বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুরা কিভাবে কাজ করে ? এন.সি-৮৪

বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুরা কিভাবে কাজ করে ?


বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুরা কিভাবে কাজ করে ?
আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃষ্টিকোন থেকে রিপাবলিকান ব্লকের অনেক উগ্র জাতীয়তাবাদী হাত আছে। যেমন- উগ্র খ্রিস্ট জাতীয়তাবাদ, উগ্র শেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদ, উগ্র বৌদ্ধ বাদ, উগ্র হিন্দুবাদ, উগ্র ইহুদীবাদ ইত্যাদি। বাংলাদেশের আমরা সম্প্রতি যে উগ্র হিন্দুত্ববাদের উত্থান দেখতে পাচ্ছি, সেটা আসলে আন্তর্জাতিক রাজনীতির দৃষ্টিকোন থেকে রিপাবলিকান ব্লকের একটি অংশের উত্থান। বাংলাদেশে আরো অনেক হাত তাদের থাকতে পারে, তবে উগ্র হিন্দুত্ববাদ এর মধ্যে একটি।
অনেকে বাংলাদেশের উগ্রহিন্দুত্ববাদকে ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদ দিয়ে ব্যাখ্যা করতে চান। আসলে বাংলাদেশের উগ্রহিন্দুত্ববাদ আর ভারতের উগ্রহিন্দুত্ববাদ দ্বয়ের মধ্যে ভাই-ভাই সম্পর্ক, তবে উভয়েরই হেড অফিস বা বাবা হইলো হইলো রিপাবলিকান ব্লক। এক ভাই অন্য ভাইকে সাহায্য করতে পারে, তবে উভয়ই পিতার মুখাপেক্ষী। ভারতের উগ্রহিন্দুদের মাথায় এত বুদ্ধি হয় নাই, তারা বাংলাদেশে এসে পলিসি করবে, বরং ভারতীয়দের মাথায় যাদের থেকে বুদ্ধি এসেছে, বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুদের মাথাও ঐখান থেকেই বুদ্ধি আসছে, তাই বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুত্ববাদীরা এত কৌশলী হতে পারছে।
বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুত্ববাদের সূচনা হয়েছিলো- মার্কিন ইহুদী রিচার্ড বেনকিনের মাধ্যমে। সে শুধু বাংলাদেশেই নয় পশ্চিমবঙ্গেও উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের সাথে যোগাযোগ করে। বাংলাদেশে রিচার্ড বেনকিনের প্রতিনিধি ছিলো সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী, যে ইসরাইলি পাসপোর্ট বহন করার কারণে গ্রেফতার হইছিলো।
এখানে একটা বোঝার বিষয় আছে, সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় রিপাবলিকান ব্লক ইসলামিস্টদের পক্ষে ছিলো। এ যুদ্ধের মাধ্যমে আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভেঙ্গে দেয়। কিন্তু এর পরই শুরু হয় রিপাবলিকানদের পরিবর্তন, তারা ধিরে ধিরে ইসলামিস্টদের বিরুদ্ধে চলে যায়, আর ডেমোক্র্যাটরা ইসলামিস্টদের পক্ষে আসে। ৯/১১ এর সময় রিপাবলিকানরা টোটালি ইসলামিস্টদের বিরুদ্ধে চলে যায়, যা এখনও অব্যাহত আছে।
আমার বলার বিষয় হলো- সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী কিন্তু বাংলাদেশের ইসলামিস্ট হিসেবেই পরিচিত ছিলো, সে ইনকিলাবের মত পত্রিকায় কলাম লিখতো। তার লেখা বইগুলো পড়লে বুঝবেন, সে কড়ামাত্রার ইসলামিস্ট।
যেহেতু, রিপাবলিকানরা এক সময় ইসলামিস্টদের পক্ষে ছিলো, তাই তাদের এজেন্টরাও ইসলামিস্ট রূপ ধরতো, সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরী তার প্রমাণ। কিন্তু যে রিচার্ড বেনকিন এক সময় বাংলাদেশে ইসলামিস্টদের সাথে কানেকশন করতো, সেই এক সময় উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের নেটওয়ার্ক তৈরীতে মনোনিবেশ করলো। কারণ রিপাবলিকান ব্লকের পলিসিতে পরিবর্তন এসেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের মূল কানেকশন রিপাবলিকানদের সাথে। সেটা ‘বাংলাদেশ ইসকন’, হিন্দু মহাজোট কিংবা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ হোক। বাংলাদেশের উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের সবচেয়ে বেশি পেট্রোইনাইজ করে আমেরিকায় বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত হিন্দুদের বানানো সংগঠনগুলো। এর মধ্যে আমেরিকান বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ উল্লেখ্যযোগ্য। এছাড়া রিপাবলিকান ব্লক নেটওয়ার্কের ইসরাইলি লিকুদ পার্টি মেন্দি এন সাফাদিও’রও একটা নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইছে।
একটা সময় বাংলাদেশের হিন্দুদের ‘সংখ্যালঘু’ হিসেবে ডেমোক্র্যাট মিডিয়ায় দেখানো হতো।
আসলে সংখ্যালঘু টার্মটা হলো ডেমোক্র্যাট ইস্যু। ডেমোক্র্যাট মাঝে মাঝেই সংখ্যালঘু টার্ম নিয়ে রাজনীতি করতো, যার উদ্দেশ্য তাদের রাজনীতির উপযোগী ‘সেক্যুলারিজম পরিবেশ’ তৈরী করা, এর বেশি কিছু নয়।
কিন্তু বর্তমানে পুরো ভারত উপমহাদেশের হিন্দুদের মধ্যে রিপাবলিকানদের চোখ পড়েছে।
তাই বর্তমানে বাংলাদেশের হিন্দুরাও আর ‘সংখ্যালঘু’ হিন্দু নাই, তারা জাতীয়তাবাদী হিন্দু হয়ে গেছে।
তাদেরকে দেখানো হয়েছে, ‘এক রাষ্ট্র এক ধর্ম’ তথা অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন।
সত্যি বলতে এ অঞ্চলের হিন্দুরা কোন সমস্যা নয়, সমস্যা তখন যখন তারা সাদা চামড়ার সংস্পর্ষে আসে।
ব্রিটিশরা এ হিন্দুদের উপর ভর করে এ অঞ্চলকে ২০০ বছরের জন্য পরাধীন করে।
তখন মুসলমানরা ভুল করেছিলো আগের হিন্দু আর ব্রিটিশ সংস্পর্ষে আসা হিন্দুকে এক ভেবে।
ঠিক বর্তমানেও মুসলমানরা ভুল করছে আগের হিন্দু আর বর্তমানে রিপাবলিকান ব্লকের সংষ্পর্ষে আসা হিন্দুদের এক ভেবে।
সচেতন না হলে এই ভুলের মাসুল ব্রিটিশ আমলের মতও হতে পারে।