নদীর পানি নিয়ে ভারতের দুষ্টনীতির কারণে বাংলাদেশের যত বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণ আগে দিল্লীকে দিতে হবে।এন.সি- ১৪৩

নদীর পানি নিয়ে ভারতের দুষ্টনীতির কারণে বাংলাদেশের যত বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণ আগে দিল্লীকে দিতে হবে। তারপর বাংলাদেশের নদীপথ নিয়ে ভারতের সাথে চূক্তি, এর আগে না।
Related imageশেখ হাসিনা, ভারতে যাচ্ছে, সেখানে ভারত যেন বাংলাদেশের নদী পথ ব্যবহার করতে পারে সেটা নিয়ে দিল্লীর সাথে চূক্তি হবে। আমি এটা নিয়ে অবশ্য অনেক আগেই অনেকগুলো পোস্ট দিয়েছিলাম। সেখানে দেখিয়েছিলাম- ভারতকে যদি আমরা ৩ ভাগ করি, তবে তার ১ ভাগ স্থলভাগে নদীপথে পৌছাতে ভারত নিজের সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে পারে। আর বাকি ২ ভাগে নৌপথে পৌছাতে গেলে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ও নদী পথের আশ্রয় নিতে হবে ভারতকে।
মূলত, ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে দাড়াতে হলে প্রথম তার লাগবে অল্পমূল্যে পণ্যপরিবহণ খরচ, যা সমুদ্র ও নদী পথ ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু ভারত তো তার স্থলভাগের ২/৩ অংশ বাংলাদেশের সমুদ্র ও নদী ব্যবহার ছাড়া পারবেই না, এ অবস্থায় ভারত কঠিনভাবে বাংলাদেশের কাছে ধরা। আর সেই ধরা নিয়ে চূক্তি হতে যাচ্ছে, শেখ হাসিনার এবারের সফরে। সহজভাষায়- বাংলাদেশের নৌপথ ভারতের কাছে বিক্রি করতে যাচ্ছে শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের নদীপথে ভারতের প্রভাব কথটা বৃদ্ধি পাবে, কিছুদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বাংলাদেশের এসে বাংলাদেশের নদীগুলোতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার কথাও বলেছে।
একটা খবরে দেখলাম, ভারতকে বাংলাদেশ এ সুবিধা দিলে, ভারতও বাংলাদেশেরকে তাদের অনেকগুলো পোর্ট ব্যবহারের অনুমতি দিবে। কথা হইলো- ভারত কথা দিয়ে কথা কতটুকু রাখবে কিংবা আদৌ রাখবে কি না, সেটা চিন্তার বিষয়। কিন্তু তারপরও যদি চিন্তা করি, পণ্য পরিবহণে সমুদ্র ও নৌপথ ব্যবহার করা হয় খরচ কমানোর জন্য। বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ভারতের হাজার হাজার কিলোমিটার দূরের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তারপর সেটা তো সড়ক পথেই টেনে নিয়ে আসবে। তাহলে লাভ হলো কি ? এ ধরনের আজগুবি লোভ দেখানোর কারণ কি ?
তবে মূল কথা হলো- ভারত বাংলাদেশকে পানি নিয়ে ঝামেলা করছে আজ থেকে ৪০-৪৫ বছর যাবত। তারা অনেক কথা দিয়েও কথা রাখেনি। তাদের কারণে আমাদের বহু নদী আজ পানিশূণ্য, অনেক ফসলী জমি মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। ফারাক্কায় পানি বেড়ে গেলে পানি ছেড়ে দেয়ার মত নিকৃষ্ট নজির তারা দেখায়, যা সভ্য সমাজে কখন গ্রহণযোগ্য না। সহজ কথা- যেই নদী নিয়ে তারা আমাদের এত কষ্ট দিলো, সেই নদী পথ তারা বাংলাদেশের কাছে চায় কোন মুখে ? কোন নিলর্জ্জ লোক ছাড়া তো এমন দাবী করতে পারে না।
আবার শেখ হাসিনাও কত নিলর্জ্জ, যে ভারত বাংলাদেশের নদী নিয়ে এত কষ্ট দিলো, সেই ভারতের কাছে এখন নদীপথ বেচতে যাচ্ছে। ছি:।
একটা প্রশ্ন আসবে-
শেখ হাসিনা যে ভারতের সাথে বাংলাদেশের নদী নিয়ে চুক্তি করতে গেছে,
সেই চূক্তি নিয়ে কি সংসদে কি কোন আলাপ হইছে ?
চূক্তির শর্তগুলো কি কি সেটা কি জনগণের সামনে উন্মুক্ত করা হইছে ?
সেটা না করে সে কোন মুখে ভারতের কাছে বাংলাদেশের নদী পথ নিয়ে চুক্তি করতে গেলো ?
এটা তো সংবিধান পরিপন্থী। নদী নিয়ে চূক্তি তো নিরাপত্তা চূক্তি না, যে লুকায় লুকায় করতে হবে। তাহলে লুকোচুড়ি কেন ?
আর বাংলাদেশ তো শেখ হাসিনার বাবার সম্পত্তি না, যে ইচ্ছা হলো আর বেচে দিয়ে আসা যাবে।
এখন জনগণের যেটা বলার থাকবে-
ভারত বাংলাদেশকে পানি আর নদী নিয়ে অনেক কষ্ট দিছে, অনেক ক্ষতি করছে।
এখন ভারতের সাথে সেই নদী আর পানি নিয়ে যদি চূক্তি করতেই হয়,
তার আগে হিসেব করতে হবে- সেই স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের পানি নিয়ে দুষ্টু-নীতির কারণে বাংলাদেশের কত বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হইছে, সেই হিসেব করা।
তারপর সেই পরিমাণ অর্থ আগে ভারতকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে।
সেই ক্ষতিপূরণ দেয়ার পর চিন্তা করা যাবে, বাংলাদেশ ভারতের সাথে নদী পথ নিয়ে চূক্তি করবে কি না।
ভারত ক্ষতিপূরণ দেয়ার আগে, বাংলাদেশের নদীপথ নিয়ে ভারতের সাথে চূক্তি করা মানে, দেশের জনগণের সাথে স্পষ্ট বেঈমানি করা।