কয়েকটি হিসেব মিলতেছে না- এন.সি- ১০৬

কয়েকটি হিসেব মিলতেছে না-
Related image
কয়েকটি হিসেব মিলতেছে না-
১) পুলিশ বলতেছে ‘বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য’ নামক ব্যক্তির ফেসবুক আইডি নাকি হ্যাক হইছে। কিন্তু কথা হইলো, বর্তমানে ফেসবুকের সিকিউরিটি সিস্টেম বেশ ভালো। অন্য কোন ডিভাইস থেকে আইডি খুলার চেষ্টা করলেই আইডি বন্ধ করে দেয়। কথা হইলো- বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য আইডি যখন অন্য ডিভাইস থেকে খোলার চেষ্টা করা হইলো, তখন তার আইডি বন্ধ হয়ে গেলো না কেন ?
২) তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, কেউ বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য’র আইডি হ্যাক করেছিলো। এরপর তার আইডি থেকে সবার কাছে কুরুচিপূর্ণ মেসেজ পাঠানো হয়, যা দর্শণে ইতিমধ্যে পুরো ফেসবুক গরম হয়ে যায়। ধরে নিলাম, হ্যাক করা ব্যক্তি খারাপ উদ্দেশ্য নিয়েই কাজটি করেছে। কিন্তু যে এত বড় একটা ঘটনা ঘটায় দিলো, সে মাত্র ৫০০ টাকা বিকাশ চাইবে বা ফোন করবে এটা কেমন কথা ? মাত্র ৫০০ টাকার জন্য তার পরিচয় ফাঁস হয়ে যেতে পারে, এটা তো ঐ হ্যাকারের জানার কথা। সে এত বড় একটা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটালো, সে মাত্র ৫০০ টাকার চাদা চেয়ে ধরা খেলো, বিষয়টি ঠিক মিললো না।
৩) পুলিশ হেডকোয়ার্টারের বক্তব্য হলো-“ শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য (২৫) নামে এক যুবক নিজের ফেসবুক আইডি 'Biplob Chandra Shuvo’ হ্যাক হওয়ার প্রেক্ষিতে বোরহানউদ্দিন থানায় জিডি (নং-৪৪০) করেন। জিডি করার সময় থানায় অবস্থানকালেই বিপ্লবের নম্বরে একটি কল আসে এবং তার কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে ওসিকে জানানো হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় ওইদিন রাতেই বিপ্লবের ফেইসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক ও চাঁদা দাবির দায়ে শরীফ এবং ইমন নামে দুই যুবককে আটক করা হয়।
(https://bit.ly/2P4fmEXhttps://bbc.in/31yUzf6)
অথচ, দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত খবর, যা শনিবার বিকালে প্রকাশিত হয়, সেখানে থানার ওসির বক্তব্য খেয়াল করুন-
"বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. এনামুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গতরাতে বিপ্লব চন্দ্র শুভ নিজের ইচ্ছায় আমাদের কাছে এসেছে। বর্তমানে সে আমাদের হেফাজতে আছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনা সত্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।" (https://bit.ly/32AhsQW, আর্কাইভ- http://archive.fo/bN2Yw)
পাঠক ! পুলিশ হেডকোয়ার্টার বলছে, শুক্রবার রাতেই শরীফ এবং ইমন নামক দুই ব্যক্তিকে পটুয়াখালী ও বোরহানুদ্দিন থেকে গ্রেফতার করা হয়। অথচ শনিবার বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. এনামুল হক কিন্তু বলেননি, গতকাল রাতে দুইজন হ্যাকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বরং বললেন- “তাকে (বিপ্লবকে) জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনা সত্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” যদি আগের রাতে দুইজনকে গ্রেফতার করা হতো, তবে থানার ওসি সাহেব তা উল্লেখ করলো না কেন ?
৪) বিপ্লব চন্দ্র বৈদ্য পুলিশের কাছে আসে শুক্রবার। পুলিশের দাবী- শুক্রবার রাতেই গ্রেফতার করা হয় হ্যাকার ইমন ও শরীফকে। শনিবার বোরহানুদ্দিন জুড়ে অসংখ্য মিছিল হয়েছে বিপ্লবের বিরুদ্ধে। এরপর শনিবার শেষে রবিবার সকালের সমাবেশে হতাহতের ঘটনা ঘটে। কথা হইলো, ইমন ও শরীফ নামক দুইজন হ্যাকার যে ৩৬ ঘন্টা আগে গ্রেফতার হইলো, এটা কেউ জানলো না কেন ? কেন কোন মিডিয়াতে আসলো না? এমনকি খোদ বোরহানুদ্দিন থানার ওসি পর্যন্ত শনিবার বিকালেও দুই হ্যাকারের কথা বলেনি। দুইজন হ্যাকারের নাম যদি শুক্রবার রাতেই প্রকাশ করা হতো তবে শনিবার ও রবিবার তো কোন সমাবেশই হতো না। কেন রবিবার হতাহতের ঘটনার পর ইমন ও শরীফ নাম দুটি চরিত্রের আবিষ্কার হইলো ? নাকি হতাহতের ঘটনার পর ইমন ও শরীফ নামক দুটি মুসলিম চরিত্রের অবতারণা করা হয়েছে পুরো ঘটনাকে নিউট্রালাইজ করার জন্য ?
আমার এ ৪টি হিসেব মিলিয়ে দিন দয়া করে।