পেয়াজ নিয়ে প্রথম আশঙ্কা ছিলো- পেয়াজ সংকটে দাম বেড়ে যাবে।এন.সি- ৬২

Related image
পেয়াজ নিয়ে প্রথম আশঙ্কা ছিলো- পেয়াজ সংকটে দাম বেড়ে যাবে।
এখন নতুন আশঙ্কা হলো- পেয়াজের আমদানির কারণে পেয়াজের দাম পড়ে যাবে, কৃষক উপযুক্ত দাম না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এক পর্যায়ে পেয়াজ নষ্ট হবে।
কিন্তু কেন এই অসামঞ্জস্যতা ?
এর কি কোন সমাধান নেই ? কোন্ উদ্যোগ নেই ?
প্রথম কথা হলো, আপনার বাসায় বেশি খাবার হলে কি করেন ?
পচিয়ে নিশ্চয়ই নষ্ট করেন না। অবশ্যই ফ্রিজে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে প্রয়োজন মত ব্যবহার করেন।
যদি বাসায় সে কাজটা করতে পারেন, তবে দেশের ক্ষেত্রে সে কাজটা করতে সমস্যা কোথায় ?
কেন আপনার দেশে পর্যাপ্ত হিমাগার নেই ? কেন আপনি পেয়াজ হিমাগারে সংরক্ষণ করতেছেন না ??
এক হিমাগারের ব্যবস্থা করলে তো কৃষককে এত টেনশন করতে হয় না,
আর সরকার যদি হিমাগারগুলোতে সঠিক মাত্রায় তদারকি করতে পারে, তবে সারা বছর অতি স্বল্পমূল্যে জনগণকে পেয়াজ খাওয়ানো সম্ভব আবার কৃষককেও ন্যায্য দাম দেয়া সম্ভব।
একটা বিষয় লক্ষ্য করেছেন ?
বাংলাদেশের পেয়াজের কোয়ালিটি কিন্তু অসম্ভব ভালো ।
আবার বাংলাদেশের আবহাওয়াও পেয়াজ চাষের জন্য উপযোগী।
পাশাপাশি বাংলাদেশে পেয়াজের প্রচুর চাহিদা আছে।
আবার আন্তর্জাতিকভাবে প্রচুর ভালো পেয়াজের রফতানির সুযোগ আছে।
তাহলে কথা হলো, আমরা কেন পেয়াজের ব্যবসা করি না ?
কেন পেয়াজ উৎপাদনকে শিল্পে রূপান্তর করি না ?
কেন দেশের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশে রফতানির উদ্যোগ নেই না ?
হয়ত বলতে পারেন-
বাংলাদেশে পেয়াজের উৎপাদন খরচ বেশি।
মানছি আপনার কথা। কিন্তু কোন কোন ফ্যাক্টরে (বীজ, স্যার, কিটনাশক, শ্রমিক খরচ/যন্ত্রায়ন) উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তারা কম দামে পারলে আমরা কেন পারছি না, সেগুলো চিহ্নিত করে, সেখানে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে খরচ কমানোর উদ্যোগ নিলেই তো হয়।
হয়ত বলতে পারেন- বাংলাদেশের পেয়াজে পানি বেশি। সেটারও সমাধান সম্ভব। রিসার্চ করেন, অবশ্যই কোন জাতের পেয়াজ পাওয়া সম্ভব।
মূল কথা হলো- সমস্যা যেখানে আছে, সঠিক ব্যবস্থা নিলে সমাধানও সেখানে আছে।
কিন্তু আমরা বিদেশী ব্যবসায়ীদের আসার জন্য যত মনমগজ খরচ করি, যত টাকা পয়সা খরচ করি,
তার বিন্দুমাত্র করি না, দেশের উৎপাদক বা ব্যবসায়ীদের জন্য।
অথচ দেশি উৎপাদককে সুযোগ করে দিলে সে আরো বেশি ভালো ফল দিতে পারতো।
আসলে আমাদের রাজা’র জীবন ভালো লাগে না,
আমাদের গোলামীর জীবন ভালো লাগে।
যতদিন আমরা নিজের বাড়িতে উৎপাদন করে নিজের বাড়িতে খাবো, ততদিন আমরা সবাই রাজা।
কিন্তু যখন আমরা বিদেশীদের ডেকে এনে তাদের কাছে চাকুরী করবো, তখন আমরা তাদের একদিকের গোলাম হবো। আবার যখন তাদের থেকে বেতন নিয়ে, সেই টাকা দিয়ে আবার তাদের কাছ থেকে খাবার আমদানি করে খাবো, তখন আমরা তাদের আরেকদিকের গোলাম হবো। এভাবেই আমরা গোলামির সার্কেলে ঘুরতে থাকবো, কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের নিজস্ব কিছু করার সুযোগ থাকবে না।