গত ৮ই মার্চ ২০১৯ তারিখে “কর্পোরেটোক্রেসি শাসন ব্যবস্থায় কেমন হবে আমাদের আগামীর জীবন ব্যবস্থা ? এন.সি-৫৩

Related imageগত ৮ই মার্চ ২০১৯ তারিখে “কর্পোরেটোক্রেসি শাসন ব্যবস্থায় কেমন হবে আমাদের আগামীর জীবন ব্যবস্থা ?” এই শিরোনামে এক স্ট্যাটাসে আমি বলেছিলাম-
“একজন শ্রমিকের বেতন হবে সীমিত। তখন বাসাভাড়া, গাড়িভাড়া আর ভাত-ডালের খরচ এত আকাশচুম্বি হবে যে, একজনের ইনকামে সংসার চলবে না। এত প্রতি পরিবারের বাবার পাশাপাশি, মা, ভাই-বোন সবাই বিদেশী কর্পোরেটদের শ্রমিক বা দাস হয়ে যাবে। কমমূল্যে নারী শ্রমিক পাওয়ার জন্য নারীবাদ, নারী ক্ষমতায়নের বা বাল্যবিয়ে বন্ধের ব্যাপক শ্লোগান লক্ষ্য করা যাবে।
তখন দেশে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক বিস্তার ঘটবে। কিছু কিছু পর্যটন এলাকা আন্তর্জাতিক মানের হবে। এছাড়া দেশে হবে প্রচুর ভাইভ স্টার, সেভেন স্টার হোটেল, যেখানে বিদেশীরা এসে অবস্থান করতে পারবে। ঐ সময় বাংলাদেশে এসকর্ট সার্ভিস বা পতিতাবৃত্তি খুব এভেইলএবল হবে। যেহেতু বাংলাদেশের উৎপাদন খাত পুরোপুরি বিদেশীদের হাতে থাকবে, তাই বাড়তি ইনকামের জন্য ঘরের পুরুষদের কিছুই করার থাকবে না। তখন ঘরে বাড়তি কিছু খরচ দরকার হলেই ঘরের নারীরা এসকোর্টে গিয়ে পরপুরুষের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে আসবে এবং ঘরের বাড়তি খরচের প্রয়োজন মেটাবে।”
(https://bit.ly/33npWKD)
এই লেখা দেয়ার পর অনেকেই বলেছিলেন- আসলেই কি এমন হবে ? হলে কবে হবে ?
যারা এ ধরনের চিন্তা করেছিলেন, তাদের জন্য এ স্ট্যাটাস।
সম্প্রতি সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মীরা যৌন নির্যাতিত হচ্ছে,
এটা মিডিয়ার কল্যানে জানে না, এমন লোক আছে বলে মনে হয় না।
এরপরও কয়েকদিন আগে বিসিসির রিপোর্টে দেখলাম, সৌদি আরবে যেতে বাংলাদেশী নারীদের কিন্তু আগ্রহের কমতি নেই। প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলোতে সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে যাওয়ার জন্য নারীদের ভীড়। এমনকি যারা নির্যাতিত হয়ে ফিরেছে, তারাও আবার যেতে চায়। (https://bit.ly/2DjsLBJ)
এই রিপোর্টে কিন্তু একটা চরম বাস্তবতা আমাদের মেনে নিতে হচ্ছে।
নারীদর চেহারা দেখলে তাদের ভদ্র ফ্যামিলির নারী বলেই মনে হচ্ছে।
অথচ ঐ নারী বা তার পরিবার জানে সেখানে গেলে যৌন নির্যাতিত হতে হবে,
তারপরও তারা যাচ্ছে।
প্রশ্ন আসতে পারে, কেন যাচ্ছে ?
উত্তর-
১) স্বামীর ইনকামে ভালো চলতে পারতেছে না,
২) দেশে ভালো কাজ করার সুযোগ নেই,
৩) মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে যে খুব বড়লোক হয়ে যাবে, বিষয়টি সেরকম নয়, বরং সংসারে স্বচ্ছলতা আসবে, সেই আসায় তারা যাচ্ছে।
এই যে একটা স্টেজ- যৌন নির্যাতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তা জানার পরও মাত্র ৩০-৪০ হাজার টাকা মাসিক ইনকাম করতে ভদ্র নারীরা বিদেশে যাচ্ছে, এটা খুব ভয়ের কথা।
সৌদি যাওয়া রাষ্ট্রীয় অনুমোদিত, তাই সেখানে স্বচ্ছলতার আশায় ভদ্র ঘরের নারীরা যাচ্ছে।
এখন খোদ বাংলাদেশেও যদি একই সুযোগ থাকে, মানে সরকার অনুমোদিত কোন কাজ, যেখানে নারীরা যৌন অনিরাপদ, কিন্তু মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা ইনকামের সুযোগ আছে, সেখানে কি স্চ্ছলতার আশায় ভদ্র ঘরের নারী যাবে না ?
অবশ্যই যাবে এবং বর্তমান দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নারীকে ঐ দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং এটাই বাস্তবতা। এবং এটাই কর্পোরেটোক্রেসি শাসন ব্যবস্থায় নারী অবস্থার প্রতিচ্ছবি, যার জানান দিচ্ছে সৌদিতে যৌন নির্যাতিত হবে জেনেও সামান্য স্বচ্ছলতার আশায় ভদ্র পরিবারের নারীদের যাওয়ার ঘটনাটি।