কিশোর আলো বা প্রথম আলোর বড় সমস্যা স্পন্সর বা কমার্শিয়াল দিকটি। এন.সি-৮৩

Related imageকিশোর আলো বা প্রথম আলোর বড় সমস্যা স্পন্সর বা কমার্শিয়াল দিকটি।
সমস্যাটা বেশি প্রকট, কারণ- এরা মানবতা বা চেতনার শ্লোগান বেশি কপচায়,
কিন্তু দিনশেষে কর্মাশিয়াল দিকটাই বেশি প্রেফার করে।
কিআ’র অনুষ্ঠানে রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুলের এক ছাত্রের বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় কিন্তু সে কথাটাই বার বার উঠে আসছে-
১) এত কাছে হাসপাতাল থাকতে দূরে নেয়া হলো কেন ?
উত্তর- স্পন্সরশীপ বা ফ্রি চিকিৎসার কারণে। মানবতা বা ছেলেটির বেচে থাকা এক কম গুরুত্বপুর্ণ।
২) একটি মৃত্যুর ঘটনার পরও অনুষ্ঠান চললো কিভাবে ?
উত্তর- যেহেতু স্পন্সরশীপ নেয়া হয়েছে, অনুষ্ঠান করার জন্য। তাই অনুষ্ঠান শেষ না করলে স্পন্সরশীপের কাছে জবাবদিহি কে করবে ?
আসলে প্রথম আলো’র সিস্টেমটাই এটা,
সে মুদ্রার একপিঠে মানবতার চেতনা শো করে,
কিন্তু অন্যপিঠে ব্যবসায়ীক স্বার্থ থাকে।
ঘটনা হলো- সে সব সময় জনগণকে মানবতার চেতনা’র পিঠটা দেখায় রাখে,
কিন্তু আড়াল করে রাখে নিজের ব্যবসায়ীক স্বার্থকে।
কিন্তু ঘটনাক্রমে এবার কিআ’র অনুষ্ঠানে সেই ব্যবসায়ীক স্বার্থটাই ফাঁস হয়ে গেছে।
একটা জিনিস খেয়াল করবেন, প্রথম আলো সব সময় দেশী শিল্প পণ্যের বিরুদ্ধে বলে,
এর কারন লতিফুরের ট্যান্সকমের কাজ হলো বিদেশী পণ্য বাংলাদেশে আমদানি করে নিয়ে আসা।
এখন যদি দেশী শিল্প দাড়িয়ে যায়, তবে লতিফুরের বিদেশী পণ্য আনার বিজনেস বন্ধ হয়ে যাবে।
এজন্য দেখবেন, সে নিয়মিত দেশী বিভিন্ন শিল্প বা পণ্যের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর দিকগুলো ফুটিয়ে উঠায়।
যেন জনগণ দেশী পণ্য থেকে দূরে থেকে বিদেশী পণ্য দ্বারা আকৃষ্ট হয়।
কিন্তু ট্র্যান্সকম যে বিদেশী পণ্যগুলো নিয়ে আসছে, সেগুলো কতটুকু ক্ষতিকর সেটা কিন্তু সে এড়িয়ে যায়। যেমন, ট্র্যান্সকমের আমদানি করা দুটি পন্যের উদাহরণ দিচ্ছি-
ক) পেপসি। পেপসিতে যে উপাদান ব্যবহার করা হয় তা ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
(https://wb.md/2WGDuiO)
খ) কেএফসি। কেএফসিতে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান আছে।
(https://dailym.ai/2pzPfv2)
দৃশ্যত দেখা যায়, প্রথম আলো অত্যধিক মানবিক একটি পত্রিকা, যা জনমানুষের স্বাস্ব্যের ব্যাপারে খুব সচেতন, ‘নিরাপদ খাদ্য’ অমুক-তমুক নাম দিয়ে কোন দেশী খাবারে কোন ক্ষতিকারক জিনিস আছে, সেটা সে ফুলিয়ে ফাপিয়ে নিয়মিত নিউজ করে। কিন্তু ঘুনাক্ষরেও প্রথম আলো কখনও পেপসি বা কেএফসি’র ক্ষতির কথা মুখে আনে না, কারণ প্রথম আলোর মালিক পেপসি বা কেএফসি’র আমদানিকারক তাই।
কেউ হয়ত ভাবতে পারে, প্রথম আলো দেশী পণ্যের ক্ষতিকারক দিক দেখিয়ে দিয়ে, জনমানুষের উপকার করছে। না মোটেও না, সে তার আমদানিকারী পণ্যের প্রতিদ্বন্দ্বীকে মার্কেটে টিকে থাকতে দিবে না, এটাই তার উদ্দেশ্য। এজন্য সে জনদরদী ফেস প্রকাশ করে। যদি তার সত্যিই জনদরদী উদ্দেশ্য থাকতো, তবে আগে পেপসি বা কেএফসির ক্ষতিকারক দিক আগে তুলে ধরতো, কিন্তু সেটা তো সে করে না।
অর্থাৎ উপরে দেখাবে মানবতা, চেতনা, জনদরদ, মানুষের উপকার। কিন্তু ভেতরে থাকবে তার শতভাগ ব্যবসায়ীক উদ্দেশ্য।
আপনাদের মনে থাকার কথা, কিছুদিন আগে বাংলাদেশের দেশী তরল দুধ নিয়ে মিডিয়া হঠাৎ করে চাওর হয়েছিলো। উপর দিয়ে যত কারণই থাকুক, মূল কারণ ডেনমার্কের আরলা ফুড বা ডানো দেশী দুগ্ধ শিল্পের উত্থানকে ঠেকাতে চাইছিলো। এরজন্য আরলার হয়ে বহুদিন আগে থেকেই থেকেই ওকালতি করে যাচ্ছিলো প্রথম আলো। এটা করতে সে নিজস্ব মিডিয়া পাওয়ারের সবটুকু ব্যয় করে।
যেমন- সাধারণ জনগণ প্রথম আলোতে কোন কলাম আসলে স্বাভাবিকভাবে মনে করবে, সেটা নিরপেক্ষ কোন সোর্স, সুতরাং সেই কলাম বা খবর থেকে তথ্য নিতে আগ্রহী হবে। কিন্তু দেশী দুগ্ধ আর আরলার দ্বন্দ্বের সময় প্রথম এমন মানুষ দিয়ে কলাম লেখায় যারা বাংলাদেশে আরলার কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করছে। উদাহরণ- গত ৩০শে জুন, ২০১৯ তারিখে বিদেশী গুড়া দুধের পক্ষে এবং দেশী দুধের বিরুদ্ধে কলাম লিখে ডঃ মোঃ মহিউদ্দিন নামক একজন ব্যক্তি, যে ডেনমার্কের আরলা বা ডানোর কলসালটেন্ট, যদিও প্রথম আলো তার সেই পরিচয়টা গোপন করে যায়। অর্থাৎ নিরপেক্ষতার আবরণে জনগণকে কর্মাশিয়ালপক্ষদুষ্ট খবর খাওয়াতে প্রথম আলোর জুড়ি নেই। (https://bit.ly/2CiYsLj)
শুনছি, খুব শিঘ্রই নাকি, সাংবাদিকদের ধরা হবে।
আমার মনে হয়, যে সব সংবাদপত্র বা মিডিয়া জনগণকে খবর সরবরাহের নামে
কমার্শিয়াল ফাঁদ পেতে বসেছে, তাদের আগে ধরা উচিত।
আজকে প্রথম আলোর কমার্শিয়াল স্বার্থের কারণে নাইমুল আবরারের মৃত্যুর বিষয়টি দৃশ্যমান হয়েছে দেখে সবাই প্রতিবাদ করছে। কিন্তু এই প্রথম আলো তার কর্মাশিয়াল স্বার্থের কারণে প্রতিনিয়ত কত কোটি মানুষের ক্ষতি করছে, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করছে সেটা কেউ দেখছে না।
তাই গণমাধ্যম বা জনগণের মাধ্যম নাম দিয়ে এইসব কর্পোরেট মাধ্যমের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা ও প্রতিবাদ বৃদ্ধি পাক, এটাই প্রত্যাশা।