ধরেন কোন একজন A থেকে N বিন্দুতে যাবে। এন.সি- ৪৪

Related imageধরেন কোন একজন A থেকে N বিন্দুতে যাবে।
কিন্তু সে যদি প্রথমে বলে দেয়, তার গন্তব্য N বিন্দু,
তবে আপনি তাকে বাধা দিবেন। তাকে পৌছাতে দিবেন না।
কারণ সে N বিন্দুতে পৌছালে আপনার ক্ষতি হবে।
এজন্য সে নানান কায়দা কানুন করে ঘুড়ে ফিরে-
A থেকে B,
B থেকে C,
C থেকে D এভাবে করে N – যাবে।
এখন ধরেনিলাম-
তার গন্তব্যের মধ্যে F থেকে G রাস্তাটি আপনার কাছে পছন্দনীয় হতে পারে।
এজন্য সে F থেকে G এর মধ্যে ক্যামেরা বা মিডিয়া হাইলাইট করবে এবং তা বড় করে দেখাবে।
এখন আপনি F থেকে G দেখে খুশি হয়ে যাবেন, আর তাকে সেলুট, ধন্যবাদ, এপ্রিশিয়েট দিতে থাকবেন। কিন্তু তার মূল্য লক্ষ্য যে N বিন্দু সেটা কখনই বলবে না, আর আপনিও F আর G’র মধ্যবর্তী রাস্তায় এতবেশি মনযোগী বা আসক্ত হয়ে গেছে, তাকে আপনি পছন্দ করে ফেলেছেন এবং তার সব কাজ মুক্ত ভাবে করতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এটাই হলো মিডিয়ার ধোকা, ষড়যন্ত্রকারীর জয় আর আপনার পরাজয়।
সম্প্রতি যতগুলো ঘটনা ঘটে, তাকে একই গ্রাফ দিয়ে যদি বিচার করেন, তবে দেখবেন মিডিয়ার মাধ্যমে আপনাকে একটা ক্ষুদ্র অংশ দেখানো হচ্ছে, পুরো বিষয়টি কিন্তু বলা হচ্ছে না।
যেমন-
১) যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন দেখানো হচ্ছে, কিন্তু আলটিমেট লক্ষ্য কপোরেটোক্রেসির বাস্তবায়ন সেটা বলা হচ্ছে না।
২) আপনাকে দেখানো হচ্ছে বিদেশী ডাক্তার দম্পত্তি বাংলাদেশকে ভালোবেসে চলে এসেছে। কিন্তু তাদের আলটিমেট লক্ষ্য খ্রিস্টান মিশনারী কার্যক্রম (তার উপরেও কাজ থাকতে পারে), সেটা দেখানো হচ্ছে না।
৩) ন ডরাই আপনাকে দেখাচ্ছে নারী মুক্তি, কিন্তু তার আলটিমেট উদ্দেশ্য নারীকে দিয়ে ব্যবসা, সেটা বলছে না।
৪) দেখাচ্ছে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছে, কিন্তু উদ্দেশ্য পানির আধার নিয়ন্ত্রনে নিয়ে পানি নিয়ে ব্যবসা করা সেটা বলছে না।
সমস্যা হচ্ছে, হুজুগে জনগণকে নিয়ে। মিডিয়াতে তাদের যতটুকু দেখায়, তারা ঠিক ততটুকুই দেখতে পায় এবং ততটুকু নিয়েই চিন্তা করে। এর বেশি তারা দেখতেও চায় না, চিন্তাও করতে চায় না। কোন কিছুই যে এমনি এমনি বা স্বার্থছাড়া হয় না, এটা তাদের চিন্তার মধ্যে নেই।
এখন আপনি যদি তাদেরকে বিষয়টি ধরিয়ে দেন, তখন আপনাকে গুজব রটনাকারী, ষড়যন্ত্র তত্ত্বদানকারী বা ফেইক পেইজ বলে গালি দিবে। কিন্তু সময় গেলে দেখবেন- পুরো বিষয়টি নিয়ে উপর থেকে যে চিন্তা করেছিলেন, ঘটনা কিন্তু সে দিকেই যাচ্ছে এবং হুবুহু মিলে যাচ্ছে।
এখানে একটা জ্ঞানের সীমাবদ্ধতারও ব্যাপার আছে।
সাধারণত সম্রাজ্যবাদীরা যেসব ষড়যন্ত্র করে, সেগুলো উপর থেকে অনেক অভিজ্ঞ লোক সিন্ডিকেট করে প্ল্যান সাজায়। কিন্তু সাধারণ জনগণের এত মাল্টি লেভেলের জ্ঞান নাই। শুধুমাত্র যারা অনেকগুলো বিষয় একত্রে জানে, তাদের পক্ষে মূল ঘটনা বের করা সম্ভব। এছাড়া বাকিরা সেটা বুঝতে পারে না। এ কারণে কেউ যদি ঘটনা বুঝে ফাঁস করে দেয়, তখন সাধারণ মানুষ সেটাকে আজগুবি, গুজব, ফালতু বলে মনে করে। কিন্তু সেখানে যে তার জ্ঞানের ঘাটতি সেটাই সে বুঝতে পারে না। এক্ষেত্রে অবশ্য যারা ষড়যন্ত্রটা তৈরী করে, তাদের কিছু লোক থাকে, যারা ঘটনা ফাঁস হওয়া মাত্র “আজগুবি”, “গুজব”, “ফালতু” এসব ট্যাগ দিয়ে ঘটনা হালকা করার চেষ্টা করে। যেন সাধারণ মানুষ মূল ঘটনা ধরতে না পারে, এবং তাদের ষড়যন্ত্র সফল করা সম্ভব হয়।
এখন জনগণকে বাচতে হলে, মিডিয়ার কুপমণ্ডুক চিন্তা বাদ দিয়ে উপর থেকে বড় পরিসরে চিন্তা করতে শিখতে হবে, এছাড়া আর কোন উপায় নাই।