আজকের খবর- চার লেন হচ্ছে সব আন্তঃজেলা সড়ক। এন.সি-৫৪

আজকের খবর- চার লেন হচ্ছে সব আন্তঃজেলা সড়ক
Related imageআন্তঃজেলা সড়কগুলো চারলেন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব আন্তঃজেলা সড়ক চারলেনে উন্নীত করা হবে। নিরাপদ সড়ক যোগাযোগের পাশাপাশি সড়কে যেন গতি নিশ্চিত হয় সে ব্যাপারে জোর দিচ্ছে সরকার। একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আজকের একনেক বৈঠকে সড়ক উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সম্প্রসারণ নিয়ে ছয়টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলোতে মোট খরচ হবে ৭ হাজার ৩১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারের এখন প্রধান দুটি লক্ষ্য সড়ক উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো। সেই জন্য এই একনেকে ছয়টি প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটিই হচ্ছে সড়কের। আমরা সড়কের জাল বিস্তার করেছি। এখল সুফল পাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী চান আরও গতি।
(https://bit.ly/2KXNwaB)
২০১৮ সালের ২৭শে জানুয়ারী আমি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। স্ট্যাটাসটা হুবুহু কপি করে দিচ্ছি-
“২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের ঠিক আগমুহুর্তে স্বাগতিক ব্রাজিলে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ব্রাজিলের জনগণ রাস্তায় নেমে আসে এবং বলতে থাকে- “ফিফা তুমি ফিরে যাও”, “আমরা ফুটবল চাই না খাদ্য চাই”, “বিশ্বকাপ ফুটবল মানে অপচয়”, “ফুটবলে নয় স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে অর্থ চাই”- এরকম নানান শ্লোগান দিতে থাকে। ব্রাজিলে এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় দেশটির বিশাল বস্তিবাসীরা। খবরে আসে- “ব্রাজিলে জিনিসের দাম, যাতায়াতের খরচ আকাশছোঁয়া, চাকরি নেই, ছেলেমেয়ের স্কুলের খরচ কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না, সামাল দেওয়া যাচ্ছে না অসুখ-বিসুখের খরচ, নেই কোনও সামাজিক সুরক্ষা। সেদিকে নজর না দিয়ে বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়াম তৈরিতে কেন টাকার অপচয় করছে সরকার? প্রশ্ন তুলছেন সে দেশের মানুষ।”
পাঠক ! ব্রাজিলের বিভিন্ন শহরের নাম, যেমন- ‘সাও পাওলো’ বা ‘রিও ডি জেনিরো’ লিখে যদি আপনি গুগলের সার্চ দেন, তবে ভেসে ওঠবে অত্যাধুনিক সব স্থাপনা, রাস্তাঘাট, ফ্লাইওভার, স্টেডিয়াম, সু-উচ্চ ভবন আর ফাইভ স্টার হোটেলের ছবি। ওসব দেখে আপনার মনেই হবে না, ব্রাজিলে দরিদ্র মানুষ আছে, মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে, মাত্র ৫০ সেন্টের জন্য মেয়েরা নিজেদের শরীর বিলিয়ে দিচ্ছে। খাদ্যের জন্য বাবা-মা নিজ সন্তানকে বিক্রি করছে। (https://goo.gl/u5W1Srhttps://goo.gl/RXf8mMhttps://goo.gl/Rxmn8H)
হ্যা, এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বের নাম হচ্ছে ‘কর্পোরেটোক্রেসি’। সম্রাজ্যবাদীরা এভাবেই একটি দেশের অর্থনীতি দখল করে। সম্রাজ্যবাদীরা কোন দেশে নিজেদের সুবিধার জন্যই রাস্তাঘাট, ফ্লাইওভার, সেতু বানাতে পরামর্শ দেবে। থাকার সুবিধার জন্য ফাইভ স্টার হোটেল, এন্টারটেইনমেন্টের জন্য স্টেডিয়াম বানাতে বলবে, যা ঐ দেশে তখন দরকার ছিলো না। ঐ দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসকের মাধ্যমে তারা তাদের প্ল্যান বাস্তবায়ন করবে এবং সেগুলো বানানোর খরচ তারা ঐ দেশের জনগণের পকেট থেকে বের করবে, ফলে দেশে মূল্যস্ফিতি দেখা দেবে, খাদ্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে, জনগণ খাবার পাবে না। আবার সেই সব অবকাঠামো বানাতে গিয়ে সম্রাজ্যবাদীরা লাভবান হবে। যখন ঐ দেশে তারা ঘুড়তে যাবে, এন্টারটেইনমেন্ট করতে যাবে, ব্যবসায়ী কাজে যাবে তখন ঐ সব অবকাঠামো ব্যবহার করবে, ছবি তুলে বলবে- ‘দেখো দেশটা কত সুন্দর।’
‘কর্পোরেটোক্রেসি’ পলিসি নিয়ে লেখা বই, ‘একজন অর্থনৈতিক ঘাতকের স্বীকারক্তি’-তে নিজেকে অর্থনৈতিক ঘাতক দাবি করা ‘জন পার্কিন্স’ নিজেই স্বীকার করে, ‘এই সব কাজ করার জন্য আমাদের মূল হাতিয়ার ছিলো ভুয়া অর্থনৈতিক ডাটা’। ‘ভুয়া অর্থনৈতিক ডাটা’ মানে তারা যে দেশে ‘কর্পোরেটোক্রেসি’ চালাতো সেই দেশ নিয়ে বিভিন্ন ‘ভুয়া অর্থনৈতিক ডাটা প্রচার করতো’। যেমন ‘অমুক দেশের জিডিপি বাড়ছে’, ‘দরিদ্রতা হ্রাস পাচ্ছে’, ‘এতগুলো দেশের মধ্যে অর্থনীতি এগিয়ে আছে’ ইত্যাদি। মূলত: অর্থনৈতিক ঘাতকরা এইসব ভুয়া অর্থনৈতিক ডাটা তৈরী করতো ঐসব দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসকদের জন্য, যাদের সাথে তারা হাত মিলিয়ে এ পলিসি বাস্তবায়ন করতো। বিভিন্ন বিদেশী সংস্থার নাম দিয়ে প্রচার করা সে সব অর্থনৈতিক ডাটা প্রচার করে ঐ দেশের শাসকরা দেশের চলমান অর্থনৈতিক দুরাবস্থাকে লুকিয়ে রাখতে চাইতো। কিন্তু বাস্তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকারত্ব বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধিতে জনগণের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। একটি দেশ অর্থনৈতিক সূচক যতই উপরে থাকুক, ঐ দেশের মানুষ যদি না খেয়ে থাকে, তবে সেই সূচক ধুয়ে নিশ্চয়ই জনগণের পেট ভরবে না।
পাঠক ! বাংলাদেশেও এখন বাস্তবায়ন চলছে ‘কর্পোরেটোক্রেসি’ নামক ষড়যন্ত্র। ফ্লাইওভার, রাস্তাঘাট, সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, মেট্রোরেল, স্টেডিয়াম ইত্যাদির নাম করে ভৌত অবকাঠামো দিয়ে ভরিয়ে ফেলা হচ্ছে দেশ। শুধু সৈন্যবাহিনী দিয়ে নয়, অর্থনৈতিক পলিসি দিয়েও একটি দেশ দখল করা যায় তার উদাহরণ হচ্ছে ‘কর্পোরেটোক্রেসি’। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মানুষ এর সুফল (!) পেতে শুরু করেছে। চালের দাম ৭০ ছড়িয়েছে, অন্যান্য দ্রব্যমূল্য আকাশ চড়া। অনেক মানুষ কম খেয়ে দিনাতিপাত করছে। বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা করা উচিত, সবে মাত্র ‘কর্পোরেটোক্রেসি’ নামক ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে, তাই দেশের এই অবস্থা। যদি এখনই দেশজুড়ে প্রতিবাদ করে এই ষড়যন্ত্র থামানো না যায়, তবে আগামী ২-৪ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের বিরাট জনসংখ্যা পথে বসে যাবে, আফ্রিকার মত দুর্ভিক্ষে পতিত হবে, এতে কোন সন্দেহ নাই।
(স্ট্যাটাস লিঙ্ক- https://bit.ly/2OKPFrc)
পাঠক ! আমি স্ট্যাটাসটা দিয়েছিলাম এখন থেকে ২২ মাস আগে, তখন অনেকে বিষয়টি বুঝেনি।
কিন্তু এখন হয়ত কিছু কিছু লোক ‘কর্পোরেটোক্রেসি’র সত্যতা হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া শুরু করেছে।
আশা করছি- বাকিরাও কয়েকদিনের মধ্যে সব বুঝে উঠবে।
আর যদি কেউ না বুঝে, তখন বুঝতে হবে, সে হইলো ঐ উন্নয়নের লোক।
তাই তার বুঝার ক্ষমতা নাই।
কথা হইলো- যত তাড়াতাড়ি এই ভুয়া উন্নয়ন বন্ধ করে পণ্যদ্রব্যের দাম কমার উন্নয়নের দিকে চোখ দেয়া যাবে, ততই জনগনের উপকার। আর উন্নয়নের লোভে লাভ ক্ষতির করলে আরো ভয়ানক কিছু দেখার অপেক্ষা করতে হবে সবাইকে। হ্যা সেখানে উন্নত দেশের মত ৪ লেনের এক্সক্লুসিভ হাইওয়ে আছে, কিন্তু আপনি নেই –এটাই চরম সত্য ভবিষ্যত।
তাই একযোগে শ্লোগান তুলুন- “উন্নয়ন চাই না খরচ কমান”।