নরসিংদীতে হিন্দু ব্যক্তি কর্তৃক মাদ্রাসার ভবনে অনুদান ও ইসকন দিয়ে উদ্বোধন করার প্রসঙ্গে- এন.সি- ১১৩

নরসিংদীতে হিন্দু ব্যক্তি কর্তৃক মাদ্রাসার ভবনে অনুদান ও ইসকন দিয়ে উদ্বোধন করার প্রসঙ্গে-

নরসিংদীতে হিন্দু ব্যক্তি কর্তৃক মাদ্রাসার ভবনে অনুদান ও ইসকন দিয়ে উদ্বোধন করার প্রসঙ্গে-
ফেসবুকে কিছু স্ট্যাটাসে আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যার শিরোনাম ছিলো- “নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে অবস্থিত মদিনাতুল উলুম তালিমুল কুরআন মাদরাসার ভবন নির্মাণ করলো হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন।”
স্ট্যাটাস মারফত জানতে পারলাম- নরসিংদী জেলার রায়পুরা এলাকায় একটি কওমী মাদ্রাসার ছাত্রবাসের জন্য রাখাল ভট্টাচার্য্য্ নামক এক হিন্দু ব্যক্তির অনুদান নেয়া হয় এবং ঐ ভবনটি উদ্বোধনের সময় ইসকন নামক সংগঠনের লোকজন এনে ভবনটি উদ্বোধন করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বলতে হয়-
যখনই মায়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরু হলো, তখন বাংলাদেশের বৌদ্ধরা মুসলমানদের ইফতারি বিলি শুরু করলো।
যখনই ভারতে গরুর মাংশের জন্য মুসলমানদের পিটিয়ে মারা শুরু হলো, তখন ভারতে ইসকন মুসলমানদের ইফতারির দাওয়াত দিয়ে খাওয়ানো শুরু করলো।
বর্তমানে বাংলাদেশে যখন ইসকনের উগ্রবাদী কার্যক্রম দৃশ্যমান শুরু হয়েছে, ঠিক তখন ইসকন দিয়ে মাদ্রাসার উদ্বোধন করা শুরু হয়েছে।
এখন দেখা যাবে, যখনই আপনি তাদের উগ্রবাদী কার্যক্রমের প্রতিবাদ করবেন, সাথে সাথে একদল লোক এসব উদারহণ টেনে বলবে, “আপনি মিথ্যা সম্প্রীতি নষ্ট করছেন, দেখুন তারা মুসলমানদের প্রতি কত দরদী।”
না ! এসব ইফতারি বিলি করে হবে না, এসব ভবন নির্মাণে অনুদান দিয়েও হবে না।
তারা যদি সত্যিই সম্প্রীতি চায়, তবে তাদের সমগোত্রীয়দের দ্বারা ঐসব নিকৃষ্ঠ কাজের প্রতিবাদ করতে হবে। তাদের প্রকাশ্যে বলতে হবে- তারা যে ঐসব কাজে জড়িত না, এবং সেগুলোর সমর্থন করে না, বরং নিন্দা করে। তারা অপরাধীদের বিচার চায়। তারা যে অপরাধীদের সাথে ধর্মীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন এটা উন্মুক্ত স্থানে বলতে হবে।
নয়ত এসব দান দাক্ষিণ্যের দ্বারা ভুয়া ইমেজ তৈরীর কোন গুরুত্ব থাকতে পারে না।
আসলে মুসলমানরা কি ভিক্ষুক ? মুসলমানরা কি তাদের দয়া-দাক্ষিণ্য ছাড়া বাচে না ??
বৌদ্ধ মন্দির আর ইসকনের বিলি করা ইফতারি না খেলে কি মুসলমানরা মারা যাবে ?
ইসকনের লোকের অনুদান না পেলে কি কওমী মাদ্রাসার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে ?
এই এক ভবন ছাড়া কওমী মাদ্রাসার আর কোন ভবন হচ্ছে না ??
তাহলে এসব গরু মেরে জুতা দানের মানেটা কি??
বৌদ্ধরা যদি সত্যিই মায়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিরোধীতা করে, তবে মিয়ানামার সরকার ও উগ্র বৌদ্ধদের ফাসি চাক, তাদের সাথে ধর্মীয় সম্পর্ক ছিন্ন করুক, তাদের বিরুদ্ধে আন্দোনল গড়ে তুলুক। সেটা না করে এসব ভিক্ষার শুটিং দেখিয়ে কোন লাভ হবে না।
পাশাপাশি ইসকন যদি সত্যিই ভারতে গরুর জন্য মানুষ হত্যার বিরোধী হয়, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হয়, তবে প্রকাশ্যে বলুক- তারা আগ্রাসী ভারতের সাথে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। তারা বাংলাদেশকে মাতৃভূমি ভাবে ভারতকে নয়। ভারতের সাথে সমস্ত দেশবিরোধী চূক্তির বিরুদ্ধে বলুক। ভারতের যে গরুর মাংশের নাম দিয়ে মুসলমানরা মারছে তার প্রতিবাদে তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করুক। কিন্তু সেটা না করে ইফতারি খাওয়ানো বা মাদ্রাসায় অনুদানের নাম করে ভিক্ষা দিলে কোন কাজ হবে না।
পাশাপাশি আমি বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকেও একটি বিষয় জানাতে চাই-
ইতিমধ্যে রাজনৈতিক কারণে হোক অথবা যেই কারণে হোক ভারতীয় দেওবন্দ কর্তৃপক্ষের কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে মানুষের কাছে বিতর্কিত হয়ে গেছে বা যাচ্ছে। তবে সেই ট্রেন্ডটা এখনও বাংলাদশের কওমী মাদ্রাসায় এসে পড়ে নাই। কিন্তু সেটাই একটি গোষ্ঠী ফেলানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু সেটা হলে- “কওমী মাদ্রাসাগুলো হিন্দুত্ববাদের সাথে হাত মিলিয়েছে”- এরকম একটি প্রচার লাভ করতে পারে। আপনাদের মধ্যে যারা বুঝদার আছেন, তারা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেন। আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশে বহু মাদ্রাসা ভবন কওমী মাদ্রাসার আছে, কিন্তু সেটার জন্য উগ্রহিন্দুত্ববাদীদের থেকে অনুদান নেয়ার প্রয়োজন কওমী মাদ্রাসার নেই। সেটাই যদি হয়, তবে নরসিংদীর রায়পুরা এলাকায় কি ঘটনা ঘটলো ? ঐ এলাকায় কারা লোভে পড়ে কাজটি করলো তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, আপনাদের কেন্দ্র থেকে প্রতিবাদলিপি পাঠান এবং বিষয়টির দ্রুত শক্তভাবে সমাধান করুন। মনে রাখবেন-এক বালতি দুধের মধ্যে ১ ফোটা চনাই যথেষ্ট। নরসিংদীর রায়পুরার ঘটনার ভবিষ্যতে একটি প্রভাব পুরো কওমী মাদ্রাসার উপর পড়বে। তাই দেরি করা ঠিক হবে না।