বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী্। এন.সি-৬৫

Related image
এই ভিডিওটা গত ফেব্রুয়ারী মাসের,
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কথাগুলো খুব মনযোগ দিয়ে খেয়াল করুন-
সে বলছে- আগামী ২০ বছরে দেশের উত্তর সাইডে ইন্ডাস্ট্রিলাইজেশন হবে,
এর জন্য প্রয়োজন ৫০ বছর ২টি জিনিস নিরবিচ্ছিন্ন থাকা,
একটা এনার্জি (তেল-গ্যাস), অন্যটি পাওয়ার (বিদ্যুৎ)।
অর্থাৎ ৫০ বছর বাংলাদেশে তেল-গ্যাস বা বিদ্যুতের কোন সমস্যা হবে না,
এটার শিওরিটি দিলে তখন বিদেশী বিনিয়োগকারীরা আসবে।
এবার আসুন খরচের ক্ষেত্রে-
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছে ৬ বছরে তেল-গ্যাসের জন্য খরচ করতে হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার বা সাড়ে ৩ লক্ষ কোটি টাকা। এবং বিদ্যুতে ২০ বছরে খরচ করতে হবে ৭০ বিলিয়ন ডলার বা ৬ লক্ষ কোটি টাকা।
এরপর বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলছে এই টাকাগুলো কোথা থেকে আসবে ?
আপনাদের এই টাকা খরচ করতে হবে । (https://bit.ly/2CNAHeu)
কথা হচ্ছে, দেশী ব্যবসায়ীরা টাকা পাবে কোথায় ?
গায়েব থেকে তো টাকা আসে না,
জনগণের পকেট থেকেই ব্যবসা করতে হয় ব্যবসায়ীদের ।
এখন সেই উপরি টাকা ইনকাম করার জন্য অবশ্যই ব্যবসায়ীদের জনগনের গলায় বেশি করে ছুরি চালাতে হবে, আর সরকারও অদৃশ্য সিন্ডিকেটের দোহাই দিয়ে তার পছন্দসই ব্যবসায়ীদের সেই ছুরি চালানোর সুযোগ করে দিবে। কিন্তু জনগণের গলায় উচ্চ দ্রব্যমূল্যের ছুরি চালালে জনগণ কতদিন বাচবে সেটাই দেখার বিষয়।
আলোচ্য ভিডিওতে তো শুধু বিদেশীদের জন্য পাওয়ার আর এনার্জি সেক্টরে ইনভেস্ট করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এ দুটি বিষয় ছাড়াও বিদেশীরা আসবে বলে বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে (ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, সেতু, রাস্তা, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, ট্যানেল) ও পর্যটন সেক্টরে আরো কয়েক গুন বেশি খরচ করা হচ্ছে। এতে সরকারীভাবে বিভিন্ন উপায়ে (ট্যাক্স, ফি, মাসুল) যেমন জনগণের টাকা চোষা হচ্ছে, অপরদিকে বেসরকারী সেক্টরের মাধ্যমে দিয়েও জনগণকে চুষে নেয়া হচ্ছে।
কথা হলো-
এই যে জনচোষণ, এতে জনগণের লাভ-ক্ষতি কি ?
জনগণের লাভ হচ্ছে, বিদেশীদের জন্য সুন্দর বাগান বানিয়ে রাখার পর তারা যদি সেটা দেখে খুশি হয়, তবে তারা হয়ত বাংলাদেশে বিভিন্ন কলকারখানা করবে। এবং তাদের সেই কলকারাখানায় ভুখা-নাঙ্গা বাংলাদেশীদের চাকুরী দিয়ে ধন্য করবে।
আর জনগণের ক্ষতি হচ্ছে, বিদেশীরা কতদিন পর বাংলাদেশে কলকারাখানা গড়ে বাংলাদেশীদের চাকুরী দিবে তার কোন নিদ্দিষ্ট সময়সীমা নেই। ১০ বছরও হতে পারে, ২০ বছরও হতে পারে। কিন্তু তারা আসার আগ পর্যন্ত তাদের জন্য বাগান সাজিয়ে রাখতে যে খরচ হবে, সেটা জনগণকেই বহন করতে হবে। কিন্তু সেই খরচ যোগাতে বাংলাদেশে যদি দুই-চারটা দুর্ভিক্ষ বেধে যায়, তবে মুখ বুঝে তা সহ্য করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
শুধু একটা কথাই বলবো-
কর্পোরেটোক্রেসি’র ফাঁদে পড়েছে বাংলাদেশ।
বাঁচাতে হলে শ্লোগান তুলুন- “উন্নয়ন চাই না, খরচ কমান”।