“শুধু আন্দোলন করলেই হবে না, আন্দোলনের ফলাফল যেন জনগণের পক্ষে যায় সে খেয়াল রাখতে হবে।এন.সি-৬১

আজ থেকে ৮ মাস আগে একটা স্ট্যাটাসে বলেছিলাম-
“শুধু আন্দোলন করলেই হবে না, আন্দোলনের ফলাফল যেন জনগণের পক্ষে যায় সে খেয়াল রাখতে হবে। জনগণ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করলো, কিন্তু সে আন্দোলনের কারণে সরকার যে সড়ক আইন করছে, সেটা জারি হলে জনগণ আরো বিপদে পড়বে এবং সরকার জনগণকে আরো লুটে নেবে। “ (https://tinyurl.com/t3w8c6s)
Related imageগত ১লা নভেম্বর থেকে সড়ক আইন জারির পর বিভিন্ন স্থানে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘট করছে।
মিডিয়ার প্রভাবে হুজুগে পাবলিক এখনও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এবং আইনের পক্ষে।
ধরে নিলাম, পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা আইন মেনে নিলো।
এরপর কি হবে বলুন তো ?
আমি নিশ্চিত,
যারা পরিবহণ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বলছিলো এবং আইনের পক্ষে বলছিলো,
তারাই তখন মাঠে নেমে যাবে, আইন বাতিল করতে।
বিশ্বাস হয় না, আমার কথা ?
কারণ-
এই আইন যদি সঠিকভাবে কার্যকর হয়, তবে প্রায় ৮০% যানবাহন বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ তখন যত নিয়ম কানুন মানতে হবে তাতে অধিকাংশ গাড়ি চলতে পারবে না।
তখন যানবাহনের অভাবে পাবলিকই মাঠে নামবে।
হ্যা, এটা বাংলাদেশ, অ্যামেরিকা না। এটা আপনাকে মেনে নিতে হবে।
যখন ৮০% যানবাহন বন্ধ হয়ে যাবে, তখন ২০% বাহন নিয়ে জনগণ হা হুতাশ করবে আর সেই ২০% বাহন ৩-৪ গুন ভাড়া বাড়িয়ে দেবে। ফলে ২০% বাহন জনগণকে প্রতিযোগীতা করে ব্যবহার করতে হবে।
হ্যা কয়েকদিন পর হয়ত নতুন করে বাহন নামবে, কিন্তু সেই যে পরিবহন ভাড়া ৩-৪ গুন বাড়লো, সেটা কিন্তু আর নামবে না। অর্থাৎ এখন যে লোকটি প্রতিদিন ১০০ টাকা পরিবহণ ভাড়া ব্যয় করে, তাকে প্রতিদিন ৪০০ টাকা ব্যয় করতে হবে। এটাই নতুন সড়ক আইনের বাস্তব ফল।
এ জন্য একটা কথা আমি সব সময় বলি, “শুধু বলে লাথি মারলেই ফুটবল খেলা হয় না,
বলটা আপনার বিপরীত পক্ষের গোলপোস্টে ঢুকলো না, আমার দলের গোলপোস্টে ঢুকলো সেটাও খেয়াল রাখতে হয়।”
কিন্তু সমস্যা হলো, জনগণ বলের মধ্যে লাথি মারতে পারলেই খুশি
আর মিডিয়া তো সেটাই চায়, জনগণ আর শ্রমিক শ্রেনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ঘটিযে ফায়দা নিতে।
কিন্তু ফলাফল হিসেবে জনগণের লাভ হলো না, ক্ষতি হলো তার খেয়াল রাখার দায় কি মিডিয়ার আছে?
রাজধানী ঢাকার যানবাহন নিয়ে যত অরাজকতা, তার মূল কারণ ঢাকায় অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ।
তাই আপনি যতই আইন করে, আর ফ্লাইওভার সেতু বানান কোন লাভ হবে না।
আপনাকে ঢাকাকে বিকেন্দ্রীকরণ করে ঢাকার জনসংখ্যা হ্রাস করতে হবে,
তখন দেখবেন সড়ক নিয়ে অধিকাংশ সমস্যা মিটে যাবে না্।
একইসাথে হ্রাস পাবে পরিবহণ ভাড়াও।
তাই আন্দোলন যদি করতে হয়, তবে ঢাকাকে বিকেন্দ্রীরকরণের জন্য আন্দোলন করেন।
এজন্য একটা কথা সব সময় বলি-
আপনারা উন্নয়ন চাইয়েন না, খরচ হ্রাস চান।
কারণ উন্নয়নের কথা বলে আপনাকে যে সড়ক আইন দেয়া হয়েছে,
তাতে আপনার খরচ বেশ বাড়বে, কমবে না।
ফলে গণমানুষ সেই ‘উন্নয়ন’ থেকে কোন উপকারই পাবে না।