বি-বাড়িয়ার কসবায় ২ ট্রেনের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এন.সি- ৭৬

Related imageবি-বাড়িয়ার কসবায় ২ ট্রেনের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়েছে
সরকারী হিসেবে মৃতের সংখ্যা বলা হচ্ছে ১৬ জন, বেসরকারী হিসেবে মৃতের সংখ্যা আরো কয়েক গুন বেশি। তদন্তে হয়ত এ দুর্ঘটনার অনেক কারণ বেরিয়ে আসবে। কিন্তু আমার মনে হয়, এ দুর্ঘটনা মূল কারণ রেলে প্রয়োজনীয় জনবলের অভাব, যদি রেলে প্রয়োজনীয় জনবল থাকতো, তবে এ ধরনের দুর্ঘটনা অনেকাংশ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলো।
উল্লেখ্য, ৮০ এর দশক বাংলাদেশ রেলওয়েতে লোকসান হয়। তখন বিশ্বব্যাংক আর এডিবি কুবুদ্ধি দেয়, রেলে লোক ছাটাই করতে। ১৯৯৩ সালে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে রেলে বড় ধরনের ছাটাই হয়। রেলওয়ে চলতে প্রায় ৪০ হাজার লোকের প্রয়োজন, কিন্তু ছাটাইয়ের কারণে বর্তমানে রেলে প্রায় ১৪ হাজার প্রয়োজনীয় পোস্ট খালি। অর্থাৎ রেলে এক-তৃতীয়াংশ লোক সংকট। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের যে বেহাল অবস্থার তার মূল কারণ এই এক-তৃতীয়াংশ লোকবল সংকট।
বলাবহুল্য পাট-কৃষি-বনায়নসহ অনেক কিছুই এই সম্রাজ্যাবাদীদের দালাল বিশ্বব্যাংক আর এডিবি’র কু-বুদ্ধিতে ধ্বংস হয়েছে। যার অংশ হিসেবে কুবুদ্ধি দিয়ে বাংলাদেশ রেলের সর্বনাশ করেছে বিশ্ববিশ্বব্যাংক আর এডিবি।
এখানে একটি বিষয় বোঝার আছে,
রেল আর নৌ পরিবহন ব্যবস্থা হচ্ছে অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ের পরিবহন ব্যবস্থা। অপরদিকে সড়ক পরিবহন হলো অত্যন্ত ব্যয়বহুল পরিবহণ ব্যবস্থা। সড়ক পরিবহনের জন্য রাস্তাঘাট তৈরী ও মেরামতে যেমন খরচ, তেমন গাড়ি-বাস-ট্রাক এগুলো ক্রয়, মেইনটেনেন্সে অনেক খরচ। অপরদিকে রেলনাইন একবার করতে পারলে আর তেমন খরচ নেই। পাশাপাশি একটা বড় ট্রেন ১ কিলো যেতে মাত্র আড়াই লিটার ডিজেল পুড়ে, যা যাত্রী হিসেবে সড়কের তুলনায় অত্যন্ত নগন্য।
উল্লেখ্য সম্রাজ্যবাদী কর্পোরেটরা সব সময় ব্যবসা চালিয়ে জনগণের খরচ তাদের খরচ বাড়িয়ে দিতে। এজন্য তারা রেল ও নৌ পরিবহনকে সব সময় নিরুৎসাহিত করে। কারণ সড়ক পরিবহন হলে তাদের বহুমুখী ব্যবসা হয়, কিন্তু রেল ও নৌ পরিবহন হলে তাদের এত ব্যবসা হয় না। এ কারণেই নানান কু-বুদ্ধি দিয়ে রেল ও নৌ পরিবহন ব্যবস্থা ধ্বংস করতে চায়। পাশাপাশি তাদের পরিচালিত মিডিয়ার মাধ্যমে রেল ও নৌ পরিবহনে কোন অ্যাক্সিডেন্ট হলে তা ফুলিয়ে ফাপিয়ে নিউজ করে। অথচ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় প্রতিদিন এর থেকে বহুগুন লোক এ্যাক্সিডেন্ট করে মারা যায়, তা খবরেই আনে না।
অপরদিকে, এদেশীয় দুর্নীতিবাজরা সড়ক পরিবহন ব্যবস্থার কথা বলে যত টাকা উপড়ি ইনকাম করতে পারে রেল ও নৌ ব্যবস্থার উন্নতি হলে সেটা সম্ভব হবে না। তাই কিছু লোকের পকেট ভরতে জনগণের আস্থাকে কৌশলে রেল ও নৌ থেকে সড়কের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়, রেল ও নৌ ব্যবস্থাকে করা হয় অনাস্থার প্রতীক।
যাই হোক, এবারের রেল এক্সিডেন্টের মূল যত সমাধান-ই বলা হোক,
আমার মনে হয়, জনগণের দাবী তোলা উচিত, রেলে যে ১৪ হাজার পদ খালি আছে, সেই পদগুলোতে যেন দ্রুত নিয়োগ দেয়া হয়। কারণ প্রয়োজনীয় লোক হলেই কেবল রেল পরিবহনকে নিরাপদ করা সম্ভব, এর আগে নয়।
বিস্তারিত- https://www.bbc.com/bengali/news-43830027