুর চা বাগানের প্রায় ১৩০০ বিঘা জমি ইসকনীদের দিয়ে দেয়া। (https://bit.ly/2rnosmx)
এছাড়া রাজধানী টিকাটুলির প্রায় ১৫৬ কাঠাও উল্লেখযোগ্য। যা ইসকন সদস্য সিনহার বন্ধু সুব্রত চৌধুরীকে দিয়েই করানো হয়। (https://bit.ly/2PU10Y5)
এখন কথা হলো-
এক দখলদার মঞ্জুর কবল থেকে নতুন দখলদার ইসকনের কবলে পড়লো হাসপাতালের ১৫৬ কাঠা জমি। মঞ্জু হয়ত সেই জমি ডেভেলপার কোম্পানিকে দিয়ে পয়সা ইনকাম করতো, কিন্তু ইসকন এখন সেখানে গড়ে তুলবে তাদের নতুন আস্তানা, যেখান থেকে পরিচালিত তবে নিত্য নতুন রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র।
ছবি : এক ইসকন সদস্য দাড়িয়ে থেকে টিকাটুলিতে দখলকৃত জমিতে দেয়াল তুলছে।