ক্রিকেট নিয়ে ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকার ২০১৬ সালে বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের আয় নিয়ে একটা হিসেব প্রকাশ করে। তাদের দাবী, সাকিব আল হাসানের মাসিক আয় ২২ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা আর বছরে আয় ২৭৫ কোটি টাকা। দেশী-বিদেশী লীগ, বিভিন্ন কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর (পেপসি, লেনেভো, বাংলালিংক, ক্যাস্ট্রল, নর্টন এন্টিভাইরাস, বুস্ট, লাইফবয়, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক) থেকে প্রচুর আয় করেন তিনি। এছাড়া রয়েছে নিজের রেস্তোরাঁ ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা। (https://bit.ly/2JwBHaH, https://bit.ly/2q1RsiY)
কথা আসতে পারে, এই যে সাকিব এত শত শত কোটি টাকা ইনকাম করতে, এই টাকা আসলে কোথা থেকে আসছে ?
উত্তর- সিংহভাগ টাকা আসতেছে বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সর বা বিজ্ঞাপন থেকে।
এবার প্রশ্ন হইলো- ঐ কোম্পানির টাকা কোথা থেকে আসতেছে?
উত্তর- জনগণের পকেট থেকে।
উত্তর- সিংহভাগ টাকা আসতেছে বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সর বা বিজ্ঞাপন থেকে।
এবার প্রশ্ন হইলো- ঐ কোম্পানির টাকা কোথা থেকে আসতেছে?
উত্তর- জনগণের পকেট থেকে।
ছোটবেলায়, যখন কোকাকোলা ১ বোতলের দাম ১০ টাকা ছিলো, তখন এর বিজ্ঞাপন করতো ভারতের শচীন টেন্ডুলকার। তখন শুনছিলাম, কোকের ভেতর যে পানীয়টা থাকে, তার উৎপাদন খরচ নাকি ১ টাকা, আর ৫-৬ টাকা নাকি বিজ্ঞাপন খরচ। যদি বিজ্ঞাপন না থাকতো, তবে কোকাকোলার দাম ১০ টাকা না হয়ে সর্বোচ্চ ৪-৫ টাকা হইতো।
তারমানে বিজ্ঞাপন আমার খরচ ডবল করে দিচ্ছে ।
আমার মাসিক খরচ ১০ হাজার টাকা, যদি এসব বিজ্ঞাপন না থাকতো, তবে খরচ হতো ৫ হাজার টাকা।
আমার পরিবারের খরচ মাসে ৫০ হাজার টাকা, কিন্তু বিজ্ঞাপন না থাকলে খরচ হতো ২৫ হাজার টাকা।
হিসেব তো সেটাই বলে !!!
তারমানে বিজ্ঞাপন আমার খরচ ডবল করে দিচ্ছে ।
আমার মাসিক খরচ ১০ হাজার টাকা, যদি এসব বিজ্ঞাপন না থাকতো, তবে খরচ হতো ৫ হাজার টাকা।
আমার পরিবারের খরচ মাসে ৫০ হাজার টাকা, কিন্তু বিজ্ঞাপন না থাকলে খরচ হতো ২৫ হাজার টাকা।
হিসেব তো সেটাই বলে !!!
পণ্যের ক্রয়, খরচ ও গুনগত মান হিসেব কষলে এইসব সাকিব আল হাসানদের কারনে জনগণের ৪টি ক্ষতি হচ্ছে-
১) জনগণের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে,
২) পুশিং সেল হচ্ছে। মানে বাজারে ৫টা সাবান আছে। আমি ৫টা সাবান যাচাই বাছাই করে তারপর ভালো সাবানটা ব্যবহার করবো। কিন্তু বিজ্ঞাপনে দেখছি বিশ্বসেরা ক্রিকেটার নিজে গোসল করে দেখিয়ে দিচ্ছে সে ঐ সাবান ব্যবহার করে (আদৌ ব্যবহার করে কি না, তার সত্যতা নাই)। আমি ভালো-মন্দ সাবান বাছাই না করে, আমার প্রিয় ক্রিকেটার টিভিতে যে সাবান ব্যবহার দেখাচ্ছে, আমি সেটাই কিনছি। অর্থাৎ ঐ বিশ্বসেরা ক্রিকেটার আমাকে খারাপ পণ্য কিনতে উৎসাহিত করছে।
৩) বাজারে কোন পণ্য আছে, ১০টা। কিন্তু টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষমতা রাখে ৫টি। বাকিদের পূজি কম হওয়ায় টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষমতা নাই। ফলে ঐ সব ভালো পণ্য আমরা চিনতেছিও না, কিনতেছিও না। দোকানদার ঐ পণ্য আমাদের সাধলে আমরা বলছি- “দূর এসব অখ্যাত জিনিস আমাকে দিয়েন না তো। যেসব পণ্য পরিচিত সেগুলোই ভালো হয়। সেগুলো দেন। ” আমাদের বিজ্ঞাপন নির্ভর দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে কমপূজিতে ব্যবসা করে, কিন্তু ভালো মানের সার্ভিস দিতে আগ্রহী, সে সব পণ্য মার্কেট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আর ব্যবসায়ীরাও পণ্যের কোয়ালিটি ভালো করার থেকে পণ্যের চমকদার বিজ্ঞাপনের দিকে বেশি দৃষ্টি দিচ্ছে।
৪) ভোগবাদী মানসিকতা তৈরী হচ্ছে। একটা মোবাইল ফোন আছে, কিন্তু অমুক নায়ক বিজ্ঞাপনে বললো- নুতন মডেলের সেট আসছে। তাই প্রয়োজনের ১ থাকা সত্ত্বেও আরেকটা কিনতেছি। এক জোড়া স্যান্ডেল দিয়ে চলতেছে। কিন্তু অমুক খেলোয়ার এসে নতুন মডেলের স্যান্ডেল দেখায় সমাজে ফ্যাশন চালু করে দিলো। ফলে এক জোড়া স্যান্ডেল থাকার পরও আরেক জোড়া অতিরিক্ত স্যান্ডেল কিনলাম। অর্থাৎ অতিরিক্ত খরচ করলাম। অথচ এই অতিরিক্ত খরচ বাচিয়ে আমি বই কিনতে পারতাম, কয়েক বছর টাকা জমিয়ে কোন ব্যবসা বা উৎপাদন শুরু করতে পারতাম। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপন আমার পকেটের টাকা শেষ করে দিলো।
১) জনগণের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে,
২) পুশিং সেল হচ্ছে। মানে বাজারে ৫টা সাবান আছে। আমি ৫টা সাবান যাচাই বাছাই করে তারপর ভালো সাবানটা ব্যবহার করবো। কিন্তু বিজ্ঞাপনে দেখছি বিশ্বসেরা ক্রিকেটার নিজে গোসল করে দেখিয়ে দিচ্ছে সে ঐ সাবান ব্যবহার করে (আদৌ ব্যবহার করে কি না, তার সত্যতা নাই)। আমি ভালো-মন্দ সাবান বাছাই না করে, আমার প্রিয় ক্রিকেটার টিভিতে যে সাবান ব্যবহার দেখাচ্ছে, আমি সেটাই কিনছি। অর্থাৎ ঐ বিশ্বসেরা ক্রিকেটার আমাকে খারাপ পণ্য কিনতে উৎসাহিত করছে।
৩) বাজারে কোন পণ্য আছে, ১০টা। কিন্তু টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষমতা রাখে ৫টি। বাকিদের পূজি কম হওয়ায় টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয়ার ক্ষমতা নাই। ফলে ঐ সব ভালো পণ্য আমরা চিনতেছিও না, কিনতেছিও না। দোকানদার ঐ পণ্য আমাদের সাধলে আমরা বলছি- “দূর এসব অখ্যাত জিনিস আমাকে দিয়েন না তো। যেসব পণ্য পরিচিত সেগুলোই ভালো হয়। সেগুলো দেন। ” আমাদের বিজ্ঞাপন নির্ভর দৃষ্টিভঙ্গীর কারণে কমপূজিতে ব্যবসা করে, কিন্তু ভালো মানের সার্ভিস দিতে আগ্রহী, সে সব পণ্য মার্কেট থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আর ব্যবসায়ীরাও পণ্যের কোয়ালিটি ভালো করার থেকে পণ্যের চমকদার বিজ্ঞাপনের দিকে বেশি দৃষ্টি দিচ্ছে।
৪) ভোগবাদী মানসিকতা তৈরী হচ্ছে। একটা মোবাইল ফোন আছে, কিন্তু অমুক নায়ক বিজ্ঞাপনে বললো- নুতন মডেলের সেট আসছে। তাই প্রয়োজনের ১ থাকা সত্ত্বেও আরেকটা কিনতেছি। এক জোড়া স্যান্ডেল দিয়ে চলতেছে। কিন্তু অমুক খেলোয়ার এসে নতুন মডেলের স্যান্ডেল দেখায় সমাজে ফ্যাশন চালু করে দিলো। ফলে এক জোড়া স্যান্ডেল থাকার পরও আরেক জোড়া অতিরিক্ত স্যান্ডেল কিনলাম। অর্থাৎ অতিরিক্ত খরচ করলাম। অথচ এই অতিরিক্ত খরচ বাচিয়ে আমি বই কিনতে পারতাম, কয়েক বছর টাকা জমিয়ে কোন ব্যবসা বা উৎপাদন শুরু করতে পারতাম। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপন আমার পকেটের টাকা শেষ করে দিলো।
এই যে কোটি কোটি জনগণের খরচ বৃদ্ধি করা হচ্ছে, অপ্রয়োজনী খাতে অপচয় করানো হচ্ছে, ভালো ব্যবসায়ীদের মার্কেট থেকে কিক করা হচ্ছে, জনগণকে খারাপ পণ্য কিনতে পুশ করা হচ্ছে, এইগুলো করে ঐ কোম্পানিগুলো যে লাভবান হচ্ছে, তার একটা অংশ সেই অনৈতিক কাজে সহযোগীতা করার জন্য সাকিবদের মত ক্রিকেটারদের দেয়া হচ্ছে, ফলে তাদের সম্পদও হু হু করে বাড়তেছে।
বোকা জনগণ বুঝতেছে না, তাদের সংসারের খরচ সাকিবদের প্রতি তাদের আকর্ষণের সমানুপাতিক। তারা সাকিবদের পক্ষে যত বলবে, সাকিবদের জনপ্রিয়তা তত বাড়বে। আর সাকিবের জনপ্রিয়তা যত বাড়বে তার ব্র্যান্ড ভ্যালু তত বাড়বে। আর তার ব্র্যান্ড ভ্যালু যত বাড়বে, পণ্যের বিজ্ঞাপন খরচ তত বাড়বে, আর পণ্যের বিজ্ঞাপনের খরচ যত বাড়বে, পণ্যের দাম তত বাড়বে। আর পণ্যের দাম যত বাড়বে, জনগণের সংসারের খরচ তত বাড়বে।
বোকা জনগণ বুঝতেছে না, তাদের সংসারের খরচ সাকিবদের প্রতি তাদের আকর্ষণের সমানুপাতিক। তারা সাকিবদের পক্ষে যত বলবে, সাকিবদের জনপ্রিয়তা তত বাড়বে। আর সাকিবের জনপ্রিয়তা যত বাড়বে তার ব্র্যান্ড ভ্যালু তত বাড়বে। আর তার ব্র্যান্ড ভ্যালু যত বাড়বে, পণ্যের বিজ্ঞাপন খরচ তত বাড়বে, আর পণ্যের বিজ্ঞাপনের খরচ যত বাড়বে, পণ্যের দাম তত বাড়বে। আর পণ্যের দাম যত বাড়বে, জনগণের সংসারের খরচ তত বাড়বে।
সব শেষে বলবো-
“সাকিবের বাদ পড়ার পেছনে সরকারের হাত আছে”, এই সন্দেহ করে অনেকে সাকিবের পক্ষ নিয়ে সরকার বিরোধী রাজনীতি করতেছে। আমি এগুলোর পক্ষে-বিপক্ষে নই। আমি জনগণের পক্ষে। যেটাতে বাস্তবে জনগণের উপকার হবে (জনগণের আবেগের উপকার নয়, বাস্তব উপকার) আমি সেটার পক্ষেই বলবো। সেটাতে কেউ খুশি হলে হবে, না হলে না হবে। আমার কিছু করার নেই।
“সাকিবের বাদ পড়ার পেছনে সরকারের হাত আছে”, এই সন্দেহ করে অনেকে সাকিবের পক্ষ নিয়ে সরকার বিরোধী রাজনীতি করতেছে। আমি এগুলোর পক্ষে-বিপক্ষে নই। আমি জনগণের পক্ষে। যেটাতে বাস্তবে জনগণের উপকার হবে (জনগণের আবেগের উপকার নয়, বাস্তব উপকার) আমি সেটার পক্ষেই বলবো। সেটাতে কেউ খুশি হলে হবে, না হলে না হবে। আমার কিছু করার নেই।