দেশের অর্থনীতি বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আগে নিজের পরিবারের অর্থনীতি বোঝা।
নিজের বাড়ির অর্থনীতি বুঝতে পারলে দেশের অর্থনীাতি বোঝা সহজ হবে। বাড়ির কর্তা হিসেবে- আপনার মাথায় সব সময় দুটি জিনিস রাখতে হয়-
১. প্রয়োজন
২.সামর্থ্য
নিজের বাড়ির অর্থনীতি বুঝতে পারলে দেশের অর্থনীাতি বোঝা সহজ হবে। বাড়ির কর্তা হিসেবে- আপনার মাথায় সব সময় দুটি জিনিস রাখতে হয়-
১. প্রয়োজন
২.সামর্থ্য
প্রতিনিয়ত এই প্রয়োজন ও সামর্থকে ব্যালেন্স করে কিন্তু চলছেন, সেটা আপনি বুঝেন আর না বুঝেন।
যেমন- আপনার মায়ের জন্য ওষুধ লাগবে, স্ত্রী বললো- চাল-ডাল লাগবে, ছেলে বললো- তার খেলার ব্যাট লাগবে, মেয়ে বললো- ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে, শালা বললো- তারা বন্ধু বান্ধব মিলে পার্টি করবে, চাদা দিতে হবে।
আপনি সবগুলো কথা কিন্তু শুনে যাচ্ছেন, মনের অযান্তেই ক্যালকুলেশন করে ফেলছেন কোন চাহিদাটি আগে প্রয়োজন। এই প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে আপনি ডিসিশন নিচ্ছেন, কোথায় আগে টাকা দিতে হবে। কথা হলো- গার্জিয়ান হিসেবে আপনাকে পুরো ফ্যামিলির বিষয়টি বুঝতে হবে, তালগোল পাকিয়ে ফেললে হবে না। যেমন- মায়ের ওষুধ খেলেও শরীর ভালো হয়, আবার ঘুরা-ফিরি করলে শরীর ভালো লাগতে পারে। কিন্তু ওষুধের টাকা পরে দিয়ে ঘুরাফিরির টাকা আগে খরচ করলে হবে না। আবার স্ত্রী ঘরের চাল-ডাল চেয়েছে, আর শালা চেয়েছে বন্ধু বান্ধবের পার্টির জন্য। একটা ঘরের, অন্যটা পরের। আগে ঘরকে আপনাকে খাওয়াতে হবে, বাইরের লোকের মোজমাস্তির করবে সেই খরচ পরে। যদিও আপনি এই প্রয়োজনটা বুঝতে ভুল করেন, তবে কিন্তু আপনি তৎক্ষণাত সবার কাছে খারাপও হবেন না। আপনি যদি মায়ের ওষুধ না কিনে মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যান, তবে মা আপনাকে খারাপ জানবে, কিন্তু মেয়ে কিন্তু আপনাকে আদর্শ পিতা ভাববে। আপনি যদি স্ত্রীর বাজার না করে দেন, কিন্তু শালাকে বন্ধু বান্ধবের পার্টির খরচ দেন, তবে ঘরের মানুষ আপনাকে খারাপ জানবে, কিন্তু বাইরের মানুষ আপনাকে খুব উদার ভাববে।
একইভাবে আপনি যখন রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন হলেন, তখন আপনাকে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল হিসেবে বুঝতে হবে কোন প্রয়োজনটা আগে। আপনার রাষ্ট্রের টাকাটা আগে কোথায় খরচ করতে হবে সেটা বুঝতে হবে। হাতিয়া দ্বীপে প্রচুর মাছ হয়। বরফ আর যাতায়াতের অভাবে সেই মাছগুলো নষ্ট হয়ে যায়। সেই যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না করে আপনি যদি ভারত-মিয়ানমার যে রাস্তাগুলো ব্যবসায়ীক করিডর হিসেবে ব্যবহার করবে সেগুলো ফোর-লেনের রাস্তা করে দিলেন, তবে কিন্তু হবে না। আপনার প্রচুর খাদ্যসশ্য হচ্ছে, হিমাগারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে অনেক। আপনি হিমাগার না করে, প্রতি জেলায় জেলায় খেলার স্টেডিয়াম বানানো শুরু করলেন তাহলে কিন্তু হবে না। আপনার দেশের বেকার সমস্যা প্রচুর। অর্থনীতির অবস্থা সুবিধার না। এ অবস্থায় দেশের কলকারাখানাকে বাচাতে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী। কিন্তু সেটা না করে আপনার মাথায় পর্যটনের ভুত চাপলো। আপনি চিন্তা করলেন, নদীর তীরে পরিবেশ সুন্দর, তাই সেখানে কলকারখানাগুলো সরিয়ে পর্যটন কেন্দ্র করি, তাহলে কিন্তু হবে না।
যেমন- আপনার মায়ের জন্য ওষুধ লাগবে, স্ত্রী বললো- চাল-ডাল লাগবে, ছেলে বললো- তার খেলার ব্যাট লাগবে, মেয়ে বললো- ঘুরতে নিয়ে যেতে হবে, শালা বললো- তারা বন্ধু বান্ধব মিলে পার্টি করবে, চাদা দিতে হবে।
আপনি সবগুলো কথা কিন্তু শুনে যাচ্ছেন, মনের অযান্তেই ক্যালকুলেশন করে ফেলছেন কোন চাহিদাটি আগে প্রয়োজন। এই প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে আপনি ডিসিশন নিচ্ছেন, কোথায় আগে টাকা দিতে হবে। কথা হলো- গার্জিয়ান হিসেবে আপনাকে পুরো ফ্যামিলির বিষয়টি বুঝতে হবে, তালগোল পাকিয়ে ফেললে হবে না। যেমন- মায়ের ওষুধ খেলেও শরীর ভালো হয়, আবার ঘুরা-ফিরি করলে শরীর ভালো লাগতে পারে। কিন্তু ওষুধের টাকা পরে দিয়ে ঘুরাফিরির টাকা আগে খরচ করলে হবে না। আবার স্ত্রী ঘরের চাল-ডাল চেয়েছে, আর শালা চেয়েছে বন্ধু বান্ধবের পার্টির জন্য। একটা ঘরের, অন্যটা পরের। আগে ঘরকে আপনাকে খাওয়াতে হবে, বাইরের লোকের মোজমাস্তির করবে সেই খরচ পরে। যদিও আপনি এই প্রয়োজনটা বুঝতে ভুল করেন, তবে কিন্তু আপনি তৎক্ষণাত সবার কাছে খারাপও হবেন না। আপনি যদি মায়ের ওষুধ না কিনে মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যান, তবে মা আপনাকে খারাপ জানবে, কিন্তু মেয়ে কিন্তু আপনাকে আদর্শ পিতা ভাববে। আপনি যদি স্ত্রীর বাজার না করে দেন, কিন্তু শালাকে বন্ধু বান্ধবের পার্টির খরচ দেন, তবে ঘরের মানুষ আপনাকে খারাপ জানবে, কিন্তু বাইরের মানুষ আপনাকে খুব উদার ভাববে।
একইভাবে আপনি যখন রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন হলেন, তখন আপনাকে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল হিসেবে বুঝতে হবে কোন প্রয়োজনটা আগে। আপনার রাষ্ট্রের টাকাটা আগে কোথায় খরচ করতে হবে সেটা বুঝতে হবে। হাতিয়া দ্বীপে প্রচুর মাছ হয়। বরফ আর যাতায়াতের অভাবে সেই মাছগুলো নষ্ট হয়ে যায়। সেই যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো না করে আপনি যদি ভারত-মিয়ানমার যে রাস্তাগুলো ব্যবসায়ীক করিডর হিসেবে ব্যবহার করবে সেগুলো ফোর-লেনের রাস্তা করে দিলেন, তবে কিন্তু হবে না। আপনার প্রচুর খাদ্যসশ্য হচ্ছে, হিমাগারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে অনেক। আপনি হিমাগার না করে, প্রতি জেলায় জেলায় খেলার স্টেডিয়াম বানানো শুরু করলেন তাহলে কিন্তু হবে না। আপনার দেশের বেকার সমস্যা প্রচুর। অর্থনীতির অবস্থা সুবিধার না। এ অবস্থায় দেশের কলকারাখানাকে বাচাতে উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরী। কিন্তু সেটা না করে আপনার মাথায় পর্যটনের ভুত চাপলো। আপনি চিন্তা করলেন, নদীর তীরে পরিবেশ সুন্দর, তাই সেখানে কলকারখানাগুলো সরিয়ে পর্যটন কেন্দ্র করি, তাহলে কিন্তু হবে না।
এবার আসি সামর্থ নিয়ে। আপনার সামর্থ কতটুকু, সেটা আপনাকে পুরোপুরি বুঝতে হবে। আপনার সামর্থ হলো ব্রয়লার মুরগী, আপনার দেশী মুরগীর দিকে তাকালে হবে না। আপনার সামর্থ হলো- তেলাপিয়া মাছ কেনার, আপনি যদি রুপচাদা মাছের দিকে তাকান, তাহলে হবে না। আপনার বাসায় লোক অসুস্থ, আপনার সামর্থ ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাবেন। আপনি যদি স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করেন তাহলে কিন্তু হবে না। আপনার সামর্থ বাচ্চাকে শিশুপার্কে নিয়ে যাবেন, আপনি ফ্যান্টাসি কিংডমে গেলে হবে না। অর্থাৎ আগে প্রয়োজন ঠিক করুন, তারপর সামর্থ অনুসারে বণ্টন করুন। হ্যা আপনি বেশিমূল্যের জিনিস কিনবেন না কেন ? অবশ্যই কিনবেন, কিন্তু সেজন্য আগে নিজের ইনকাম বাড়ান, সেই ইনকাম থেকে নগদে বা কিস্তি কিনুন। কিন্তু নিজের সামর্থ ঠিক হওয়ার আগে অধিকমূল্যের জিনিসে হাত দেয়া কখন ভালো লক্ষণ নয়। আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক দেখা যায়, যাদের সামর্থ ১০ টাকা, কিন্তু ফুটানি দেখাচ্ছে ১০০ টাকা। খবর নিয়ে দেখুন- সে অন্যকোন টাকা ভাঙ্গতেছে। হয় সে অসৎ উপায়ে ভাঙ্গতেছে, অথবা প্রয়োজনীয় কোন ফান্ড নষ্ট করতেছে অথবা ধার করে ফুটানি করতেছে। এ ধরনের লোকের ফুটানি বেশি দিন চলে না। দুইদিন পর ঠিকই তলিতল্পা গুটিয়ে পালাতে হয়।
একইভাবে রাষ্ট চালানোর সময় আপনাকে আপনার সামর্থ দিকে তাকিয়েই কথা বলতে হবে, আজগুবি কথা বললে হবে না। আপনার সামর্থ সাধারণ রাস্তা, কিন্তু আপনি ফ্লাইওভারের কথা চিন্তা করলে হবে না। আপনার সামর্থ ১০০ কোটি টাকা প্রজেক্টের আপনি ৫ লক্ষ কোটি টাকার প্রজেক্ট নিলে হবে না। একটা রাস্তা বানিয়েছেন, সেটা আগে কাজ শুরু করতে দেন, তার আগেই উপর দিয়ে আরো ২-৩টা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানাচ্ছেন। দেশে টাকা নাই, সমস্যা কি, বিদেশ থেকে লোন নেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে যে অর্থনৈতিক দুর্যোগ শুরু হয়েছে এবং আরো বড় দুযোর্গ হাতছানি নিচ্ছে, তার মূল কারণ সরকার প্রয়োজন ও সামর্থ বহির্ভূত কাজ করেছে। যেটা প্রয়োজন সেটা করেনি, করেছে অন্যটা। আবার যতটুকু সামর্থ সে অনুসারে কাজ না করে অতি উচ্চমূল্যের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে কিছু লোক আনন্দিত হচ্ছে, ঠিক যেভাবে পরিবারের ক্ষেত্রেও হয়। কিন্তু সবদিক বিবেচনায় রাষ্ট্র ফাকা করে দিয়েছে সরকার।
আমাদের জনগণের সমস্যা হলো- আমরা বড় কিছু দেখলেই খুশি। বড় রাস্তা, বড় ফ্লাইওভার, বড় মেট্রোরেল, বড় পর্যটন কেন্দ্র। অথচ প্রয়োজন আর সামর্থের ইমব্যালেন্সের কারণে যে আমাদের কলকারখানাসহ সকল উৎপাদনের খাতের পতন হচ্ছে, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে জীবন ওষ্ঠাগত সে খবর আমারা বুঝতে পারছি না।
আপনি যত কিছু নিয়েই কথা বলেন আর আন্দোলন করেন, ক্ষমতায় থাকার লোকগুলোর আলটিমেট টার্গেট আর্থিক লাভবান হওয়া। সেটাই তার রিয়েল ফেস। তাই সরকারের রিয়েল ফেসে আঘাত করতে হলে অর্থনীতির বিষয়গুলো বুঝতে হবে এবং সরকারের ভুল অর্থনৈতিক পলিসির বিরুদ্ধচারণ করতে হবে। তবে আপনি সেটা করতে চান না, কারণ ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, বড় বড় রাস্তা আর পর্যটন কেন্দ্র হলে আপনারাও খারাপ লাগে না, বরং খুশি খুশি লাগে।